অবতক খবর,৬ জুন: অতি দারিদ্র্যতার মধ্যে চলছে জোড় কদমে পড়াশোনা। থেমে থাকেনি অভাবের টানে পড়াশুনা। তাই সব রকম বাধা বিপত্তিকে হার মানিয়ে মাধ্যমিকে সর্বোচ্চ নাম্বার পেলো নদিয়া হরিণঘাটা ব্লকের কৃতী ছাত্রী নগরউখড়া ক্ষেত্রমোহন বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী অভিনন্দা দেবনাথ।
তার প্রাপ্ত নম্বর 675 এবং পাশাপাশি কোন অংশের কম যায় না তার জ্যাঠতুতো ভাইয়া। সেও নগরউখড়া বয়েজ হাই স্কুলের ছাত্র।তার প্রাপ্ত নম্বর 662 নাম অঙ্কিত দেবনাথ।
পড়তে বসলে দুই ভাই-বোনের মধ্যে চলত এক প্রতিযোগিতার পালা। মাধ্যমিকের ফল প্রকাশিত হওয়ার পর দেখা গেল বোন পেয়েছে 675 এবং ভাই পেয়েছে 662। প্রায় 96 শতাংশ নম্বর পেয়েছে অভিনন্দা দেবনাথ।পাশাপাশি তার ভাইয়ের প্রাপ্ত নম্বর 94%। দুজনে পাশাপাশি বাড়িতে থাকতো। অভিনন্দননের বাবা বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ব্লাউজের ফেরি করে এবং তার ফলে অতি কষ্টের সংসার চলত তাদের। যদিও সব বাধা-বিপত্তিকে হার মানিয়ে মাধ্যমিকে সর্বোচ্চ নাম্বার পেয়ে বাবা-মার মুখ উজ্জ্বল করল অভিনন্দা দেবনাথ।
আর অঙ্কিতের বাবা নগরউখড়া বয়েজ হাই স্কুলের শিক্ষক। অঙ্কিত বড় হয়ে ডাক্তার হতে চায়। তবে তার বোন ইউপিএসসি নিয়ে পড়ে সিভিল সার্ভিসে যুক্ত হতে চায়। ছাত্র নিজের স্কুলের উচ্চ মাধ্যমিকের বিজ্ঞান বিভাগের ভর্তি হতে চলেছে। বাড়িতে গৃহশিক্ষকের কাছে পড়ত এবং বাইরে নিজে চার ঘন্টার বেশি পড়াশোনা করত না। পাশাপাশি প্রিয় বিষয় ছিল পদার্থবিজ্ঞা। গল্পের বই আবৃত্তি শোনা এবং মোবাইলের সাফিং করাটাও তার নেশা। দুই ভাই বোনের সাফল্যে গর্বিত পরিবারের সদস্যরা পাশাপাশি হরিণঘাটা ব্লকের নগরউখড়া এলাকার প্রতিটি গ্রামবাসী থেকে শুরু করে স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকারাও খুব গর্বিত এবং আনন্দিত।
তাই দুই ভাই-বোনের সাফল্যের কথা যখন জানতে পারেন,
হরিণঘাটা ভূমিপুত্র তথা বর্তমানে তিনি নদীয়া জেলা পরিষদের পুত্র ও পরিবহন দপ্তরের কর্মদক্ষ চঞ্চল দেবনাথ তার বাড়িতে যান এবং তাদের পরিবারের সাথে দেখা করেন এবং দুই ভাই বোনের সাথে কথা বলেন এবং আগামী দিনে তাদের ভবিষ্যতে কি লক্ষ্য এবং কি পড়তে চায় তা নিয়েও অনেকক্ষণ কথা হয়। চঞ্চল বাবু এবং সর্বশেষে দুই ভাই বোনের হাতে তুলে দিলেন ফুলের বুফে ও মিষ্টির প্যাকেট এবং আগামী দিনে রাজ্য সরকার যেভাবে কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতি আরও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ-এর লক্ষে একাধিক প্রকল্প এনে দিয়েছে তারা যেন কোন অংশে উপরিভাগ আবেদন করলে পেতে অসুবিধা না হয় সেটাও জানান চঞ্চল বাবু। পাশাপাশি তিনি এটাও বলেন,কোনো রকম ভাবে আমার কাছে ব্যক্তিগতভাবে এরা যদি কোন সাহায্য চায় আমি সব রকম ভাবে এদের পাশে থাকব এবং চেষ্টা করব আগামী দিনে যেন এঁরা নিজস্ব লক্ষ্যে পৌঁছায়।