আজকের খিচুড়িতে পোকা একটু বেশিই ছিল।
সংবাদ আনন্দবাজার পত্রিকা,১৬ জুন,২০২২।
খিচুড়ি ও পোকা বিষয়ক
তমাল সাহা
খিচুড়ি খায়নি এমন কেউই নেই। বড়লোকেরা মানে টাকা পয়সাওলা লোকেরা পর্যন্ত খিচুড়ি খেয়েছে। খিচুড়ি তো ভোগ মহাপ্রসাদ। মণ্ডপে মন্দিরে দেবস্থানে পাওয়া যায়। খিচুড়িকে খিচড়া বলে হিন্দি ভাষায়। আর লঙ্গরখানায় এবং দরিদ্র ভোজনে যাকে বলা হয় মহা সেবামূলক অনুষ্ঠান সেখানে হড়হড়ে ঝ্যালঝ্যালে খিচুড়ি তো পেটভুখাদের কাছে অমৃত। তারা শালপাতা পর্যন্ত চেটেপুটে খায়।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও ঢুকে গিয়েছে খিচুড়ি। অঙ্গনওয়াড়ি খাবারে স্কুলে পোকাখাওয়া– পোকাপড়া চাল ডালের খিচুড়ির স্বাদই আলাদা। খিচুড়ির নতুন উপকরণ পোকা। চাল, ডাল এবং পোকা তিনটিই জৈব পদার্থ। ফলে সেদ্ধ মিশ্রণটি উপাদেয় হবে, এটা সুনিশ্চিত।
নামখানা মৌসুনিতলা স্পেশাল ট্রেডার আইসিডিএস সেন্টার। মিড-ডে মিল। পোকাপড়া চাল ডালের খিচুড়ি দেওয়া হয়েছে সেখানে। অঙ্গনওয়াড়ির দায়িত্ববতী মমতাজ বিবি বলেন, এটা ঠিক আজ খিচুড়িতে পোকা একটু বেশিই পড়েছিল। একথা ভারতে প্রচারিত প্রথম শ্রেণির বাংলা দৈনিক আনন্দবাজার পত্রিকা বলেছে, আমি নই।
তার মানে রোজই পোকা থাকে। আজ একটু না হয় বেশিই হয়েছে এইমাত্র। আরো বোঝা গেল এই পোকা স্বাস্থ্যহানিকর নয়। কারণ এখনও পর্যন্ত অসুস্থতাজনিত কোনো দুঃসংবাদ আসেনি।
তবে লাভ হয়েছে এই,একজন খিচুড়ে যে খিচুড়ি খেয়েছে এমন একজন কিশোর বলে উঠল, খিচুড়িতে পোকা তো কি হয়েছে,আমরা মিড ডে মিল এই তিনটি ইংরেজি শব্দ তো শিখে গিয়েছি। কারা চাল ডাল মেরে দেয়,এই মেরে দেওয়ার সঙ্গে কারা কারা কামাইবাজিতে জড়িত সেসব আমাদের
দেখার কি দরকার?
আমরা একটু আধটু খিচুড়ি পাচ্ছি। এটা আমাদের পেটের দরকার,এটা বুঝে গিয়েছে আমাদের সরকার।
একটু পোকা থাকলেই বা কি! আমরা গরিবগুব্বো। এটা আমাদের একটু সহ্য করতেই হবে। লোকে খিদেতে পিঁপড়ে খেতে পারলে আমরা পোকা তাও তো চাল ভাল মেশানো,খেতে পারব না!