রক্তাক্ত ময়দানে দিল্লি আজ। বুলেটবিদ্ধ দিল্লি, আগুন গিলছে দিল্লি।ধর্মীয় উপাসনালয় পুড়ে যায়। পড়ে থাকে নিহতদের লাশ। গণতন্ত্রের উন্মত্ত উল্লাস…..
কুরুক্ষেত্র পর্ব
তমাল সাহা
অগ্নিগর্ভ ও ভয় শব্দ দুটি এতদিন শুনেছি
এখন দেখতে পাই স্বচক্ষে।
হে ঈশ্বর! এতদিন রেখেছো বাঁচিয়ে
এবার তুলে নাও, করো রক্ষে।
এ আমায় কোথায় নিয়ে এলে সঞ্জয়? এতদূরে?
ওই দেখুন! নীল জলপ্রবাহ আছড়ে পড়ে
ভারত মহাসাগর তীরে।
আমিতো ধৃতরাষ্ট্র নই আর, নই জন্মান্ধ,
দেখতে পাচ্ছি রাষ্ট্রীয় সমস্ত চিত্র,ছিদ্র-রন্ধ্র।
ওই তো অদূরে সংঘর্ষ।
ঝনাৎকার শুনতে পাচ্ছি, পাচ্ছি বারুদ গন্ধ।
তবে কি এখনো যুদ্ধ হয়নি শেষ?
মহারাজ! দেখুন,
চাঁদবাগে পড়ে আছে লাশ, চলছে পাথর বৃষ্টি, মৌজপুর বাবরপুরে জ্বলছে আগুন।
তেরো জন নিহত পড়ে আছে, রক্ত নিঃশেষ।
সঞ্জয়!ওগুলো হাতে হাতে কি ঘুরছে?
— পেট্রল বোমা।
শিক্ষা দিতে হবে, নয় কোন ক্ষমা।
শুনুন উঠেছে রব,
মাচিস কাঁহা হ্যায়,শালো কো মারো গোলি।
ভয়ার্ত নারী-পুরুষ পালাচ্ছে দেখুন! ওই যেখানে সেখানে অলিগলি।
কে কোথায় আর কতদূর যাবে?
রক্ত আর আগুন ওদের মিলেমিশে খাবে।
সঞ্জয়,আর কি কি ঘটছে বলো?
কানে শুনি কম,বয়েস তো অনেক হলো।
জাফরাবাদ থেকে পালাচ্ছে মানুষ—
মৌজপুর, বাবরপুর, সেলিমপুরে বহু পরিবার বাড়ির সামনে ঝুলিয়ে দিয়েছে পতাকা গেরুয়া।
রঙে কি আসে যায়!
গৈরিক রং যদি এখন জীবন বাঁচায়,
মেনে নেব সব ফতোয়া।
শুনুন মহারাজ!
ওই যে দেখছেন রণক্ষেত্র,
এখানে মানত শুধু নরবলি।
ফিরে চলুন মহারাজ,
কে খণ্ডাবে ভারতবর্ষের ললাট লিখন!
এখানে ধর্ম ও ক্ষমতার গলাগলি।
অশোক-বুদ্ধ-চৈতন্যের দেশ
একদিন করেছিল ঘোষণা—
জয় মানবতা!
ধর্মের হাতে সে উলঙ্গ আজ
ভারতীয় প্রান্তরে পড়ে আছে ধর্ষিতা।