অবতক খবর,২৩ নভেম্বর : লকডাউনের আটমাস পূর্তি হল আজ ২৩শে নভেম্বর। আজ রেলওয়ে হকার্সরা যারা স্টেশনে বসতেন, দিন গুজরান করতেন দৈনিক উপার্জনের মাধ্যমে তারা শেষ পর্যন্ত নিরুপায় অসহায় হয়ে আজ থেকে তাদের দোকান সাজিয়ে বসলেন কাঁচরাপাড়া রেল স্টেশনে।
জানা গেছে,১২০ জন হকার্স রয়েছেন কাঁচরাপাড়া স্টেশনে। ইতিমধ্যে এই হকার্সদের মধ্যে কোন মালিক নিজে মারা গিয়েছেন,কারো পরিবারের স্ত্রী মারা গিয়েছেন, কারো পরিবারের বাবা মারা গিয়েছেন। এতদিন তারা আর্থিকভাবে অত্যন্ত দুর্দিনের মধ্যে কাটাচ্ছিলেন। কেউ আলু বেচে, কেউ ফল বিক্রি করে,কেউ ঘুরে ঘুরে মাস্ক স্যানিটাইজার, শাকসবজি বিক্রি করেছেন। এটা কাঁচরাপাড়ার মানুষের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার মধ্যে রয়েছে। যেহেতু ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে তাই তারা তাদের পুরনো ব্যবসায় ফিরে আসতে চাইছেন। এতদিন ধরে স্টেশন যাত্রীদের সঙ্গে যে সংযোগ তাদের ছিল তারা সেটি বজায় রেখে তাদের জীবিকার পুনর্জীবন চাইছেন।
এই বিষয়ে হকার্স নেতা সুনীল মিত্র বলেন যে, আমরা একটি নির্দিষ্ট কমিটি করেছি। তারা প্রতিদিন তদারকি করবে, যে সমস্ত হকার্স বন্ধুরা তাদের দোকান সাজিয়ে বসেছেন তাদের প্রত্যেককেই করোনা বিধি পালন করে চলতে হবে। আমরা নজরদারি করব, স্যানিটাইজেশনের বিষয়টি দেখব, মাস্ক পরিধানের বিষয়টি দেখব। তিনি বলেন, রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমরা কথাবার্তা বলেছি। যদিও তারা সেভাবে স্বীকৃতি দেননি। কিন্তু বিষয়টি তাদের গোচরে আনা হয়েছে এবং আরপিএফ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন তারা তাদের উচ্চ স্তরে বিষয়টি জানাবেন।
সুনীল মিত্র আরও জানান,তারা আজ প্রাথমিক অবস্থায় ১২০ জন হকার বসছেন, কিন্তু পরবর্তীতে ৩০ জন অথবা ৪০ জন অল্টারনেট করে তারা ব্যবসা করবেন। অর্থাৎ প্রত্যেকদিনই ১২০ জন হকার বসছেন না। তারা কোনদিন তিনটি কোনদিন দুটি পর্যায়ে হকারদের ভাগ করবেন। ৪০ জন করে এক এক দিন বসবেন, পর্যায়ক্রমে এটি রোটেশন হবে। আজ যদি ৬০ জন হকার বসেন তবে আগামীকাল ৬০ জন বসবেন। আজ যদি ৪০ জন বসেন, পরবর্তী দ্বিতীয় দিনে অন্য ৪০ জন বসবেন,তৃতীয় দিনে অন্য ৪০ জন বসবেন।
এইভাবে রোটেশনালি হকাররা বসবেন। কারণ করোনা বিষয়ে তারাও সতর্ক রয়েছেন। এইভাবেই তারা তাদের আগামী দিনগুলি কষ্টের মধ্যে দিয়ে জনসাধারণের স্বার্থে তাদের কথা চিন্তা করে এবং স্বাস্থ্যবিধির মান্যতা দিয়ে তাদের রোজগারের পুনর্জীবন করতে চাইছেন।
সুনীল মিত্র জানান, এই লকডাউনের পিরিয়ডে ইউনিয়নগতভাবে যে সমস্ত হকার আর্থিক বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছেন তাদের তারা বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করেছেন এবং তাদের পাশে থেকেছেন।