গণতন্ত্রের কি হয়েছে? কোন্ অসুখ? রব উঠেছে গণতন্ত্র বাঁচাও। বাঁচাবে কোন্ মেডিকেল টিম?
গণতন্ত্র বাঁচাও
তমাল সাহা
ভারত জুড়ে শোকাচ্ছন্ন রব।
গণতন্ত্র বাঁচাও!
কোথায় গণতন্ত্রের লাশ!
কোথায় গণতন্ত্রের শব?
গণতন্ত্রের কি রোগ হয়েছে?
কোথায় চলছে গণতন্ত্রের চিকিৎসা?
তার কি নিরাময়ের আছে
কোনো আশা-ভরসা?
মাদ্রাজ, ব্যাঙ্গালোর, দিল্লি বা বিদেশে কোনো মাল্টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে গণতন্ত্র স্থানান্তরিত ?
তার শোক-সন্তাপে কারা
এতো আকুল অবিরত?
গণতন্ত্রের অবস্থা এখন কেমন?
সে কি আই সি ইউ-তে আছে,
কোমায় আচ্ছন্ন?
গণতন্ত্রের মেসো-পিসেরা মেতেছে মড়াকান্নায়–চোখমুখ শুষ্ক-বিষণ্ণ।
গণতন্ত্র কোথায়?কেউ বলছে না।
শুধু বলছে গণতন্ত্র বাঁচাও। কে বাঁচাবে?
জুড়ে দিয়েছে চিৎকার পরস্মৈপদী রবে।
আসলে গণতন্ত্র জিনিসটা কি
কেউ কি জানে?
বাক্যবাগীশ এক নারী বলেছেন,অফ দি পিপল, ফর দি পিপল, বাই দি পিপল এর মানে।
গণতন্ত্র! গণতন্ত্র! বলে কেঁদেকেটে সাড়া
গণতন্ত্র আছে সঠিক স্হানে
মন্ত্রীর পেছনে সান্ত্রীর পাহারা।
একজন রাষ্ট্রনীতিবিদ
বলে উঠলেন গণতন্ত্র চেনো না?
আরে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ গণতান্ত্রিক দেশ ভারতবর্ষ!
গণতন্ত্রকে বাংলায় বলে
ডেমোক্রেসি! আরেএও জানো না?
ডেমোক্রেসি মুদ্রার উল্টো পিঠ হিপোক্রেসি!
এতক্ষণ পেটে ছিল শব্দটি,
মুখে আসছিল না।
এত সোজা শব্দটা গিয়েছিলাম ভুলে,
তিনি বললেন চোখ কপালে তুলে।
আরে তন্ত্র শব্দটা তো
তোমরা জানো।
তনুকে রক্ষা করার জন্য
যে কৌশল সেটাই তো তন্ত্র।
যতক্ষণ পারো ধরে রাখো ক্ষমতা,
এটাই একমাত্র মন্ত্র।
আর গণতন্ত্র?
সে তো আরও অনেক বড়!
তন্ত্র সাধনায় কি লাগে?
মড়ার মাথার খুলি, রক্ত,আগুন, মদ।
তাহলে ভেবে দেখো
গণতন্ত্র আরও কত বড়ো!
তাতে লাগবে কতো কতো মড়ার খুলি,কত রক্ত, কত বিস্তৃত আগুন, লেলিহান শিখা।
ঐ দেখো, লালকেল্লায় গণতন্ত্রের রূপরেখা।
কারা যেন রক্তটিকা পরেছে,
গেরুয়া বস্ত্র তার গায়ে।
হাতে ত্রিশূল রথ নিয়ে সে ছুটে চলেছে জোর দ্রুত পায়ে—
গণতন্ত্র বাঁচাও।
মা- মাটি- মানুষের দল,
গায়ে নীল সাদা পোশাক।
কপালে তিলক মাটি
বাঁশ লাঠি নিয়ে নেমেছে পবিত্র যাত্রায়—
গণতন্ত্র উড়ে চলে বাইকের মাথায়।
বামপন্থী দল।
কাঁধে লাল ঝান্ডাটি ঠিক আছে।
তারাও হেঁটে চলেছে গণতন্ত্রের
আগে পিছে।
অথচ গণতন্ত্র
জিনিসটা কি, কেউ তা দেখেনি!
কিন্তু বাঁচাও গণতন্ত্র!বাঁচাও গণতন্ত্র!
উঠে গেছে রব ও ধ্বনি।
এবার সবাই গণতন্ত্র বাঁচানোর
কসরত দেখাবে ব্রিগেড ময়দানে।
বিরাট গলায় বলবে,
গণতন্ত্র বাঁচাও, মানুষের জয়গানে।
বাঁচাও তো বটে , কিন্তু
বাঁচাবে কে , কিভাবে বাঁচাবে
সেকথা কেউ বলছে না।
মাঝে মাঝে উঠছে আওয়াজ
কেউই লাগাতার লড়াইয়ে নামছে না।