অবতক খবর,২২ অক্টোবর,রূপম রায়,নদীয়া: ভারতবর্ষ যখন পুরানো দিনের প্রযুক্তিকে বাদ দিয়ে নতুন নতুন সাফল্যের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। বিজ্ঞান কে কাজে লাগিয়ে একদিকে মহাকাশ যাত্রা অন্য দিকে গঙ্গা নদীর ভীতর দিয়ে মেট্রো রেল, আবার কোথাও ট্রেনের উন্নতি ঘটিয়ে বুলেট ট্রেন,তখন নদীয়ার চাপড়ার সীমান্তের বাসিন্দা ফিরোজ সেখ আস্থা রাখছেন পুরানো দিনের এক্কা গাড়ির ওপরেই। তবে আমরা যে এক্কা গাড়ি দেখে অভ্যস্ত সেই এক্কা গাড়ির সাথে ফিরোজ বাবুর এক্কা গাড়ীর পার্থক্য রয়েছে। তিনি অসুস্থ, পরিবারে স্ত্রী,পুত্র ও কন্যাকে নিয়ে সংসার। সংসারে তিনিই একমাত্র রোজগেরে ব্যাক্তি। সংসার চালাতে তিনি বেছে নিয়েছেন রাস্তাঘাটে বোতোল ও প্লাস্টিক কুরান। সারাদিন এই সব জিনিসপত্র গুছিয়ে বাজারে বিক্রি করে টাকা নিয়ে বাড়ি ফেরেন। প্রথমে এই কাজ করতে পারলেও এখন আর শরীরে পাড়েনা।পেট তো মানেনা,পেট বড় বালাই।
তাই তিনি বাধ্য হয়েই একটা ভাঙা ভ্যান রিক্সা কিনেছেন। কিন্তু ভ্যান চালানোর মত ক্ষমতা তিনি হারিয়ে ফেলেছেন। তাই তিনি নিজে বুদ্ধি খাটিয়ে নতুন এক্কা গাড়ী বানিয়ে তাক লাগিয়েছেন। হ্যাঁ, এক্কেবারে নতুন পদ্ধতির এক্কা গাড়ি। রিস্কার সাথে একটা বুড়ো ঘোড়াকে বেঁধে তিনি প্রতিদিন ৭০-৮০ কিমি পথ অতিক্রম করে কাজ করে যাচ্ছেন। তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান,বর্তমানে পেট্রলের যে দাম, আবার ব্যাটারী চালিত রিক্মার দাম প্রচুর, হওয়ায় কেনার ক্ষমতা নেই। আবার ব্যাটারী চালিত রিকশার প্রতিদিন চার্জ দিতে হয়। কিন্তু আমার বাড়িতে কারেন্টও নেই।তাই তিনি নিজস্ব বুদ্ধি খাটিয়ে বানিয়ে নিয়েছেন নতুন এক্কা গাড়ি। এখন তার সংসারে অভাব থাকলেও খুব একটা অসুবিধা হয় না এই এক্কা গাড়ীর জন্য। তাইতো ফিরোজ বাবু ঘোড়ার নাম দিয়েছেন বদল। এখন গ্রাম,ব্লক, পেরিয়ে জেলার বিভিন্ন জায়গায় কাজে বেরিয়ে যান। সকলেই ফিরোজ বাবুর এক্কা গাড়ীর প্রসংশা করেন।
এক ব্যাক্তি জানান, কারো দান তিনি নিতে চাননা।নিজে উপার্জন করেই সংসার চালাতে চান। আমরাও তার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাই।