নরকযাত্রা
তমাল সাহা

সকলেই আকাশের দিকে তাকিয়ে
নতজানু হয়ে করজোড়ে বসে আছে
স্বর্গে যাবে বলে।

অমরাবতীতে কি কি আছে আমি জানি
স্বর্গের পারিজাত ফুল মন্দাকিনী নদী
কত অপ্সরা কিন্নর- কিন্নরী।
জীবনানন্দের কাছে জেনেছি
বেহুলাও নাকি একদিন নেচেছিল
ঘুঙুর পায়ে ইন্দ্রের সভায়।

আমার আবার খুব নরকে যাবার ইচ্ছে
স্বর্গের মুখে থুতু ছুঁড়ে দিয়ে আমি
নরকের দিকে চলে যাই।
আমি নিশ্চিত আমার যা কর্মকান্ড নরকেই আমি যাবো
নরকেই হবে আমার ঠাঁই।

স্বর্গে দেব-দেবীরা থাকে
প্রতি বছর পুজোতেই আমি তাদের দেখি।
দেখতে দেখতে চোখে আমার ছাতা পড়ে গেছে।
আমি তাই নরকের দিকে চলে যাই
সেখানে ইচ্ছে হয় কিছু শিখি।

পৃথিবীর সব কান্ড কারখানা আমি দেখেছি‌
আমার দেখার খুব ইচ্ছে
মিথ্যে কথা যারা বলেছিল
নরকরাজ কিভাবে সাঁড়াশি দিয়ে টেনে
তাদের জিভ দেয় ছিঁড়ে।
আমি আরও কান্ডকারখানা দেখি
নারকীয় পরিবেশ ঘিরে।

আমার খুব দেখার ইচ্ছে
ঘুষখাওয়া দালাল কাটমানিখোর নেতা বা যে রাষ্ট্রনেতারা দেশ বেচে দেয় তাদের
নরকরাজ বিশাল উনুনের আগুনে
বিশালতম কড়াইয়ে চাপিয়ে
টগবগে ফুটন্ত তেলে কিভাবে ভাজেন
তখন তাদের বেগুনি,পিঁয়াজি ফুলুরির মতো
কি নামে যে ডাকেন!

এসব দৃশ্য নয়নাভিরাম, আমি দেখতে থাকি
এর মধ্যেই চিত্রগুপ্ত খাতা খোলেন
আমার সম্বিত ফিরিয়ে দেন—
আয় বাছাধন! তোর পালা এখন।