অবতক খবর,২২ সেপ্টেম্বর: কাঁচরাপাড়া নবাঙ্কুর ক্লাব সব সময়ই শিরোনামে থাকে। ভোটের আগেও আর ভোটের পরেও। নবাঙ্কুর ক্লাবের কিছু সদস্য যখন যে দল বা যে ব্যক্তি ক্ষমতায় থেকেছেন তার সাথে মিলে যেভাবে মানুষের টাকা আত্মসাৎ করেছেন, সেই টাকা এখন তাদের বের করতে হচ্ছে। কারণ যাদের থেকে তারা টাকা নিয়েছিলেন তারাই এখন তাদের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন।

ভোটের আগে নবাঙ্কুর ক্লাবের সেক্রেটারি ছিলেন তরুণ মজুমদার(কভু)। কভু বাবু প্রথমে ছিলেন সিপিএম, তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর তিনি হলেন তৃণমূল, বিজেপির হাওয়া যখন বইতে শুরু করল তিনি সেই স্রোতে গা ভাসিয়ে বিজেপিতে চলে গেলেন, কিন্তু ভোটের পর এখন আবার তিনি তৃণমূল হতে চাইছেন। যার জন্য যোগাযোগ রাখছেন বিভিন্ন নেতাদের সাথে।

এতদিন মানুষ ভাবতেন নবাঙ্কুর ক্লাব হল এমন একটি ক্লাব যার সদস্যরা যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে তখন সেই দলে যোগ দেন। কিন্তু বিশেষ করে এই কভু বাবুর বিষয়টি অর্থাৎ তার বারবার দল পরিবর্তনের করার কারণটি সামনে এসেছে।
অভিযোগ উঠেছে, তিনি এক প্রভাবশালী নেতার নাম করে মানুষের কাছ থেকে প্রচুর টাকা আত্মসাৎ করেছেন। তিনি কারোর ঘর বাড়ি বিক্রি করে দিয়েছেন, কারোর দোকানের সামনের জায়গা দখল করেছেন, তো কারোর বাড়িতেই ক্লাব বানিয়ে দিয়েছেন। মানুষ যে তার চালাকি বুঝে গেছে এই বিষয়টি বুঝতে পেরে তিনি এখন আবার তৃণমূলে যোগদান করার জন্য উঠেপড়ে লেগেছেন। কারণ ক্ষমতাসীন দলের সাথে যুক্ত থাকলে মানুষ কিছু বলতে বা প্রতিবাদ করতে ভয় পায়। আর সেই সুযোগই এতদিন নিয়ে এসেছেন কভু বাবু। কিন্তু তিনি যাদের টাকা আত্মসাৎ করেছেন তারা এখন মুখ খুলতে শুরু করেছে।

কাঁচরাপাড়া শহীদ নগরের বাসিন্দা মৃৎশিল্পী মন্টু পালের ছেলে বিপুল পাল। মাঝে তাদের আর্থিক পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়ে গেছিল যে বিপুল পাল কভু বাবুর কাছে নিজের বাড়ির দলিল বন্ধক রেখে দুই লক্ষ টাকা ধার নিয়েছিলেন। মাঝে আরও কিছু টাকা নিয়ে মোট অর্থের পরিমাণ দাঁড়ায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা। কভু বাবু তার টাকার জন্য অত্যন্ত চাপ সৃষ্টি করতে থাকে বিপুল পালের উপর।এমনকি সুদ দিতে না পারার কারণে ক্লাবে নিয়ে গিয়ে তাকে মারধর পর্যন্ত করা হয়। তাকে বিভিন্নভাবে ভয় দেখানো হয়।
এরপরেও নিজের আর্থিক অবস্থার কারণে বিপুল বাবু সুদ-আসল কোনটাই না দিতে পারার কারণে কভু বাবু ১৮ লক্ষ ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে তার জায়গাটিই বিক্রি করে দেন। সেখান থেকে ৩ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা বাদ দিয়ে বাকি ১৫ লক্ষ টাকার হিসাব কভু বাবু বিপুল বাবুকে দিতে পারেনি এখনও।

বিপুল বাবুর অভিযোগ, তাদের ভয় দেখিয়ে, বিভিন্ন ছলচাতুরি করে তার সেই ১৫ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন কভু বাবু। ‌ এই নিয়ে বিপুল পাল থানায় অভিযোগ করতে গেলে কভু বাবু বিপুল পালকে বেধড়ক মারধর করে। বীজপুর থানা প্রশাসন বিষয়টি খতিয়ে দেখছেন এবং স্থানীয় নেতৃত্বের কাছেও এই বিষয়টি পৌঁছেছে। তারাও সমাধানের চেষ্টা করেছেন।

এ ব্যাপারে বিপুল পাল বলছেন, প্রথমত আমার বাড়ি আমাকে না জানিয়েই বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত আমার টাকা পয়সাও আত্মসাৎ করেছে। এর একটা বিহিত হোক। আমি আমার জমি,টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য প্রশাসন তথা স্থানীয় নেতৃত্বের কাছে আবেদন করছি।