অবতক খবর: অভিষেক বন্দ্যাপাধ্যায়ের কুড়মিদের ধমকেছিলেন, এই অভিযোগে আদালতের কাছে রক্ষাকবচ চাইলেন পঞ্চায়েত ভোটের ৩১ জন কুড়মি প্রার্থী। কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বেঞ্চে আবেদন করেছেন তাঁরা। শুক্রবারই মামলাটির শুনানি হতে পারে।
গত মে মাসে অভিষেকের নবজোয়ার যাত্রা কর্মসূচির সময়ে তাঁর কনভয়ের গাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছিল কুড়মিদের বিরুদ্ধে। ঘটনায় রাজ্যের মন্ত্রী তথা আদিবাসী নেত্রী বিরবাহা হাঁসদা আহত হন। অভিষেকের কনভয়ের গাড়িতে হামলার ঘটনায় এর পর গ্রেফতার করা হয় কয়েকজন কুড়মি নেতাকে। গ্রেফতার হন বেশ কিছু কুড়মি আন্দোলনকারীও। হামলার ঘটনা খতিয়ে দেখার তদন্তভার দেওয়া হয় রাজ্যের তদন্তকারী সংস্থা সিআইডিকে। যদিও গ্রেফতার হওয়া কুড়মি নেতা রাজেশ মাহাতো ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবি করেছিলেন।
গত ২৬ মে ঝাড়গ্রাম শহরে ‘নবজোয়ার’ কর্মসূচির ‘রোড শো’ শেষ করে লোধাশুলি হয়ে শালবনি যাওয়ার পথে অভিষেকের কনভয়ের গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। ভাঙচুড় করা হয় গাড়ি। অল্পবিস্তর জখম হন মন্ত্রী বিরবাহা। এই হামলার ঘটনায় ‘কুড়মি সমাজ পশ্চিমবঙ্গ’-এর সভাপতি রাজেশ এবং আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি শিবাজি মাহাতো-সহ ১৫ জন বিক্ষোভকারীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়। পুলিশ এদের মধ্যে মোট ৯ জনকে গ্রেফতার করে।
ঝাড়গ্রামে তাঁর কনভয়ের একাধিক গাড়িতে হামলার ঘটনায় অভিষেক বলেন, হামলার নেপথ্যে কুড়মিরা সত্যিই রয়েছেন কি না, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সাংবাদিক বৈঠক তা স্পষ্ট করতে হবে। নইলে তিনি ধরে নেবেন, কুড়মিরাই তাঁর কনভয়ে হামলা চালিয়েছে। পরে অভিষেককে এমনও বলতে শোনা গিয়েছিল, ‘‘কুড়মিরা তো তফসিলি জনজাতির স্বীকৃতির জন্য লড়ছেন। তার পরেও তাঁরা কী করে জনজাতি মহিলার উপর হামলা চালালেন? এ সব হতাশা থেকে করা হচ্ছে।’’
অন্য দিকে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক সেই সময় কুর্মিদের ক্লিনচিট দিলেও পরে অভিষেক বলেছিলেন, কুড়মিদের বিক্ষোভে তিনি ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান শুনেছেন! এমনকি, হামলার ঘটনায় সত্যিই কুড়মিরা রয়েছে, নাকি তাঁদের সামনে রেখে অন্য কেউ এই কাজ করিয়েছেন, তা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জানাতেও বলেছিলেন অভিষেক। সেই সময়েই অভিষেক হামলাকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছিলেন, ‘‘যারা করেছে, তাদের সবাইকে চিহ্নিত করেছি। প্রশাসনও চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেবে। ভদ্রতার খাতিরে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটেছি। খেলা তুমি শুরু করেছো, আমি শেষ করব।’’
কুড়মিরা অভিষেকের সেই বক্তব্যকেই ‘ধমক’ বলেছেন কি না তা স্পষ্ট করেনি আদালতে। কুড়মি পঞ্চায়েত প্রার্থীদের বক্তব্য, এর আগেও অভিষেকের কাছে এলাকার সমস্যার কথা জানাতে গিয়ে ‘ধমক’ খেয়েছেন কুড়মিরা। পরে কয়েক জন কুড়মি নেতাকে পুলিশ গ্রেফতার করে হেনস্তাও করে বলে অভিযোগ। তাই আবার গ্রেফতারির আশঙ্কা থেকেই রক্ষাকবচ চাইছেন তাঁরা।