অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কে নাম না করে কটাক্ষ, বললেন , “প্যারাসুটের নামেনি, লিফটেও উঠেনি, সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে উঠেছি” ।
বিনয় ভরদ্বাজ, অবতক খবর, 31সে অক্টোবর :: দাদার গেরুয়া প্রেম নিয়ে আজ সারাদিন উত্তাল থাকল রাজ্য রাজনীতি। তিনি রাজ্যের মন্ত্রী , গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী । তবে গত তিন চার মাস ধরে কোন সরকারি অনুষ্ঠানে বা বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন না ।সভা মিছিল মিটিং করছেন প্রতিদিনই তিনি। তার অনুগামীদের কাছে ‘দাদা’ বলেই পরিচিত। তবে এই দাদার এখন তৃণমূলের সঙ্গে দূরত্ব দিন দিন বেড়ে চলেছে । এই দাদা আর কেউ নন নন্দীগ্রাম আন্দোলনের মূল কান্ডারী ও রাজ্যের পরিবহন ও সেচ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী।
নন্দীগ্রাম বিজয়া সম্মিলনী মঞ্চে অংশগ্রহণ করলেও তার আমন্ত্রণপত্র থেকে শুরু করে মঞ্চ ব্যবস্থাপনা ডেকোরেশন কোনটাই তৃণমূলের নামগন্ধও ছিল না। শুধু তৃণমূলের নাম গ্রন্থ নয় মঞ্চে ছিল না তাঁর প্রিয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোন কাটাউট বা কোন ছোঁযা। শুধু এখানেই শেষ নয় বিজয়া সম্মিলনী মঞ্চেছিল গেরুয়ায় ঢাকা । তাকে বরণ করতে যারা প্রস্তুত ছিলেন তারাও পড়ন ছিলন গেরুয়া বস্ত্র।
তাই প্রশ্ন যে শুভেন্দুর এতদিন সবুজ, নীল-সাদা হাত ধরে সমস্ত কর্মসূচি পালন করেছেন হঠাৎ তার গেরুয়া প্রেম এতটা জেগে উঠলো কোন কারণে ? তাই জনগণের প্রশ্ন স্বাভাবিক। তিনি কি তাহলে গেরুয়া শিবিরের নাম লেখাতে চলেছেন ? তার কি নীল-সাদা থেকে মন ভরে গেছে ? নাকি মোহভঙ্গ হয়েছে তার দল ও তার দল নেত্রী থেকে ?
প্রশ্নটা স্বাভাবিক হলেও তিনি কোনো প্রশ্নেরই উত্তর দেননি। তবে শুভেন্দু বাবু উত্তর না দিলেও নন্দীগ্রামের জেলা সাংগঠনিক বিজেপির সভাপতি পরিষ্কার করে জানান মোহভঙ্গ হয়েছে শুভেন্দু বাবুর। দিল্লির এক প্রবীণ বিজেপি নেতা দাবি 20শে নভেম্বরের মধ্যেই যে কোনদিন বিজেপি তে যোগ দিতে পারেন শুভেন্দু বাবু তিনি প্রতিনিয়ত দিল্লি গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন।
তবে শুভেন্দু অধিকারী এই প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি বরং এই মঞ্চে কে অরাজনৈতিক মঞ্চ বলে এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে ভিড়ে ঠাসা জনতার কাছে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন ছুড়ে দেন শুভেন্দু অধিকারী। বলেন 2004 এর শুভেন্দু আর 2014 শুভেন্দু তে কোন ফারাক দেখছেন কি আপনারা ভিড় থেকে আওয়াজ ওঠে না শুভেন্দু আবার বলেন 2009 এ শুভেন্দু আর 2019 এর শুভেন্দুর মধ্যে কোন ফারাক দেখতে পেয়েছেন আপনারা ভীড থেকে ফের জনতা চিৎকার করে জানায় না।
শুভেন্দু অধিকারী ফের এবার বলেন 2011 শুভেন্দু আর 2021 এ শুভেন্দুতে কোনো ফারাক দেখা যাবে না। তিনি এই তিনি এই মঞ্চ থেকে তার রাজনৈতিক জীবনের ছাত্র জীবন থেকে এই পর্যন্ত সমস্ত ইতিহাস বিস্তারে তুলে ধরেন। হাজার 985 এতে ছাত্রজীবনে ছাত্র আন্দোলন থেকে শুরু করে কাউন্সিলর এবং এমএলএ সাংসদ এবং মন্ত্রী সপ্তাহ লড়াইয়ের ফল বলে তিনি জানান।
তিনি নাম না করে তৃণমূলের যুবরাজ সাংসদ গো যুব সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কে কটাক্ষ করে বলেন আমি প্যারাসুটে নামেনি, লিফটে উঠেনি। সিঁড়ি ভাঙতে ভাঙতে উঠেছি।
শুভেন্দু অধিকারী জানান সেবা করার জন্য কোন পদের প্রয়োজন হয় না তাই আমাকে বুঝিয়ে লাভ নেই। তিনি বলেন জানেন কেন বিয়ে করিনি কারণ বিয়ে করলেই পিছুটান থাকে। বিজয়া সম্মিলনী মঞ্চ থেকে বহু কথা বললেও একবারের জন্য তার প্রিয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তৃণমূলের নাম ঠোঁটে আনেন নি।
শুভেন্দু অধিকারী এই কড়া মন্তব্য ও গেরুয়া প্রেম দেখে রাজ্য রাজনীতিতে তুমুল আলোচনা শুরু হয়েছে। রাজনৈতিক পণ্ডিতরা বলছেন শুভেন্দু যা বলার পরিষ্কার করে ইশারায় বলে দিয়েছেন। এর বেশি আর কি বলবেন। রাজ্যবাসী জানেন তৃণমূলে শুভেন্দু অধিকারী একমাত্র নেতা যার নির্বাচনে জেতার জন্য মমতার নামের প্রয়োজন হয়না। তিনি নিজস্ব আলাদা সমর্থক তৈরি করেছেন। তাই শুভেন্দু অধিকারী আজকের এই বার্তা অনেকটাই গুরুত্বপূর্ণ । এইবার তিনি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করেন তার দিকেই তাকিয়ে রাজ্যবাসী।