সুজিত গৌড় :: অবতক খবর :: হুগলি :: লকডাউনে লন্ড-ভন্ড করে দিয়েছে মানুষের জীবনের সূচিপত্র। করোনার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে গোটা বিশ্ব। কাজের সমস্য দেখা দিচ্ছি সর্বত্র। ৪১ বছর ধরে কাঁচি,ছুরি,কাটারি, বটি, ধার দিয়ে সংসার চালাতেন হুগলি জেলার শেওড়াফুলির শিবতলার বাসিন্দা সত্যরঞ্জন বসু। লকডাউন চলাকালিন সংসার চালাতে হিমসিম খেতে হচ্ছে তাকে। দুই ছেলে স্ত্রীকে নিয়ে চার জনের পরিবার।৪১ বছর ধরে গ্যান্ডনিং যন্ত্র সাহায্যে ব্যবসা করে দিব্য চলছিল সংসার। লকডাউনে ব্যবসার অবস্থা খুব খারাপ হওয়ায় দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে। হুগলি জেলার বিভিন্ন জায়গায় এবং চব্বিশ পরগনার ইছাপুর, ব্যরাকপুর সহ নানা জায়গায় সাইকেল চালিয়ে গিয়ে গ্যান্ডনিং মেশিন দিয়ে বটি ,কাটারি,ছুঁরি, কাচি সহ নানা রখম লোহার জিনিষে ধার দিতেন। লকডাউনের ফলে যাওয়া হচ্ছে না সেই সব জায়গায়। হুগলি জেলার বিভিন্ন এলাকায় তাঁকে ধার কাকু নামেই সবাই চেনেন।
সকাল ৯ টায় বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়েন। ব্যাগে মধ্যে জলের বোতল আর টিফিন বাকসো নিয়ে যাত্রা শুরু হয়। ঠিক দুপুর ৩ টের মধ্যে বাড়ির পথে রওনা দেওয়া ছিল তার প্রতিদিনের রুটিন। এখন সব বদলে গেছে। করোনার পরিস্থিতিতে বেলা করে কাজে বেড়িয়ে লাভ হচ্ছে না। কারন করোনা জন্য সবাই একই কথা বলছেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হোক তখন আসবেন। লকডাউনের আগে প্রত্যেকদিন কাঁচি, বটি, কাটারি ও অনান্য জিনিষ মিলেয়ে প্রায়য় ৫০ থেকে ৭০ টা মত ধার দিতেন, এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৭ থেকে ১০ এর মধ্যে। ছ”ঘন্টা কাজ করেও সংসার চালানোর মত টাকা রোজগার হচ্ছে না। অন্য ব্যবসা যে করবে বয়স বাঁধা হয়ে দাঁড়িছে।
সত্যরঞ্জন বসু জানালেন, এই লকডাউনের বাজারে কাজ নেই বললেই চলে। আগে যে টাকা রোজগার ছিল এখন অনেকটাই কমে গেছে। সামনে আবার বর্ষাকাল আসছে চিন্তা আরো বাড়ছে। যা টাকা পয়সা জমিয়ে ছিলাম তা এখন শেষের পথে। এই বয়সে কি ব্যবসা করবো বুঝে উঠতে পারছি না। যদি ছেলেরা কিছু ব্যবসা করে সেখানে থাকা ছাড়া আর কিছু করার নেই। আগে রাস্তা দিয়ে যাবার সময় একবার বলতাম ‘ছুরি,কাটারি,বটি ধার দেবেন নাকি’ সবাই ডেকে বলতেন এটা করে দিন ওটা করে দিন কিন্তু এখন সেটা কুড়িবার বলেও কাজ হচ্ছে না । লকডাউনের সময় খুব আর্থিক সমস্যায় পড়ে গেছি। কবে আগের মত স্বাভাবিক পরিস্থিতি হবে তার দিকে তাকিয়েই দিন কাটাতে হচ্ছে ।