অবতক খবর: নদীয়া::নদীয়া জেলার কৃষ্ণনগর ২ নং ব্লকের ধুবুলিয়ার তাতলা আদিবাসী পাড়ার ছোট্ট শিশু রঞ্জন পাহাড়িয়া। বয়স ১২ । ছোটবেলা থেকেই সে থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত। প্রতি মাসে ২ বার রক্ত দিতে হয় রঞ্জনের । বাবা মার একমাত্র ছেলে রঞ্জন । বাবা ভিন রাজ্যে শ্রমিকের কাজ করেন, আর মায়ের কাজেই চলে সংসার ।
রঞ্জন এর পড়াশোনা, ছবি আঁকার বেশির ভাগ সহযোগিতা করে ধুবুলিয়ার একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্মাইল ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন ।
গত কয়েকদিন ধরে রঞ্জন অসুস্থ অবস্থায় ভর্তি ছিল নদীয়া জেলার শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে। ব্লাড ব্যাংকও রক্ত শূন্য তাই একমাত্র উপায় হয় একজন B+ এর সরাসরি রক্ত দাতার । কিন্তু রক্ত না পেয়ে গতকাল বাড়ি ফিরে অাসে রঞ্জন ও তার তার মা । খবর যায় স্মাইল ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন এর কর্ণধার লক্ষণ বাবুর কাছে, সমস্ত বিষয় শোনেন ও সঙ্গে সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের ফেসবুক পেজে রঞ্জনের রক্তের জন্য আহ্বান জানানো হয় ।
এ প্রসঙ্গে লক্ষণ ব্রম্য বলেন ” যানবাহনের সমস্যা থাকায় কারো পক্ষে কৃষ্ণনগর পৌঁছনো সম্ভব ছিলনা আর করোনার আতঙ্কে অনেকেই হাসপাতাল যেতে রাজি ছিলেন না। আমরাও হন্যে হয়ে রক্ত দাতা খুঁজে হতাশ হয়ে ফিরছিলাম ঠিক এসময়ে ফোন করেন আমাদেরই স্মাইল পরিবারের সদস্যা ফিজা খাতুন তাঁর রক্তের গ্রুপ B+ আর তিনি একজন শিক্ষিকা” ।
শিক্ষিকা ফিজা খাতুন নিজ দায়িত্বে অাজ হাসপাতাল পৌঁছে যান । আজ সকাল ১০ টায় ফিজা খাতুন ও রঞ্জন পাহাড়িয়া রক্তের সম্পর্কে আবদ্ধ হলো । জন্ম আর মৃত্যুর কাছে জাত , ধর্ম , অর্থ ,ক্ষমতা সবই বড্ড তুচ্ছ । মনুষ্যত্বের ওপরে বড় কোনো ধর্ম নেই ।
সকালে জেলা হাসপাতালে রঞ্জন কে ভর্তি করতে নিয়ে যাওয়া স্মাইল ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন এর সম্পাদক পলাশ বিশ্বাস বলেন” সেবাই পরম ধর্ম । সংগঠনের পক্ষ থেকে রক্ত জোগাড় করে দিতে পেরে আমরা খুব খুশি”।
এ প্রসঙ্গে ফিজা খাতুন বলেন -” এটা তেমন কিছু নয়, একজন নাগরিক হিসাবে আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি”।