সবাই বলছে, ভালো থেকো, ভালো থাকবেন–নিউ ইয়ার।
এর কি সত্যি কোনো মানে আছে? শুনুন
নিউ ইয়ার
তমাল সাহা
নববর্ষের রাত
আদর সোহাগ কতদূর যায়…
উল্লাসে বেজে ওঠে আনন্দ সানাই,
ভালো থেকো, ভালো থেকো সবাই।
সকলেই বলে এমনকি আমিও তাই
অথচ এমন মিথ্যা বুজরুকি
দ্বিতীয় আর কোথায়?
এভাবেই গোয়েবেলসীয় মিথ্যা
প্রচার পেয়ে যায়।
কোন দরকার ছিল
একত্রিশের রাতে জাহাজ থেকে
বারোটি তোপধ্বনি করে
দিনটিকে মেরে ফেলার?
সেই পুরনো দিন-ই তো
জীবনে ফিরে আসে আবার!
শেষ রাতে আমরা কি
খুব ভালো, সুস্থ ছিলাম?
বছর জুড়েই তো
আমাদের জীবন নীলাম!
কী করে ভালো থাকা যায়
এক রাতের পর?
বলা যায় স্বাগত নতুন বছর?
প্রতি বছরই
চার্চে বেজে ওঠে বেল
জাহাজে সোচ্চার তোপধ্বনি।
শূন্য আমাদের জাবেদা খাতা
আবার তো সেই হাত পাতা!
আমাদের অসুস্থতা থেকে যায়
অসুস্থরা কি করে কেক খায়?
ওনারা মন্ত্রী,
ওনারা শুভেচ্ছা জানাতেই পারে
ফেসবুকে অথবা টুইটারে
বা রাষ্ট্রীয় ঘোষণায়
ভালো থেকো,
ভালো থাকবেন সবাই।
আমরা যেন আবার
সিংহাসন পাই।
ওনাদের নববর্ষ,পুরাতন বর্ষ
বলে কিছু নেই
ওদের সবদিনই শুভদিন।
ওনাদের রাফাল আছে,
সারদা আছে, নারদা আছে,
আরও কত স্ক্যামের জন্মদিন।
ওনাদের ভাইদের সিন্ডিকেট আছে
আছে বালিখাদান, পুকুরভরাট।
কর্মকুশলী ভাইরা তাহাদের
কর্মকান্ডে ব্যস্ত দিনরাত।
ওনারা ভালো থেকো নয়,
সবাই ভালোই আছে।
আমাদের ভালো, তবে শোনো
লুকিয়ে আছে আমাদেরই কাছে।
নিউ ইয়ার মানে
পুরনো কষ্ট নতুন করে আনা–
মানে রিনিউয়াল করে
আরো বেশি বেশি জানা।
আর কষ্ট করতে দুর,শোনো
মিছিল মিটিং তো আছেই,
তার চেয়েও বেশি জরুরি
যাও মানুষের কাছে।
শেষ পর্যম্ত অস্ত্রাগার তো
আমাদের দখলেই আছে।
সব বছরই পুলিশ গুলি করে মারে
রাষ্ট্র গণতান্ত্রিক অধিকার কাড়ে
ফি-বছরই চলে রুজি রুটির লড়াই—
এই অত্যাচার ধারাবাহিক,স্বতঃসিদ্ধ,
জানে তো সবাই।
নববর্ষের রাতে ভালো থেকো,
ভালো থেকো বলছে কারা!
মুখগুলো স্যার!দেখাবেন আপনারা?
নিউ ইয়ার, ভালো থেকো!
রসদ তো কিছু চাই—
সে তো শুধু লড়াই! লড়াই!
যেদিন মিলে যাবে ভাত রুটি সবজি
নিউ ইয়ার! নিউ ইয়ার!
বলবো সোল্লাসে তুলে ডানহাতের কব্জি।