অবতক খবর,১১ সেপ্টেম্বর,জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়ি হয়ে চিনে পাচারের ছক।সুদৃশ্য ক্রিস্টালের তিন জার বন্দি কোবরা সাপের বিষ সহ গ্রেপ্তার পাচারকারী। বাজেয়াপ্ত বিষের বাজার মূল্য আনুমানিক ১৩ কোটি টাকা। ধৃত যুবকের নাম সলিন আখতার মন্ডল (৩২)। বাড়ি দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি সীমান্ত এলাকায় বলে খবর।

বাংলাদেশ থেকে এই বিষ ভারতে ঢুকেছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান বন দফতরের।জলপাইগুড়িতে হাত বদলের সময় বমাল সমেত যুবককে গ্রেফতার করে গরুমারা বন্যপ্রাণী বিভাগের বন কর্মীরা।শুক্রবার ধৃত যুবককে জলপাইগুড়ি আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন জানায় বন দফতর। আদালত ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে বলে জলপাইগুড়ি আদালতে সহকারী সরকারি আইনজীবী সিন্ধু কুমার রায় জানিয়েছেন।

জলপাইগুড়িতে ২০১৫ সাল থেকে একের পর এক অভিযান চালিয়ে প্রচুর পরিমানে সাপের উদ্ধার করে বৈকন্ঠপুর বন বিভাগের বেলাকোবা রেঞ্জ।পাচারের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগ প্রাথমিক স্কুল শিক্ষক থেকে নিয়ে আন্তর্জাতিক পাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত একাধিক পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করে বন দফতর। পরবর্তী কয়েক বছর বিষ পাচারের ঘটনা সামনে না এলেও পাচারকারী রা যে হাত গুটিয়ে বসে নেই এদিনের গরুমারা বন্যপ্রাণী বিভাগের অভিযান সে কথাই প্রমাণ করে।
এদিন সকালে গরুমারা বন্যপ্রানী বিভাগের কাছে খবর আসে জলপাইগুড়ি শহর সংলগ্ন ৭৩ মোড় এলাকায় কোবরা সাপের বিষ হাত বদল হবে। খবর পাওয়া মাত্র বন দফতরের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স অভিযানে নামে। খবরের সূত্র ধরে এক যুবককে বমাল সমেত গ্রেফতার করে।বন দফতর সূত্রে খবর, যারা এই বিষ পাত্র হাত বদল করে নিয়ে যেতে এসেছিলো, অভিযানের আঁচ পেয়ে পালিয়ে যায় তারা।তবে পাচারে ব্যবহৃত একটি বিএমডব্লিউ গাড়িকে চিহ্নিত করেছে বন দফতর। এই গাড়ি তে পালিয়ে যায় দুই পাচারকারী। তাদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে বন দফতর।
প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, হিলি সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশ থেকে এই বিষ ভারতে প্রবেশ করে। বিষ পাত্রের গায়ে লেখা রয়েছে ফ্রান্সের রেড ড্রাগন কোম্পানির নাম।
বন দফতরের এক আধিকারিক জানান, এর আগে যে কয়েকটি সাপের বিষের জার উদ্ধার হয়েছে সবকটার গায়ে রেড ড্রাগন কোম্পানির লেবেল সাটা ছিলো।পাচারকারীরা ফ্রান্স থেকে অবৈধ পথে বাংলাদেশে আনার পর ভুটান, নেপাল,চিনের মতো দেশে পাচারের জন্য জলপাইগুড়িকে করিডর হিসেবে ব্যবহার করছে।
ধৃত যুবকের কাছ থেকে তিন জার বন্দি বিষ ছাড়াও কোবরা সাপের ছবি সহ ক্যাটালগ উদ্ধার হয়েছে।শুক্রবার ধৃত পাচারকারী যুবককে জলপাইগুড়ি আদালতে হাজির করে তদন্তের স্বার্থে ১৪ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানায় বন দফতর। বিচারক ৬ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন বলে সহকারী সরকারি আইনজীবী সিন্ধু কুমার রায় জানিয়েছেন।
বন মন্ত্রী জ্যোতি প্রিয় মল্লিক জানান,বাজেযাপ্ত বিষের বাজার মূল্য আনুমানিক ১৩ কোটি টাকা। চিনে পাচারের উদ্দেশ্যে এই বিষ নিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো। এই পাচার চক্রের সঙ্গে আন্তর্জাতিক চক্র জড়িয়ে রয়েছে। ধৃত পাচারকারী যুবককে জিজ্ঞাসাবাদ করে চক্রের বাকিদের ধরতে অভিযান চলবে বলে বন মন্ত্রী জানিয়েছেন।