বিনয় ভরদ্বাজ, অবতক খবর ::  দিল্লি থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমন দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠছে দিল্লি পুলিশ , স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ ও দেশে প্রধান সুরক্ষা পরামর্শদাতা অজিত দোভাল এর বিরুদ্ধে। সাড়ে ৮ হাজারের বেশি মানুষ এক জায়গায় একত্রিত হয়ে লকডাউন এর মধ্যেই ধর্মীয় অনুষ্ঠান চালিয়ে গেছেন দিনের পর দিন সব জেনেশুনেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি দিল্লী পুলিশ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।

ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন এর প্রতিনিধিরা ২৮শে মার্চ মারকাজে পরিদর্শন করেন ও উপস্থিত ভিড়ে গুরুতর অসুস্থ ছয়জনকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে পাঠান। এই ৬ জন ই করোনা আক্রান্ত বলে জানা যায়। তারপর ঘুম ভেঙে দিল্লি পুলিশের ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর।

মারন করোনাভাইরাস এর আতঙ্কে কাঁপছে সারা বিশ্ব । লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে এই সংক্রমণ। এই সংক্রমণ রোধে দেশজুড়ে লক ডাউন ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মানুষ থেকে মানুষকে দূরে রাখতে বারেবারে প্রতিমুহূর্তে আহ্বান করা হচ্ছে। বাতিল করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সমস্ত ধর্মীয়-সামাজিক জমায়েত ও অনুষ্ঠান।

এমন সময় দিল্লি নিজামুদ্দিন এ মুসলিম ধর্মের মরকজএ ,ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন দেশের ২৩ টি রাজ্যের ও বিশ্বের ৬৭ দেশের প্রায় সাড়ে আট হাজার মানুষ। শুধু যোগদান দেওয়ার নয় দিনের পর দিন একসঙ্গে দিন রাত কাটিয়েছেন তারা । দিল্লি সরকারের নিৰ্দেশ অমান্য করে ও প্রধানমন্ত্রীর দেশজুড়ে লকডাউন এর নির্দেশকে সম্পূর্ণ উপেক্ষা করে আয়োজকরা এই অনুষ্ঠান চালিয়েছেন। এতেই আরও ভয়ানক ফল ভুগতে চলেছে সারাবিশ্ব সহ আমাদের দেশ ভারত বর্ষ।

দিল্লির নিজামুদ্দিনে “মরকজ” এ যোগদানকারী ৪০০ জন ইতি মধ্যে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। করোনার জেরে মৃত্যু হয়েছে এই ধর্মীয় সভায় যোগদানকারী ১৯ জনের। তাদের সম্পর্কে এসেছেন এমন ৯ হাজার মানুষকে করেন্টাইনে পাঠানো হয়েছে।হাজার হাজার অংশকারীদের খোঁজ শুরু করেছে বিভিন্য রাজ্য প্রশাসন। দিল্লি থেকে সারা দেশে করোনার সংক্রমণ ছড়িয়ে দেয়ার জন্য অভিযুক্ত করা হচ্ছে দিল্লি পুলিশ ও তার দায়িত্বে থাকা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহকে।

দিল্লি পুলিশ ও দিল্লি পুলিশের দায়িত্বে থাকা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের এই গাফিলতির জন্য সারা দেশকে বিশাল খেসারত দিতে হচ্ছে। অনুষ্ঠানস্থল থেকে দিল্লী নিজামুদ্দিন থানার দূরত্ব মাত্র ৫০ মিটারের কম এত বড় জমায়েতকে তারা কেন বাধা দিল না কোথায় ছিল ইনটেলিজেন্স কোথায় ছিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ যিনি  শাহীনবাগে ৩০ থেকে ৬০ জন মানুষকে উৎখাত করতে হাজার হাজার পুলিশ রাস্তায় নামিয়ে দিয়েছিলেন কিন্তু তার পুলিশ থানার সামনেই হাজার হাজার মানুষের জমায়েত জলসার জন্য কি করে অনুমতি দিয়েছিলেন তারা? এই প্রশ্ন এখন কোটি টাকার প্রশ্ন হয়ে উঠেছে।

হ্যাঁ অবশ্যই এ প্রশ্ন ওঠার কথা ।কারণ এই জমায়েত প্রধান মাওলানা মোহাম্মদ সাদ এর সঙ্গে অমিত শাহ ও প্রধানমন্ত্রী মোদির প্রিয় পাত্র দেশের প্রধান সুরক্ষা এডভাইজার অজিত দোভাল, ঘটনা সামনে আসার ২ সপ্তাহ পূর্বে বৈঠক করেন। এই বৈঠক চলে জমায়েত চলাকালীনই। তাই দেশবাসীদের প্রশ্ন এই বৈঠকে এমন কেমন কি আলোচনা হয়েছিল যে তারা দিল্লি সরকার কেজরিওয়াল সরকারের আদেশ কে ভায়োলেট করে দিনের পর দিন এই অবৈধ জামায়াত চালিয়ে গেছেন।

কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রীরা এখন পরিষ্কার করার চেষ্টা করছেন যে দোভাল নাকি সেই জামায়াতকে বাতিল করা বা তাকে বন্ধ করার আবেদন জানাতে নাকি তিনি ওই বৈঠক করেছিলেন ।তবে তাদের কথা যদি ঠিক হয়, তাহলে বৈঠক করার পর দুসপ্তাহ কি করে তারা চুপ করে বসে রইলেন। আর যদি তাদের কথা না শুনে থাকেন আয়োজকরা তাহলে তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর করলেন না কেন দোভাল ? কেন আইনি ব্যবস্থা নিলেননা তারা? কেন্দ্রীয় সরকার, ও দিল্লি পুলিশের দায়িত্বে থাকা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কেনইবা চুপ করে বসে রইলেন ? সংক্রমণ ছড়ানোর অপেক্ষায় নাকি অন্যরকম কোন মনসা ছিল? সমগ্র দেশবাসীকে তাদের এই প্রশ্নের উত্তর দিতেই হবে।