অবতক খবর,১৭ ফেব্রুয়ারি: কাঁচরাপাড়া এবং পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে মোট ৪৭টি ওয়ার্ড। এই ৪৭টি ওয়ার্ডের মধ্যে হালিশহরের প্রাক্তন পৌর প্রশাসক রাজু সাহানীর ওয়ার্ডে সিপিএম প্রার্থী দিতে পারেনি। অর্থাৎ সেখানে কোন বিরোধী প্রার্থী নেই। অর্থাৎ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় তৃণমূল প্রার্থী রাজু সাহানী জয়ী হয়ে গিয়েছেন‌। এ ব্যাপারে ওই অঞ্চলের পরিস্থিতি কি,কি অবস্থায় আছে,কেন প্রার্থী দিতে পারলেন না বিরোধীরা কিছুই জানাচ্ছে না।এ নিয়ে নানারকম প্রশ্ন উঠেছে।

 

অন্যদিকে ৪৬টি ওয়ার্ডে সিপিএম যে প্রার্থী দিয়েছে তা অবশ্যই নতুন মুখ। এখন প্রশ্ন, নতুন তরুণ মুখ হলেই কি রাজনৈতিক এই সংসদীয় লড়াইয়ে জেতা যায় বা জেতা যাবে?? যেহেতু বামপন্থী রাজনীতি ফলত, তথাকথিত দক্ষিণপন্থী কায়দায় এই রাজনীতি চলে না। নতুন মুখ হলেই কি জেতা যায়? এই প্রশ্ন এই অঞ্চলের মানুষদের মধ্যে।‌ যে সমস্ত প্রার্থীরা দাঁড়িয়েছেন নির্বাচনে তাদের নাম দেওয়ালে লেখা হচ্ছে, ফ্লেক্সে ব্যানারে জানানো হচ্ছে,তারা পাড়ায় পাড়ায়ও ঘুরছেন। এসবই ঠিক,যথার্থ এবং নির্বাচনী কৌশলের মধ্যে পড়ে। কিন্তু এই প্রার্থীদের নির্বাচনের আগে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কতখানি পরিচিতি ছিল? তারা নির্বাচনের আগে কিভাবে পাড়ায় পাড়ায় ঘরে ঘরে জনসংযোগ করেছেন? এই মুখটিকে ওয়ার্ডের মানুষ প্রতিনিয়ত দেখেছেন কিনা? তিনি বামপন্থী রাজনীতি করেন কিনা, সেইরকম সংযোগ কি স্থাপিত হয়েছে? এইসমস্ত নতুন তরুণ মুখ শ্রমজীবী আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত, যুব আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত, মহিলা আন্দোলনের সঙ্গে জড়িত, সংগঠনের অন্যান্য ক্রিয়া প্রক্রিয়ায় জড়িত, একথা সবই সত্য। কিন্তু এই মুখগুলি যে নেতৃত্বের পর্যায়ে আছে সেটি কি পাড়ায় পাড়ায় মানুষ আগে জানতেন?

 

কাঁচরাপাড়ার যে আন্দোলন, হালিশহরের যে আন্দোলন তা শুধু রাজপথেই সীমাবদ্ধ। এই তরুণ-তরুণী নতুন মুখগুলি তারা খুব সম্ভবত বিভিন্ন ইস্যুতে বিভিন্ন আন্দোলনে লাল পতাকার বাহিনী হয়ে কাঁচরাপাড়া থানার মোড় থেকে লিচুবাগান মোড় পর্যন্ত এই পথ অতিক্রম করেছেন। অথবা মোনা দত্ত সরণি হয়ে আর.পি স্কুল হয়ে থানার মোড় হয়ে পার্টির দপ্তরে এসেছেন। ‌অথবা গান্ধীমোড় হয়ে স্টেশন পর্যন্ত গিয়েছেন। এই মুখগুলি যদি কেউ দেখে থাকেন,তাহলে সীমাবদ্ধ রাজপথের মধ্যেই তারা তাদের দেখেছেন। পাড়ায় পাড়ায় ঘরে ঘরে পরিচিত হতে তারা এখন ঘুরছেন এই নির্বাচনী প্রচারকার্যের সময়।এর আগে কি তারা এইভাবে জনসংযোগ করেছেন?

 

তারা অনেকেই রেড ভলান্টিয়ার্স, মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন, একথা সত্য।‌কিন্তু তারা যে নির্বাচনের প্রতিনিধিত্ব করবেন, সেইভাবে পরিচিতি তারা পেয়েছেন কিনা,এর ওপরে নির্বাচনী লড়াই এবং জয় নির্ভর করছে।

 

হালিশহরেও বামপন্থী আন্দোলন বিভিন্ন ইস্যুতে বলদেঘাটা মোড় থেকে বাগমোড় বা বলদেঘাটা মোড় থেকে সরকার বাজার হয়ে হালিশহর স্টেশন পর্যন্ত মোটামুটি সীমাবদ্ধ। এই যে লড়াইয়ের দৃশ্যমানতা, মিছিলের দৃশ্যমানতা,এতে কি তথাকথিত বামপন্থীমূলক জনসংযোগ হয়েছে? নির্বাচনে হারা জেতার প্রশ্ন ওঠানো হচ্ছে না। লড়াই যে একটা মূল প্রক্রিয়া জনসংযোগ, মানুষের মধ্যে যে পরিচিতি সেটা কি যথার্থভাবে হয়েছে? নির্বাচনের মুখে অর্থাৎ লড়াই যখন সমাসন্ন সেই মুহূর্তে অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই কি সেই জনসংযোগ গড়ে তোলা যায়?