অবতক খবর,৪ জুন: কাঁচরাপাড়ায় প্রায় প্রতিদিনই দেখা যাচ্ছে কিছু না কিছু নিয়ে গন্ডগোল। কখনো টোটো-অটোর মধ্যে বিশৃঙ্খলা,কখনো পাবলিক-টোটোর গন্ডগোল, আবার কখনো টোটো চালক নিজেদের মধ্যেই গন্ডগোল সৃষ্টি করছেন।
আগামীকাল জামাই ষষ্ঠী। ঠিক তার আগের দিনই শহরে ষষ্ঠী পুজো করে দেওয়া হল এক জামাইয়ের।
আজ কাঁচরাপাড়ায় যেভাবে কেনাকাটার মানুষের ভিড় দেখা গেছে, তার দ্বিগুণ ভিড় দেখা গেছে টোটোর। এই টোটোগুলিকে কবে যে নিয়ম-শৃঙ্খলায় বাঁধা হবে তা কেউ জানে না। কোন নেতৃত্বই এই টোটোর কোন সঠিক নিয়মে বেঁধে দিতে পারছে না। যার জেরে প্রায়শই অভিযোগ থেকে যাচ্ছে শহরবাসীর। শহরে এখন মানুষের চেয়ে বেশি টোটো হয়ে গেছে। আপনি শহর ঘুরলেই বুঝতে পারবেন যে কি পরিমাণ টোটো রাস্তায় চলছে। বিশেষ করে জোড়া মন্দির থেকে শুরু করে স্টেশন পর্যন্ত ভোটসংখ্যা এতটাই বৃদ্ধি পেয়েছে যে রীতিমতো বলা যেতে পারে টোটোর মিছিল হচ্ছে। যার জেরে সৃষ্টি হচ্ছে যানজটের। অর্থাৎ আপনি যদি কোন জরুরী পরিষেবা পেতে এই রাস্তা ধরেন তবে হতে পারে আপনার বড়সড় কোন অঘটন ঘটে যাবে। কোন অসুস্থ মানুষকে ভুল করেও এই রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাবেন না। তাহলে আপনার ভোগান্তির আর শেষ থাকবে না। যানবাহনের কথা তো ছেড়েই দিলাম, এখন এমন পরিস্থিতি এই শহরের যে, ফুটপাত দিয়েও হাঁটাচলা করা যায় না। কারণ অধিকাংশ ফুটপাতই দখল হয়ে গিয়েছে। যেটুকু অবশিষ্ট রয়েছে তাতে বেশিরভাগ সময়ে বিভিন্ন যানবাহন পার্কিং করা থাকে। কাঁচরাপাড়া শহরের একটি বড় সমস্যা হল পার্কিংয়ের সমস্যা। যার জেরে বাইরের বহু ক্রেতা এখানে যানবাহন নিয়ে আসার আগে দু’বার ভাবেন।
তবে আজ যে ঘটনাটি ঘটেছে তা টোটোর জন্য এবং এই কারণে শহর আজ কালিমালিপ্ত হলো। আজ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা নাগাদ গান্ধী মোড় সংলগ্ন অঞ্চলে দেখা যায় এক টোটো চালক এক দম্পতিকে বেধড়ক মারধর শুরু করে। প্রথমে মহিলাটিকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়া হয় পরবর্তীতে ওই টোটো চালক এবং আরও ৪-৫ জন যুবক ওই মহিলার স্বামীকে বেধড়ক মারধর করে রাজপথের উপরে। ভর সন্ধ্যায় এইরকম একটা পরিস্থিতির সাক্ষী রইল গোটা শহর। কিন্তু আরো অদ্ভুতভাবে এটা দেখা গেল যে, চার পাঁচজন যুবক মিলে একজনকে মারধর করছে অথচ নীরব দর্শক হয়ে সেই দৃশ্য দেখছেন চারপাশের লোকজন। গান্ধী মোড়ের মত একটি জনবহুল এলাকায় যেখানে জামাইষষ্ঠীর আগের দিন ভিড়ে ঠাসা সেখানে এই রকম পরিস্থিতিতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। কিছুদিন আগেই আমরা দেখেছি কাঁচরাপাড়া পৌরসভার চেয়ারম্যান কমল অধিকারী নিজে গাড়ি থেকে নেমে গান্ধী মোড়ের যানজট নিয়ন্ত্রণ করেছেন। কিন্তু পরিস্থিতি যে কে সেই। তার কিছুদিন আগেই দেখা গিয়েছিল স্টেশন সংলগ্ন অঞ্চলে টোটো-অটোর গন্ডগোল। পরবর্তীতে টোটো এবং অটোচালকদের মধ্যে বৈঠক হয়।টোটো চালকদের বলা হয় কাঁচরাপাড়া স্টেশনের দিকে যেন তারা কেউ না ঢোকেন, তাদের রুট ম্যাপ করে দেওয়া হয়। কিন্তু কে শোনে কার কথা! অদ্ভুত একটা পরিস্থিতি। কেউ শুনছে না কারোর কথা,যে যার ইচ্ছা খুশিমতো চলছে এই শহরে। তাহলে নেতৃত্বদের প্রয়োজন কি? তাদের ভূমিকাই বা কি? এইভাবে প্রতিদিন যদি মানুষ রাস্তায় চলাফেরা করতে গিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হয়,তাহলে তারা সেই অভিযোগ জানাবেন কোথায়? কার কাছে?
কাঁচরাপাড়া শহর একটি ব্যবসায়িক কেন্দ্র। আর এই রকম ঐতিহ্যপূর্ণ একটি ব্যবসায়ীক কেন্দ্রে যদি প্রায়শই এইরকম গন্ডগোলের সৃষ্টি হয় তাহলে বাইরের ক্রেতারা তো এমনিই আসা বন্ধ করে দেবেন। এই ঘটনার পর কি বার্তা যাবে তাদের কাছে? এই ঘটনার জেরে ব্যবসায়ীরা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ। তারা বলছেন,করোনাকাল এবং লকডাউনে এমনিতেই ব্যবসা শেষ হয়ে গেছে। তার উপর যদি প্রায় দিন এইরকম ঘটনা শহরের প্রাণকেন্দ্রে ঘটতে থাকে তবে বাইরের ক্রেতারা তো এমনি এই শহরে এসে কেনাবেচা করা বন্ধ করে দেবেন।
অন্যদিকে যুবকটিকে মারধর করে রক্তাক্ত করে দেওয়া হয়েছে। যুবকটি গুরুতর আহত অবস্থায় কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালে ভর্তি।
ব্যবসায়ীরা অনুরোধ করছেন বিধায়ক ও চেয়ারম্যান কাছথেকে বিষয় দেখার জন্য।