হক জাফর ইমাম :: অবতক খবর :: মালদহ ::    বিয়ের পাঁচ বছরের মাথায় পণের দাবিতে গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ উঠলো স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত স্বামী সুবির মন্ডল, শ্বাশুড়ি আলোকা মন্ডল ও দেওয়র টিংকু মন্ডলকে মালদা জেলার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ গ্রেফতার করলেও দুই অভিযুক্ত রমেশ মন্ডল ও অনিমা মন্ডল পলাতক। ঘটনাটি ঘটেছে মালদার হরিশ্চন্দ্রপুর থানার দৌলতনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের গোবরা মিস্ত্রি পাড়া এলাকায়। ঘটনায় অভিযুক্ত স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী সহ মৃতার পরিবার। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।

পুলিশ সূত্রে জানাগেছে, মৃত গৃহবধূর নাম সোনা মন্ডল (২৫)। অভিযুক্ত স্বামী সুবির মন্ডল ওরফে ছোটন(৩০) একজন গ্রুপ ডি বিভাগের স্কুল কর্মী। স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে,প্রায় পাঁচ বছর আগে হিন্দু শাস্ত্র মতে রতুয়া থানার সূর্যপুর গাবুয়া এলাকার তপন মন্ডলের কন্যার সাথে হরিশ্চন্দ্রপুর থানার গোবরা মিস্ত্রি পাড়া এলাকার রমেশ মন্ডলের ছেলে সুবির মন্ডলের বিয়ে হয়। বিয়ের কয়েকদিন যেতে না যেতেই বাবার বাড়ি থেকে টাকা আনার জন্য চাপ দিতে থাকে স্বামী সহ পরিবারের লোকেরা। তার সঙ্গে চলতে থাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। সেই টাকার জন্য গত পাঁচ দিন ধরে পরিবারে চলছিল অশান্তি। টাকার জন্যই গৃহবধূকে খুন করেছে স্বামী সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন বলে অভিযোগ।

মৃতা সোনা মন্ডলের বাপের বাড়ির অভিযোগ, বিয়ের পর থেকে পণের দাবিতে তাঁদের মেয়ের ওপর নির্মম অত্যাচার চালাতো শ্বশুড়বাড়ির লোকেরা। তাদের দাবি মতো‌‌ কিছু নগদ টাকা সহ ফ্রিজ,খাট,শোকেস, আলমারি দেন ছেলে পক্ষকে। বুধবার রাতে ফের বাপের বাড়ি থেকে টাকা আনতে বলা হলে সোনা মন্ডলের ওপর অত্যাচার চালায় তাঁর শ্বনশুড়বাড়ির লোকেরা। এরপর তাঁকে বেধড়ক মারধর করা হয়। অবশেষে তাঁকে মেরে শ্বাসরুদ্ধ করে খুন করে বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনার কথা জানতে পেরে মৃতার বাবার বাড়ির লোকজন ছুটে গিয়ে দেখেন তার মেয়ে মৃত অবস্থায় খাটে পরে রয়েছে

অপরদিকে মেয়ের শ্বশুরবাড়ির লোকেরা জানান তাদের সুখের পরিবার ছিল। পণের অভিযোগটি পুরোপুরি ভিত্তিহীন। তাদেরকে ফাঁসানোর জন্য মিথ্যা আরোপ করা হয়েছে। সে নিজেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে বলে দাবি।

মৃতার স্বামী সুবির মন্ডল জানান বৃহস্পতিবার স্কুলে চাল ও আলু দেওয়ার জন্য যায়। হটাৎ তার স্ত্রী শোবার ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে মৃত্যুর খবর পেতেই ছুটে আসে দেখে মৃত অবস্থায় খাটে পরে রয়েছে তার স্ত্রী। কেন সে আত্মহত্যা করেছে সে কিছুই জানে না।

ঘটনায় পাঁচ জনের নামে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন মৃতা সোনার বাপের বাড়ির লোকেরা। মৃতার মা পম্পা মন্ডলের অভিযোগ, পণের টাকা দিতে না পারায় মেয়েকে শ্বাসরোধ করে খুন করেছে তার স্বামী সুবির মন্ডল, শাশুড়ি অলোকা মন্ডল ও দেওয়র টিংকু মন্ডল সহ পরিবারের লোকেরা। অভিযুক্তদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

গৃহবধূকে খুনের ঘটনায় শোকস্তব্ধ পরিবার সহ গ্রামবাসীরা। অভিযুক্ত স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকেদের কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন গ্রামবাসীরাও। হরিশ্চন্দ্রপুর থানার পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানোর পাশাপাশি ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। যদিও পলাতক দুই অভিযুক্ত।