অবতক খবর,১৫ ফেব্রুয়ারি: সিএএ নিয়ে যখন সারা ভারতবর্ষ তোলপাড়, নাগরিক সংশোধন আইন নিয়ে যখন মানুষ আতঙ্কগ্রস্ত,তখন ভয় কাটানোর জন্য পশ্চিমবঙ্গে উদ্বাস্তুদের পাট্টাদান পর্ব শুরু হয়েছে। বিভিন্ন কলোনিতে কলোনিতে পাট্টা দেওয়া হচ্ছে। এই পাট্টা সম্পূর্ণ অবৈতনিক। এরজন্য উদ্বাস্তুদের থেকে কোন টাকা নেওয়া চলবে না।
পাট্টাদানে অত্যন্ত সক্রিয় হয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লক্ষ লক্ষ টাকার সরকারি বিজ্ঞাপনী প্রচার চলছে। বিরোধীরা বলছেন এটি একটি রাজনৈতিক ইস্যু করে তুলেছেন তিনি, এরসঙ্গে ভোট জড়িত।
ভারতবর্ষে ভোট রাজনীতি এখন পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হয়ে গেছে। ধর্মীয় বিভাজন সৃষ্টি করা,দেশপ্রেমের জোয়ার বইয়ে দেওয়া, সবকিছুর পেছনেই একটি অঙ্ক কাজ করছে। সেটি ভোট ভোট আর ভোট। ভারতবর্ষের জীবন ভোটসর্বস্ব জীবন বলে বহু রাজনৈতিক নেতা মনে করেন। কারণ ভারতবর্ষের ক্ষমতায়ন ভোটের উপর নির্ভর করে। এই ভোটের অধিকারী হলে রাষ্ট্র নেতারা যেমন দাপট দেখান,তেমনি শাসকদলের আশ্রিত সাধারণ কর্মীরাও এলাকায় এলাকায় মস্তান হয়ে ওঠেন এবং ওয়ার্ডের ওয়ার্ডের জমিদার হয়ে ওঠেন।
সূত্রের খবর ১৪ ওয়ার্ডের দেশবন্ধু কলোনিতে ৬৩ জনকে পাট্টা প্রদান করা হয়েছে। এরমধ্যে পাঁচটি পরিবার বাম আমলেই পাট্টা পেয়ে গিয়েছিলেন। বাকি ৫৮টি পরিবার পাট্টা পেয়েছেন এবং সেই পাট্টার শংসাপত্রের জেরক্স কপিও তাদের হস্তগত হয়েছে বলে জানা গেছে। এই পাট্টা প্রদান বিষয়টিকে নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা লোটার জন্য প্রকাশ্য অনুষ্ঠানে প্রত্যেকটি পরিবারের হাতে পাট্টার শংসাপত্র তুলে দেওয়া হবে। এটি একটি রাজনৈতিক প্রচার, রাজনৈতিক কৌশল।
এটি বড় কথা নয়,বড় কথা হচ্ছে এটি, অভিযোগ পাওয়া গেছে যে ৫৮ জন পাট্টা পেয়েছেন তাদের কাউকে ১০-১৫ হাজার,২০ হাজার টাকা করে দিতে হয়েছে। প্রশ্ন, উদ্বাস্তুদের নামে,তাদের আশ্রয় দেওয়ার নামে এইভাবে টাকা কামাই করা যায় কি? যেখানে মুখ্যমন্ত্রী বলছেন আমরা পাট্টা দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছি,আমরা নাগরিকত্বের দায়িত্ব নিয়েছি, সেখানে তার প্রকাশ্য নির্দেশকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখিয়ে যারা এভাবে টাকা সংগ্রহ করলেন বলে অভিযোগ,এরা কি সত্যিই রাজনৈতিক কর্মী? সত্যিই কি জনগণের কার্যে নিযুক্ত? জনকল্যাণের নামে তারা অর্থ কামাইকে কি একটি পেশা করে নিয়েছেন? এই প্রশ্ন তুলেছেন পাট্টা পাওয়া পরিবারেরা? তবে তারা এতই ভীত সন্ত্রস্ত যে তারা নাম প্রকাশ করতে চাননি।