অবতক খবর,১২ নভেম্বর: নদিয়ার শান্তিপুরের ব্রহ্মশাসনে চন্দ্রচূড় তর্কমুনির কামরাঙা গাছ তলায় পঞ্চমুণ্ডির আসনেই প্রথম পূজিত হন জগদ্ধাত্রী।
কৃষ্ণনগর নয়,প্রথম জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রচলন হয় শান্তিপুরে। চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী পুজো বিখ্যাত আলোকসজ্জার জন্য। অনেকেরই জানা, নদিয়া জেলার কৃষ্ণনগরে জগদ্ধাত্রী পুজোর প্রবর্তন হয় ১৭৬২ সালে।
তবে সেটা ছিল ঘট পুজোর মধ্যে দিয়ে। জগদ্ধাত্রী রূপের সন্ধান, পুজোর প্রয়োজনীয় পদ্ধতি এবং মন্ত্রের অন্বেষণ হয়েছিল শান্তিপুরেই । ১৮০২ সালে, গিরিশচন্দ্র রায় নদিয়ার অধিপতি হওয়ার সময়, শান্তিপুরের হরিপুর অঞ্চলের ১০৮ ঘর ব্রাহ্মণদের মধ্যে অন্যতম চন্দ্রচূড় তর্কচূড়ামণিকে রাজসভায় সভা অলংকৃত করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন।
তিনি সিংহবাহিনী চতুর্ভূজা। ঊষাকালে সূর্যের রং প্রাপ্ত ঊষা বর্ণা মায়ের প্রথম মূর্তি তৈরি করিয়ে, কামরাঙা গাছের নিচে তার পঞ্চমুণ্ডির আসনে প্রথম পুজো করেন। এরপর কৃষ্ণনগর চন্দননগর এবং রাজ্যের অন্যত্র মূর্তি হিসেবে পূজিত হন জগদ্ধাত্রী। তবে সকল তথ্যই মিথ হিসেবে প্রচলিত।
এক স্থানীয় বাসিন্দা জানান, নদিয়ার মহারাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায়ের রাজত্বকালে নবাব আলিবর্দি খাঁ, তাঁর থেকে ১২ লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন। রাজা কৃষ্ণচন্দ্র তা দিতে অস্বীকার করায় তাঁকে মুর্শিদাবাদে বন্দি করা হয়। বন্দিদশা কাটিয়ে যখন রাজা কৃষ্ণনগরে ফিরছিলেন, তখন তিনি শুনতে পান দুর্গাপুজোর বিসর্জনের বাজনা বেজে গেছে। দুর্গাপুজোয় সেখানে উপস্থিত না থাকতে পেরে, অত্যন্ত কষ্ট পান তিনি। সেই রাতেই মা জগদ্ধার্থী, মহারাজার স্বপ্নে দর্শন দিয়ে তাঁকে পুজোর নির্দেশ দেন। সেই সময় তিনি শান্তিপুর ভাগীরথী নদী দিয়ে মুর্শিদাবাদ থেকে ফিরছিলেন কৃষ্ণনগরে। অন্ধকার হয়ে যাওয়ার কারণে, হরিপুর ব্রহ্মশাসনে নিশিযাপন করে চন্দ্রচূড় তর্কাচুড়া মনির পঞ্চমুণ্ডির আসনে পুজো করেন।
সেখানেই স্বপ্নাদেশে এই মায়ের আবির্ভাব। মা দুর্গার বিকল্প হিসেবে মা জগদ্ধাত্রীর আরাধনা শুরু হয় বাংলায়। পরবর্তীকালে কৃষ্ণচন্দ্র রাজার পুজোর থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ফরাসিদের দেওয়ান ইন্দ্রনারায়ণ চৌধুরী তৎকালীন ফরাসডাঙা অর্থাৎ বর্তমানের চন্দননগরে জগদ্ধার্থী পুজো শুরু করেন।
তবে মায়ের রূপদান এবং প্রথম পুজো শান্তিপুরের তর্কচূড়ামণির কামরাঙা গাছের নিচে পঞ্চমুণ্ডির আসনে।