অবতক খবর, বিনয় ভরদ্বাজ, নৈহাটী , ৫ই ডিসেম্বর :: ব্যারাকপুর বিজেপিতে ভাঙন অব্যাহত প্রতিদিনই বিজেপি কর্মী সমর্থক নেতারা দলে দলে বিজেপির ত্যাগ করে তাদের পুরানো দল তৃণমূলে ফিরছেন। নৈহাটিতে প্রতিদিন বিজেপি ভাঙছে বিধায়ক পার্থ ভৌমিক জেলা সাধারণ সম্পাদক সুমন অধিকারীকে সঙ্গে নিয়ে বিজেপি কর্মীদের তৃণমূলে যোগদান কর্মসূচি পালন করছেন ।যেসব পার্টি অফিস দখল করা হয়েছিল সেসবের প্রত্যেকটিই তারা উদ্ধার করে নিয়েছেন কিন্তু এই ব্যাপক পরিবর্তন শুরু করেছেন তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক ও তার অনুগামীদের শীর্ষ স্থানে রেখে।
উপ-নির্বাচনে তিনটি পদে জয়ের পর তৃণমূলীরা ফিরতে শুরু করে দিয়েছেন। যে উদ্ধত আচরণের জন্য সাধারণ মানুষ তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছিল ও সাধারণ মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছিল, কিন্তু 3টি সিটে জয়ের পর সেই উদ্ধত আচরণ ফের দেখা দিচ্ছে তাদের মধ্যে।
অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে বিধায়ক পার্থ ভৌমিক তার প্রিয় এলাকা নৈহাটিকে আবার বিরোধী মুক্ত করতে সুবোধ অধিকারীকে সঙ্গে নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন প্রাথমিক কথামতো সুবোধ অধিকারী ও ব্যাপক পুলিশ সুরক্ষা বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে পার্টি অফিস উদ্ধারের পর এবার ক্লাবে ক্লাবে দখল নিতে ছুটে যাচ্ছেন।
জয়ে উৎসাহিত তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকরাও যারা বিরোধী ছিল তারা এখন 200-300 ছেলে নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ছেন তৃণমূলের যুবনেতা শ্রদ্ধেয় পার্থ পন্থীদের সঙ্গে দলবল নিয়ে। নেতৃত্ব দিতে দেখা যাচ্ছে সুবোধ অধিকারী বাহিনীকেও।
সূত্রে জানা গেছে যে পার্থ বাবু এখন তার এলাকায় প্রায় সমস্ত ক্লাব যে কোন শর্তে দখল নিতে চান। যে ক্লাব সদস্যরা যে ভাষায় কথা বলে পরিবর্তন করতে রাজি সেই ভাষায় কথা বলছেন পার্থ ভৌমিক। এমনও দেখা যাচ্ছে যে তার দল ক্লাবগুলিকে ভাইদের সঙ্গে আনার জন্য তাদের বেআইনি সমস্ত আবদার মেনে নিচ্ছেন তিনি।
এমনই একটি ঘটনা ঘটেছে নৈহাটি ব্যানার্জি পাড়ায়। সেখানকার বিশ্বনাথ স্মৃতি সংঘ ক্লাব সদস্যরা প্রতিবেশীর জমি জোর করে দখল করে ঘিরে রেখেছেন। জমি নিয়ে মামলা হয়েছে। ক্লাব সদস্যদের দাবি পাশের জমিটি তাদের দিয়ে দিতে হবে। ক্লাবের পুজোর জন্য তারা তা ব্যবহার করবে। ক্লাবের সদস্যরা বিজেপি করেন। এখন বিজেপি থেকে তৃণমূল নেতারা পার্থ ভূমিকে প্রস্তাব দিয়েছে যে তিনি যদি জায়গাটি পাকাপোক্ত ভাবে দখল করে দিতে পারেন তাহালে তারা বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান করবে। এই ক্লাবের 20-22 জন যুবকদের তৃণমূলে যোগদান করানোর জন্য পার্থবাবুর তাদের এই আবদার মেনে নিয়ে সুবোধ অধিকারী তার পুলিশ বাহিনী ও শতাধিক কর্মীদের নিয়ে জমি দখল করতে হাজির হয়ে যান।
পার্থ ভৌমিক সুবোধ অধিকারীরা এভাবে ব্যক্তিগত মালিকানার জমি দখল করার জন্য ব্যানার্জি পাড়ায় পৌঁছে যাওয়ায় এলাকায় মানুষের মধ্যে চাঞ্চল্য দেখা দিয়েছে। জমির মালিক গরিব মহিলাকে পার্থ-সুবোধের কাছে হাতজোড় করে ভিক্ষা করতে দেখা যায়। তিনি কেঁদে কেঁদে বলেন, আমার ভীষণ কষ্টের পয়সার জমি কেনা এভাবে দখল করবেন না।
যদিও ক্লাব সদস্য ও জমির মালিককে পার্থবাবু নিদান দিয়ে আসেন। ক্লাব সদস্যদের আধা জমি ছেড়ে দিতে বলেন আর জমির মালিককে মামলা-মোকদ্দমা তুলে নিতে বলেন। তবে ব্যানার্জি পাড়ার এলাকাবাসীদের প্রশ্ন, এভাবে ক্লাব দখল করার প্রয়োজন আছে কি। একটি ক্লাবের 20 বাইশটি ছেলেকে তৃণমূল শামিল করানোর জন্য কারো ব্যক্তিগত জমি দখল করে পাড়ার মানুষের মন জয় করা যাবে কি? প্রশ্ন এটা উঠছে এভাবে জমি দখল করে কি বার্তা দিতে চাইছেন পার্থ সুবোধ বাবুরা?
প্রশ্ন এটাও ক্লাব সদস্যদের খুশি করার জন্য একজন ব্যক্তিগত মালিকানার জমি যেভাবে কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করছেন তাতে আগামী দিনে নৈহাটী মানুষের জমি সুরক্ষিত থাকবে কি? এছাড়াও আজ একটি জমি দখল করার জন্য যারা দল পাল্টাতে রাজি কাল তারা পার্থ বাবুর জমি বাড়ি দখল করার জন্য ফের অন্য দলে ঝাঁপ মারবে না তার গ্যারান্টি আছে কি? এছাড়াও আজ জয়ের নেশায় বুঁদ হয়ে তৃণমূলীরা সাধারণ মানুষের মনে যেভাবে ভীতি ধরিয়ে দিচ্ছেন তাতে আগামী দিনে তৃণমূলের জন্য আরও ভয়ঙ্কর দিন আসছে তা এখনই বলে দেওয়া যায়।