অবতক খবর,১২ মার্চ,মালদা:- আবারো পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিল গ্রামবাসীরা। এবার জমির দখলদারিকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়াল পুরাতন মালদার সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের পাথার মাধাইপুর এলাকায়৷ স্থানীয় সূত্রে খবর, এই গ্রামের ৬-৭ জন বাসিন্দার চাষের জমি রয়েছে৷ দীর্ঘ বছর ধরে তাঁরা সেসব জমিতে চাষাবাদ করেন৷ ২০২২ সালে সেই জমিগুলি সবার অলক্ষ্যে অন্য কয়েকজনের নামে রেকর্ড হয়ে যায়৷
এনিয়ে মালদা থানার দ্বারস্থ হন গ্রামবাসীরা৷ কিন্তু পুলিশ এই সমস্যার সমাধান করতে পারেনি৷ অবশেষে গত ডিসেম্বর মাসে গ্রামবাসীরা আদালতের দ্বারস্থ হন৷ সেই মামলা এখনও আদালতের বিচারাধীন৷ এরই মধ্যে এদিন মালদা থানার পুলিশ, আমিন সহ আরও অনেককে নিয়ে গিয়ে সেই জমির দখল নেওয়ার চেষ্টা করেন এলাকার প্রাক্তন বিজেপি নেতা তথা সমাজসেবী হিসাবে পরিচিত নিতাই মণ্ডল৷ গ্রামবাসীরা এতে বাধা দেন৷ এনিয়ে তাঁদের সঙ্গে পুলিশ ও দখল করতে আসা লোকজনের গণ্ডগোল বাধে৷ এরপরেই জমি দখল করতে আসা লোকজন সেখান থেকে চলে যায়৷ সরে যায় পুলিশও৷
এক গ্রামবাসী রবিউল শেখ বলেন, ‘আজ হঠাৎ লোকজনের মুখে শুনি, কিছু লোক আমার জমি দখল করতে এসেছে৷ আমি গিয়ে দেখি, প্রায় দেড়শো মানুষ পুলিশ নিয়ে আমার জমি দখল করার চেষ্টা করছে৷ আমরা ৪০ বছর ধরে ওই জমি ভোগদখল করছি৷ ওটা আমাদের রায়তি সম্পত্তি৷ ২০২২ সালে ওরা হঠাৎ করে আমার জমি ওদের নামে রেকর্ড করে নেয়৷ আমরা পুলিশের দ্বারস্থ হই৷ পুলিশ আমাদের মামলা করতে বলে৷ আমরাও আদালতে মামলা করি৷ এরপরেও থানা আমাদের চাপ দিচ্ছে, বাকি জমি ওদের মাপতে দিতে হবে৷ কিন্তু যে জমি মাপতে দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে, তার উপর মামলা চলছে৷
পুলিশ আমার বাড়িতে এসেও একথা বলে গিয়েছে৷ আজ হঠাৎ ওরা পুলিশ নিয়ে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমার জমি দখল করার চেষ্টা করে৷ গ্রামের লোকজন ওদের বাধা দেয়৷ বাধা পেয়ে ওরা পালিয়ে যায়৷ আমার জমি দখল করার কোনও এক্তিয়ার ওদের নেই৷’
এদিকে অভিযুক্ত নিতাই মণ্ডল জানান, ‘এটা সম্পূর্ণ মিথ্যে অভিযোগ৷ ওই জমির মূল মালিক হচ্ছেন ফণীন্দ্রনারায়ণ সুকুল৷ তিনি কাউকে ওই জমি রেজিস্ট্রি কিংবা পাওয়ার অফ অ্যাটর্নি করে যাননি৷ তিনি পাওয়ার দিয়েছিলেন প্রভাতকুমার রায়কে৷ যারা আজ ঝামেলা করল তাদের সঙ্গে আগে থানাতে বসা হয়েছিল৷ প্রশাসনের সামনে প্রমাণ হয়ে গিয়েছে, ওদের কাগজপত্র সঠিক নয়৷ ওরা আসল মালিকের কাছ থেকে জমি কেনেনি৷ ওরা অন্য একজনের কাছ থেকে জমি কিনেছে৷ তাই ওদের দাবি ভুল৷
জমির কাগজপত্র ও রেকর্ড অন্যদের নামে রয়েছে৷ জমি মাপতে গেলে ওরা আমাদের মারধর করছে৷ প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে৷ প্রশাসনকে আমি সবকিছু জানিয়েছিলাম৷ তাই আজ পুলিশ ওখানে গিয়েছিল৷ আমিনও গিয়েছিল৷ পুলিশের সামনেই ওরা আমাদের মারধর করেছে৷ আমাদের পাঁচজন আহত হয়েছে৷ তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে৷ দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক৷ ওরা আমাদের সমস্ত চেয়ার ভাঙচুর করেছে৷ ত্রিপল তছনছ করে দিয়েছে৷ মোটরবাইক, টোটো ভেঙেছে৷ তবে প্রশাসনের উপর আমাদের আস্থা রয়েছে৷ আমার আশা, প্রশাসন সঠিকভাবে এর বিচার করবে৷’