বাঙালি জাতির মেরুদণ্ড ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর। সময়ের থেকে এগিয়ে থাকা বহুমুখী প্রতিভার মানুষ। প্রতিষ্ঠানের পরোয়া করেন নি। একক এক পদাভিক। তাঁর জন্মের দুশো বছর পূর্তি হলো ২৬ সেপ্টেম্বর’২০।

তাঁহার কথা
তমাল সাহা

প্রমার উজ্জ্বল বৈভব নিয়ে
নক্ষত্রের মতো বর্ণগুলি ফুটে ওঠে
বইয়ের পাতায়…
তখন তোমাকে মনে পড়ে

আমাদের এতো কথা-শব্দ
গান হয়ে ওঠে তোমার জন‍্যই
আমাদের ভালোবাসা বিমূর্ত হয়ে ওঠে উচ্চারণে তোমার জন‍্যই
আমাদের সংগ্রাম প্রতিবাদ
গর্জন হয়ে ওঠে তোমার জন‍্যই।
তাই তোমাকে এতো মনে পড়ে—
বাংলা বর্ণমালার বিন‍্যাসে
তুমি এক বর্ণময় কারিগর

জীবনের শুরুতেই তুমি পাথরে
খুঁজে পেয়েছিলে প্রাণ।
মাইলস্টোন দেখে তোমার শতকিয়া শেখা—
কে ভাবতে পারে পাথরই
জীবনের প্রাথমিক পাঠ!
স্মৃতিতে জেগে ওঠে প্রস্তরযুগ—
আমাদের ঐতিহ্যের ইতিহাস

হৃদয়ে আশ্চর্যতম ফুল ফোটে
দয়ার উষ্ণতায়
তার থেকে জন্মায় পবিত্র বোধি —সামাজিক দায়।
নারীচেতনা জাগরণে উন্মুক্ত করে দিয়েছিলে নতুন অধ্যায়।
নারীকে এতো ভালোবাসো তুমি!

বাল‍্যবিবাহ রোধ হলে
বিধবাবিবাহ, নারীশিক্ষা বিস্তীর্ণ হলে
সমাজ চলে যাবে প্রগতির পথে–
নারীরাই তো অর্ধেক আকাশ
অনেকের আগেই জানিয়েছিলে তুমি

জনজাতি আদিবাসী নিয়ে
এখন আমাদের বড় বড় কথা!
কার্মাটারে সাঁওতালদের সঙ্গে তোমার জীবনচর্চায় তুমি আমাদের পূর্বপুরুষ
হয়ে পতাকা ওড়াও

তুমি বললে সারকথা—
মাটিতে মাটির মানুষের অন্ন জোটে না
ধর্মের নামে বিভেদের অসিচালনা
কোথায় ঈশ্বর! আকাশের দিকে
অসহায়ের করুণ প্রার্থনা।
পূজারী- মৌলবী সবই ধর্মপাষণ্ড
সবই ফন্দিফিকির কামাইয়ের কাণ্ড

একটি চটি অসামান্য হয়ে দাঁড়ায়
একটি সাধারণ ধুতি-চাদর কিভাবে অসাধারণ হয়ে ওঠে
সম্পূর্ণ বাঙালি আভিজাত্যে
সাহসে পৌরুষে
তোমাকে না দেখলে কি বোঝা যায়!