অবতক খবর,৯ ডিসেম্বর,বাঁকুড়াঃ- গঙ্গাধর পেল ভোটার কার্ড এখন সে ভারতীয় নাগরিক তবে কেন তাকে চার বৎসর ডিটেনশন ক্যাম্পে থাকতে হয়েছিল তার উত্তর দেবে কে ?? এই ঘটনা নিয়ে অবশ্য রীতিমতো শাসক-বিরোধী কাদা ছোড়াছুড়ি করতেই ব্যস্ত ।

অবশেষে ভোটার সচিত্র পরিচয় হাতে পেলেন চার বছর অসমের ডিটেনশান ক্যাম্পে কাটানো, বিষ্ণুপুরের রাধানগর গ্রামের যুবক গঙ্গাধর পরামানিক। একজন ভারতীয় নাগরিক হওয়ার সুবাদে কেন গঙ্গাধর কে ডিটেনশন ক্যাম্পে বন্দী হতে হলো এ নিয়ে অসম সরকারের বিরুদ্ধে উঠেছে প্রশ্ন ।

মঙ্গলবার স্থানীয় মহকুমাশাসক অনুপ কুমার দত্ত গঙ্গাধরের বাড়িতে গিয়ে তার হাতে সচিত্র ভোটার পরিচয় পত্র তুলে দেন।

প্রসঙ্গত, মাত্র ১৬ বছর বয়সে বাড়ি থেকে কাজের খোঁজে বেরিয়ে অসমে পৌঁছে ছিলেন রাধানগর গ্রামের যুবক গঙ্গাধর পরামানিক। সেখানে কিছু দিন হোটেলে কাজ করেন তিনি। পরে সঙ্গে সচিত্র ভোটার পরিচিতি পত্র সহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র না থাকা ২০১৭ সালে অসম সীমান্ত শাখার পুলিশ তাকে বাংলালেশী অনুপ্রবেশকারী সন্দেহে গ্রেফতার করে। পরে ঐ বছরেরই ১২ ডিসেম্বর থেকে ‘গোয়ালপাড়া ডিটেনশান ক্যাম্পে’ জায়গা হয় তার।

অসমের ‘সিটিজেন ফর জাস্টিস অ্যাণ্ড পিস’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সৌজন্যে বন্দিদশা থেকে মুক্তি পেয়ে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে রাধানগরের বাড়িতে ফেরেন গঙ্গাধর পরামানিক । তারপর থেকেই সচিত্র পরিচয় পত্র বানানোর জন্য গঙ্গাধর পরামানিক স্থানীয় ব্লক অফিসে জমা দেন তার প্রয়োজনীয় নথিপত্র ।

অবশেষে বিষ্ণুপুর মহকুমা শাসকের সৌজন্যে সচিত্র ভোটার পরিচিতিপত্র হাতে পেয়ে খুশী এক সময় ‘নিজদেশে পরবাসী জীবন কাটানো গঙ্গাধর পরামানিক।

মহকুমাশাসক অনুপ কুমার দত্ত বলেন, ভোটার পরিচিতি পত্র না থাকায় অসমে কাজ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়েছিল রাধানগরের গঙ্গাধর পরামানিক। সেখান থেকে ফেরার পর সচিত্র ভোটার পরিচিতিপত্রের জন্য সে আবেদন করেছিল। সমস্ত তথ্য, প্রমাণ যাচাই করে তার হাতে এই পরিচিতি পত্র তুলে দেওয়া হলো বলে তিনি জানান।

ভোটের কার্ড হাতে পাওয়ার পর গঙ্গাধর পরামানিক বলেন এবার তাকে আসাম সরকার তার জীবনের চারটে বৎসর ফিরিয়ে দিক , তিনি দাবি তোলেন আসামের ডিটেনশন ক্যাম্পে যারা এখনো তার মত বন্দি রয়েছে অবিলম্বে আসাম সরকার তাদের ছেড়ে দিক ।

বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি অলোক মুখার্জী বলেন আজ গঙ্গাধর পরামানিকে নির্বাচন কমিশন তিনি যে ভারতীয় নাগরিক সেই কাগজ তার হাতে তুলে দেয় বিষ্ণুপুরের SDO সাহেব, এর থেকে বোঝা যায় মোদিজীর সরকার নিশংস কত তিনি বিজেপি সরকারকে কটাক্ষ করে বলেন মোদিজীর সরকার স্বার্থন্বেষী সরকার ধান্দাবাজ সরকার একনায়কতন্ত্র সরকার ।

বিজেপি বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুজিত আগস্তি বলেন পশ্চিমবাংলায় কাজের অভাব হয়ে গেছে বাধ্য হয়ে কম বয়সী ছেলেদের বাইরের রাজ্য যেতে হয় । গঙ্গাধর বাবুও কোনরকম আইডেন্টি ছাড়া বাইরের রাজ্যে কাজে গিয়ে ছিল ভারতীয় জনতা পার্টি এনআরসি কে সাপোর্ট করে ভারতবর্ষের মানুষের কাছে এনআরসি কোন সমস্যা নেই আজ আমরা দায়িত্ব নিয়ে বলছি উনার ভোটার কার্ড তৈরি হয়েছে উনি আসামে যান কোথাও ডিটেনশন ক্যাম্পে থাকতে হবে না ভারতীয় জনতা পার্টি দায়িত্ব নিয়ে ওখানে উনাকে আবার কাজ দেবে । তৃণমূলকে কটাক্ষ করে বলে গঙ্গাধর বাবুকে নিয়ে আজ যে তৃণমূল নোংরা রাজনীতি করছে সেই সময় তারা কোথায় ছিল যখন কাজের অভাবে গঙ্গাধর বাবুকে আসামে যেতে হয়েছিল কেন তৃণমূল সরকার তাকে কাজ দেয়নি ।

অন্যদিকে বাঁকুড়া জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক দেবু চ্যাটার্জির দুই দলকেই একযোগে আক্রমণ করেন তিনি বলেন এনআরসির নামে বিজেপির ঘৃণ্য রাজনীতিতে ভারতবাসীকে দেশদ্রোহী করে দেওয়া । তিনি আরো বলেন বিষ্ণুপুর রাধানগরের যুবককে আজকে এই এনআরসির চক্করে দেশদ্রোহী করে চার বছর বন্দী করে রাখা হল এটা আসাম সরকারের ঘৃণ্য রাজনীতি অন্যদিকে এই ছেলেটিকে রাজ্য ছেড়ে অন্য রাজ্যে কাজের জন্য যেতে হয়েছে বাংলায় যদি কর্মসংস্থান থাকতো তবে তাকে অন্য রাজ্যে যেতে হতো না গঙ্গাধর এর মত অনেক যুবককে বাইরের রাজ্য যেতে হয়েছে যে রাজ্যে বিজেপি শাসিত রয়েছে সেই রাজ্যে এনআরসি নামে ঘৃণ্য চক্রান্ত চালাচ্ছে বিজেপি ।