অবতক খবর,২৫ ডিসেম্বর: ক্রিসমাস ইভেও গাজার আকাশে বাতাসে বারুদের গন্ধ, মাটিতে সেনাবাহিনীর বুটের শব্দ। মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশে রিফুউজি ক্যাম্প-শরণার্থী শিবির-ত্রাণ শিবির, এইসব শব্দগুলির কোনো মানে নেই। সেখানেও বোমার হামলা চালাচ্ছে ইজরাইলি সেনারা।

এত লাশ গুণবে কে? বড়দিনের সকাল। পড়ে আছে অসংখ্য লাশ। সোমবার বড়দিনের আগের রাতে মাঘাজি শরণার্থী শিবিরে বোমা হামলায় অন্তত ৭০ জন মারা গিয়েছে। ওয়েস্টব্যাংক থেকে যিশুর বাড়ি বেথলেহেম বেশি দূরে নয়।
এই বড়দিনেই ১৩ বছরের এক কিশোরের কন্ঠ ফুঁড়ে বেরিয়ে গিয়েছে ইজরাইলি স্নাইপারের কার্তুজ।

বেথলেহেমের মন ভালো নেই। গাজার মৃত্যুমিছিল আর তাদের ভালো লাগছে না। বিষাদের ছায়া নিয়ে বেথলেহেমের নীরব প্রতিবাদে শিল্পীরা সামিল হলেন আর্ট ইনস্টলেশনে। চার্চ অফ নেটিভিটির বাইরে সদ্যোজাত শিশুকে ইনকিউবেটরে রাখলেন শিল্পী সানা ফারা বিসারা। আরেকজন শিল্পী চার্চের বাইরে ‘ছোট্ট যিশু’কে ধরলেন চারপাশে ধ্বংসস্তূপ তার মাঝখানে।

ভ্যাটিকান সিটির পোপ ফ্রান্সিস-এর মন ভালো নেই। তার চোখে মুখে যন্ত্রণার ছাপ। তিনি বড়দিনের মেসেজে বললেন, গাঁজার শিশুরাই আজকের যিশু। অকারণে এই যুদ্ধ‌। এই যুদ্ধের কোনো মানে নেই‌। শিশেদের রক্তে প্লাবিত করে দিচ্ছে এই যুদ্ধ।হিংসায় পায়ে মাথা খুঁড়ে মরছে শান্তি। চারিদিকে যখন অস্ত্র উৎপাদন, ব্যবসা এবং বিশ্বব্যাপী তার বাণিজ্য তুঙ্গে
কখন আমরা শান্তির কথা কোন মুখে বলতে পারি?
গাজার শিশুরাই আজকের যিশু। গাজা আমাদের হৃদয়ে।

যিশুর নিজের জন্মভিটে বেথলেহেমে আনন্দ নেই। নেই সেইসব দোকান যারা ছোট ছোট মাতা মেরি খুদে যিশুর মূর্তি বিক্রি করতো। বড়দিনে বিদেশি পর্যটকেরা আসে এখানে। জোয়ে কানাভাতি একজন হোটেল মালিক। তিনি চার প্রজন্ম ধরে এখানে হোটেল চালাচ্ছেন। তিনি বলেন কোনো বিদেশি পর্যটক আসেনি আমাদের হোটেলে।
কোনো বুকিং হয়নি।
যুদ্ধের আগে যে সমস্ত হোটেল ঘর বুকিং হয়েছিল সেগুলোও ক্যানসেল হয়ে গিয়েছে। তিনি আশঙ্কার চোখ নিয়ে বললেন, আগামী বছরের বুকিংও বাতিল করেছেন অনেকে।