অবতক খবর,১৯ এপ্রিল: বীজপুরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের এখন মূল কাজ হল অন্য দলে ভাঙন ধরানো। বিজেপি ভাঙন ধরাচ্ছে তৃণমূলে। অন্যদিকে তৃণমূল ভাঙন ধরাচ্ছে বিজেপিতে। এই দুই দলের সেই কাজ এখনো শেষ হয়নি। ২২শে এপ্রিল ৬ষ্ঠ দফায় নির্বাচন বীজপুর বিধানসভা কেন্দ্রে।

আজ বীজপুরের বিজেপি প্রার্থী শুভ্রাংশু রায়ের প্রচারে আসেন বিতর্কিত বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। উক্ত প্রচারে উপস্থিত ছিলেন ব্যারাকপুর সাংসদ অর্জুন সিং। আজ তাদের উপস্থিতিতে বোঝা গেল যে ভাঙন প্রক্রিয়া অব্যাহত। আজ দেখা গেল কাঁচরাপাড়া বিবেকানন্দ মার্কেটের বেশ কিছু ব্যবসায়ী তাদের হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দিলেন। এর পাশাপাশি এও জানা গেছে যে, কিছু তৃণমূল কর্মীরাও যোগদান করেছেন বিজেপিতে। আজ যারা বিজেপিতে যোগ দিলেন তারা এক সময়ে কাঁচরাপাড়ার তৃণমূল যুব নেতা রাজা সরকারের অত্যন্ত কাছের মানুষ ছিলেন।

কিন্তু উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো,এখন রাজা সরকারকে আর আগের মত সক্রিয় ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে না। বলতে গেলে,এখন আর চোখে পড়ছেন না তিনি। নির্বাচনের প্রচার, মিছিল,সভায় কোথাও দেখা মিলছে না তাঁর। আর সেই কারণেই তাঁকে নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, তিনি এইরকমভাবে গুটিয়ে নিলেন কেন নিজেকে?

এই বিষয়টি নিয়ে আমরা যোগাযোগ করি রাজা সরকারের সঙ্গে। তিনি বলেন, তাঁর পিতা অত্যন্ত অসুস্থ। তাই তিনি এখন পুরো সময় নিজের পিতার শুশ্রূষা করছেন।

তবে আজকের ঘটনার পর গুঞ্জন শুরু হয়েছে যে, রাজা সরকারের এত কাছের মানুষ তাঁকে ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিলেন,এর পেছনে রহস্য কি?


অন্যদিকে আজ দেখা গেল, যারা বিজেপির পুরনো কর্মী এবং যারা দলে থেকেও সেই অর্থে কাজ করতে পারছিলেন না, মান-সম্মান পাচ্ছিলেন না, তারা আজ যুব নেতা কমল অধিকারী এবং কাঁচরাপাড়ার তৃণমূল নেতা দিলীপ ঘোষের হাত ধরে তৃণমূলে যোগদান করলেন।

এর কারণ স্বরূপ তারা জানান, বিজেপিতে তারা কোণঠাসা হয়ে পড়েছিলেন। এদিকে তৃণমূলের যাবতীয় পরিষেবা অর্থাৎ স্বাস্থ্যসাথী,খাদ্যসাথী,সবুজসাথী, ছাত্র-ছাত্রীদের ট্যাব কেনার অর্থ বা করোনা মহামারীতে সহায়তা, এই সবকিছুই তারা তৃণমূলের মাধ্যমে পেয়েছেন। তাই তারা আজ বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান এর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বিশেষ করে মহিলা কর্মীরা আজ বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করেন।
তারা বলেন, “তৃণমূলের দ্বারা আমরা অনেক উপকৃত হয়েছি। তাই আমরা আর দিদির সাথে বেইমানি করতে পারি না। এর পাশাপাশি সুবোধ বাবুও অসময়ে আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। তাই আমরা আজ বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করলাম।”

কিন্তু আজকের এই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে এবং তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে, এই যে যোগদান পর্ব,এইসব দেখে মানুষ প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন যে এই দুই দলের মধ্যেই এই সমস্ত ঘটনা ঘটছে কেন? এই সমস্ত ঘটনা তো সিপিএম দলে দেখা যাচ্ছে না!
এ প্রসঙ্গে কয়েকজন সিপিএম নেতার সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, “আমরা এইভাবে যোগদান করাই না। দুম করে যেকোন দল থেকে কেউ চলে এলো,আর আমরা তাদের নিয়ে নিলাম, তা হয় না। দলের কিছু নিয়মকানুন আছে। দলে যোগদান করতে হলে তা প্রথমে অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে, তারপরেই কোন ব্যক্তি দলে যোগদান করতে পারবেন। ”