অবতক খবর, ৬ জুনঃ হালিশহরের ভূমিপুত্র প্রখ্যাত সাহিত্যিক সুব্রত মুখোপাধ্যায়- এর ৭২ তম জন্মদিন পালিত হল নৈহাটি ঐকতান-সমরেশ বসু কক্ষে। হালিশহরের ভূমিপুত্র হলেও হালিশহর লোকসংস্কৃতি সদনে তাঁর এই অনুষ্ঠান করা যায়নি কেন এ নিয় প্রশ্ন উঠেছে।
হালিশহরের ভূমিপুত্র সুব্রত মুখোপাধ্যায় ভারতীয় সাহিত্যে এক উল্লেখযোগ্য নাম। ভারতীয় সাহিত্যে অবদানের জন্য বীরাসন উপন্যাস লিখে সাহিত্য একাডেমী অর্জন করেছেন। তাঁর বহু আলোড়িত উপন্যাস রসিক লিখে তিনি বঙ্কিম পুরস্কার পেয়েছেন। অন্যদিকে তিনি পেয়েছেন সমরেশ বসু পুরস্কার। করোনা পূর্বকালে সংকটময় সন্ধিক্ষণে ২০১৯ সালে প্রয়াত হয়েছেন।
তাঁর সাহিত্যের সঙ্গে রয়েছে কুমারহট্ট, হাবেলিশহর এবং বর্তমান হালিশহর। এই অঞ্চলের যাপিত জীবন, প্রান্তিক মানুষ, পৌরাণিকতা, রামপ্রসাদ, রামপ্রসাদী সংগীত,ঈশ্বরপুরী এবং রাজনৈতিক প্রেক্ষিত বিধৌত তাঁর উপন্যাস। তিনি এই অঞ্চলের একটি গর্ব-অহংকার। কিন্তু কঠিন পরিস্থিতিতে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার পর তাঁকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের কাজটি যথাযথভাবে সম্পন্ন হয়নি মনে করে এ বছর তাঁর জন্মদিবস পালন করতে চেয়েছিলেন তাঁর পরিবারবর্গ এবং অঞ্চলের একটি সংস্থা গণকণ্ঠ। আজ গণকন্ঠের আয়োজনে একটি মনোজ্ঞ স্মরণসভা বিশেষ করে তাঁর সাহিত্য নিয়ে আলোচনা, তাঁর সঙ্গীতপ্রীতিকে বিষয় করে একটি সুন্দর অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয় নৈহাটি ঐকতান সমরেশ বসু কক্ষে। এতে অংশগ্রহণ করেন অঞ্চলের প্রথিতযশা আবৃত্তিকাররা ও আলোচকেরা। তাঁর গল্পের বিভিন্ন আঙ্গিক তাদের আলোচনায় এবং গল্পপাঠে ফুটে ওঠে। অন্যদিকে তার সাহিত্যকৃতি নিয়ে আলোচনা করেন নজরুল গবেষক বাঁধন সেনগুপ্ত, পেলব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রবীন্দ্রনাথ মুখার্জী। এই অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন শিল্পী নীলাদ্রি বিশ্বাস।
অনুষ্ঠানটি হালিশহর লোকসংস্কৃতি ভবনে কেন অনুষ্ঠিত হলো না এ প্রসঙ্গে প্রাক্তন পৌর প্রধান রবীন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় জানান যে, আয়োজক কর্তৃপক্ষের কাছে বিশেষ বিশেষ শর্ত আরোপ করা হয়েছিল। এমন একটি ব্যক্তিত্বের জন্মদিন যার সঙ্গে সাহিত্য ও হালিশহরের মান সম্মান জড়িত তাঁর প্রতি কেন ঔদাসীন্য,কেন শর্ত আরোপ করা হয়েছিল জানিনা। এ নিয়ে জনমনে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে।
অনেক বিদগ্ধজন বলেছেন যে হালিশহরে সংস্কৃতির দায়িত্বে যারা আছেন প্রকৃতপক্ষে তাদের সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের সাহিত্যমূল্য সম্পর্কে বিন্দুমাত্র ধ্যানধারণাই নেই। কতগুলো সাংস্কৃতিক ঠিকাদার এ বিষয়ে দেখভাল করছে যারা সাহিত্যের কিছুই জানে না বোঝে না। এই ঘটনা হালিশহর পৌরসভার জীবনে একটা কলঙ্কিত অধ্যায় হয়ে থাকবে।