অবতক খবর , শিব শংকর , বালুরঘাট :- দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ইতিহাসের আকর। এখানে যেমন রয়েছে বৌদ্ধ তন্ত্রের নিদর্শন ,রয়েছে মহাভারতের নিদর্শন, তেমনি রয়েছে শাক্ত তন্ত্র সাধনার নিদর্শনও।
তেমনি ঘোর শাক্ত তন্ত্রসাধনার একটি নিদর্শন হল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার তপন ব্লকের ভিকাহার এলাকার মন্দিরবাসিনি কালি মা। জানা যায় প্রায় ৬০০ বছরেরও বেশী পুরনো এই কালিমা স্থাপন করেছিলেন একজন তান্ত্রিক।লোকশ্রুতি যে ওই তান্ত্রিক মা কালীর স্বপ্নাদেশ পেয়ে তার কিশোরী কন্যাকে জ্যান্ত কবর দেন ও তার ওপরে তৈরি করেন মা কালীর স্থান।
এই মা কালী হলেন অসূর্যস্পর্শা। মন্দিরেই বাস এই দেবীর সেই কারনে এই দেবীকে মন্দিরবাসিনীদেবী নামে ডাকা হয়। প্রতিবছর কালীপুজোর দিন সূর্যাস্তের পরে মা কালীর মূর্তি তৈরি করার সাথে সাথে ,চক্ষুদান সহ এক রাতের মধ্যেই মায়ের মুর্তি তৈরী সহ পুজো সম্পন্ন করা হয় এবং সূর্যোদয়ের আগেই মাকে বিসর্জন দেওয়া হয়ে থাকে। শাক্তমতে পূজিত হন এই মা তাই এই মায়ের সামনে বলি দেওয়ার প্রচলন রয়েছে। জানা যায় দিনাজপুরের জমিদার ওই তান্ত্রিক এর পুজো করা স্থানের ওপর মন্দিরটি প্রায় ৬০০ বছর আগে তৈরি করেছিলেন।
তারপরে প্রায় ৬০০ বছর পেরিয়ে যাওয়ার কারণে মন্দিরটি এখন প্রায় ভগ্নাবশেষ অবস্থায় রয়েছে।এই মায়ের সামনে মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ বলে জানা যায় প্রায় মায়ের পুজো থেকে শুরু করে সমস্ত পূজার কাজকর্ম ছেলেরাই করে থাকে। এই কালী মা অসূর্যস্পর্শা তাই বর্তমান ডিজিটাল যুগে ফটোগ্রাফির প্রচলন থাকলেও এই মায়ের ছবি তুলতে দেওয়া হয় না।কারণ স্থানীয় মানুষের বিশ্বাস ওই ফটোগ্রাফ সূর্যের আলো দেখলে তা ঘোর বিপদের সম্মুখীন করবে গোটা গ্রামকে । সেই কারণেই ওই দেবীর ছবি তুলতে দেওয়া হয় না। সেই প্রাচীনকাল থেকে এই পুজোর নিয়ম কানুনে কোন পরিবর্তন হয়নি বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।