অবতক খবর,৭ আগস্ট,মলয় দে নদীয়া:- তাঁত মানেই শান্তিপুর, শুধু এ রাজ্যেই নয় ওপার বাংলা সহ সারাদেশে এমনকি বিদেশেও কিছু কিছু জায়গায় সমানভাবে সমাদৃত শান্তিপুরের তাঁত শাড়ি।
তবে কেনো, বিলুপ্তের পথে হস্ত চালিত তাঁত?
তলানিতে তাঁত শ্রমিকরা! একসময় তাঁতের শব্দে সকাল হওয়া শান্তিপুরের তাঁত শিল্পীরা এখন সংসার চালাতে রাজ্যের বাইরে পাড়ি দিচ্ছেন বিভিন্ন পেশায়!
আজ সারা দেশ জুড়ে পালন করা হলো দশম জাতীয় হস্ত চালিত তাঁত শিল্প দিবস। কিন্তু সেই তাঁত শিল্পের আজ রুগ্ন দশা, তাঁতিদের অবস্থা করুন,এ বিষয়ে নানান আলোচনার ব্যাবস্থা করেন শান্তিপুরের হস্ত চালিত তাঁত শিল্পীদের নিয়ে গড়ে তোলা সংগঠন শান্তিপুর লাইফ লাইন হ্যান্ডলুম উইভার ওয়েলফেয়ার সোসাইটি। উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক ব্রজ কিশোর গোস্বামী উৎকর্ষ বাংলা ডিস্ট্রিক্ট প্রজেক্ট ম্যানেজার, বি এল এস শান্তিপুর হ্যান্ডলুম অফিসার ২১ এবং ২২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সহ আজ থেকে শুরু হওয়া উৎকর্ষ বাংলার নতুন ৭৫ জন মহিলা।
কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন। বিজ্ঞানের আধুনিক প্রযুক্তি সাথে তাদের লড়াই নয়, স্বল্প সংখ্যক হলেও শিল্পের মর্যাদা দেওয়া আর্থিক সচ্ছল বেশকিছু ক্রেতা আছেন যাদের সাথে তাঁতির সমন্বয়ে ঘটে না, অন্যদিকে তাঁতিদের পরামর্শ অনুযায়ী তাদের প্রয়োজন মাফিক বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয় না সরকারি পক্ষে, তার ওপর প্রকৃত তাঁতির বদলে মধ্যস্থতা করা বিভিন্ন বিভাগীয় কর্মকর্তাদের নিষ্ক্রিয়তা এবং অজ্ঞতার ফলে অন্য পেশায় যুক্ত থেকেও সে সুযোগ নিয়ে বঞ্চিত করে থাকে মূল তাঁত শিল্পীকে।
সরকারের বহুল ব্যবহৃত স্কুল কলেজ স্বাস্থ্য বিভাগ এবং পুলিশ প্রশাসনের জামাকাপড় এবং অন্যান্য বিষয়ে ব্যবহৃত বস্ত্র উৎপাদন হচ্ছে পাওয়ারলুমে অথবা উন্নত রেপিয়ার মেশিনে, আর হস্ত চালিত তাঁত বিপন্ন বলে কান্নাকাটির কোনো মানে হয় না।
তবে প্রকৃত তাঁতি অন্বেষণে, কোথাও যে একটা ফাক রয়ে গেছে তা স্বীকার করেন কর্তৃপক্ষ। সমবায়ের মাধ্যমে প্রকৃত তাঁতিদের উৎপাদিত কাপড় বিপণনের ব্যবস্থা আরো জোরদার হলে, তাঁতী তার প্রকৃত মজুরি পেলে এখনো বাঁচানো সম্ভব এই রুগ্ন শিল্পকে। যদিও তিনি বলেন দুই সরকারই বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প রূপায়ণ করেছেন তবে তা আরো প্রয়োজন।
অন্যান্য তাঁতিরা জানাচ্ছেন, সুতোর দাম বাড়লেও সেই অর্থে বাড়েনি তাঁতিদের মজুরি। তাই একসময় তাঁত বোনের সংসার চালানো সম্ভব হলেও এখন তা কোনভাবেই সম্ভব নয়। অন্যদিকে ব্যবসায়ী সংগঠনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারা, সরকারের সাথে আলোচনা ভিত্তিক ভেজাল সুতো রং এবং বুনন যন্ত্রের আমদানি রদ করা যেত তবে এইসবেরই বাড় বাড়ন্ত তাদের উদাসীনতায়।
শাড়ি তৈরি করার পর কিভাবে বিক্রি করব কিভাবে সে বিষয়ে আরো সচেষ্ট হতে হবে কেন্দ্র-রাজ্য উভয় সরকারকে । শিল্পীকে তার শুধুমাত্র শিল্প কর্ম করতেই দেওয়া উচিত। একটি বিশেষজ্ঞ দল তৈরি করা দরকার যারা শিল্পীর এই শিল্পকলা কে একটি ব্র্যান্ড দেবেন মার্কেটিং এবং নেটওয়ার্কিং এ সাহায্য করবে। এমন একটি ব্র্যান্ড তৈরি করতে হবে যেখানে মানুষ শুধুমাত্র শান্তিপুরের শাড়ি র এখনো প্রচুর পরিমাণে চাহিদা রয়েছে শুধু মাঝখানে যেই ফাঁক টুকু তৈরি হয়েছে সেই ফাঁক টুকুকে বিশেষজ্ঞ দ্বারা পূরণ করতে হবে।
তবে তাঁতিদের সাফ কথা রেপিয়ার মেশিনে সারাদিনে চার-পাঁচটি কাপড় হলেও হাতে দু তিন দিন লেগে যায় একটি ভাল শাড়ি গুনতে সেক্ষেত্রে কখনোই বাজারে মূল্য এক হতে পারে না আর এই কারণেই দরকার হ্যান্ডলুমের সাথে যুক্ত তাঁতি এবং ছোটখাটো ব্যবসায়ীদের নানান রকম সুযোগ যেটা তারা দিচ্ছেন হয়তো কিন্তু নিচু তলায় তা পৌঁছাতে সংখ্যা হয়ে যাচ্ছে দ্বিগুণ যারা অনেকেই তাঁতের সঙ্গে যুক্ত নয়।