অবতক খবর,সংবাদদাতা :: মুখ্যমন্ত্রী আহবানকে কোন গুরুত্ব না দিয়ে বুধবার বিজেপি ছিঃ ছিঃ মিছিলে নিজেদের মধ্যে গন্ডগোল জড়িয়ে পড়লেন তৃণমূল কাউন্সিলর ও কর্মীরা। অবশেষে এক দল তৃণমূল গোষ্ঠীর কাছে অপমানিত লাঞ্চিত হয়ে মিছিলে অংশগ্রহণ না করেই ফিরে যান বহু তৃণমূলী কর্মী ও নেতাগণ।

উল্লেখ্য নেতাজি ইন্ডোরে সভায় মুখ্যমন্ত্রী ও তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় নেতাকর্মীদের পরিষ্কার ভাষায় বলেছিলেন যে দল থেকে নিজেকে কেউ যেন বড় মনে না করেন, সকলকে মিলেমিশে চলতে হবে। শুধু তাই নয় নতুন পুরনো সকলকে সঙ্গে নিয়ে চলতে হবে। তৃণমূলের 75 দিনের কর্মসূচির “বাংলার গর্ব মমতা” লঞ্চ করে তাতে রাজ্যজুড়ে 1 লক্ষ 25 হাজার নতুন করে তৃণমূলে যোগদান করানোর কথা বলেছেন। এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে 19 নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুব্রবীর চৌধুরী তৃণমূলের ওয়ার্ড সভাপতি চিন্ময় গাঙ্গুলির সঙ্গে যোগাযোগ করেন । তিনি বিজেপি ছেড়ে দিদির দেওয়া বিজেপি ছিঃ ছিঃ মিছিলে অংশগ্রহণ করতে স্বপ্নবীথি পার্কে অন্যান্য তৃণমূল কর্মী নেতা ও কাউন্সিলরদের সঙ্গে উপস্থিত হন।

তার উপস্থিতি মানতে চাননি যুব তৃনমূলের সভাপতি তার স্ত্রী ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা। চৌধুরীকে গালিগালাজ করেন ও অপমানিত করেন তারা ।19 নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর লোকসভা নির্বাচনের পর নির্বাচনের পর 22 জনকে নিয়ে বিজেপিতে যোগদান করেছিলেন। পরে পাঁচজন বাদে বাকিরা ধীরে ধীরে একে একে করে ফিরে আসেন কিন্তু সুপ্রবীর বাবু দলে ফেরেননি। তবে মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বানের পর সুপ্রবির  বাবু তৃণমূলের যোগদান করতে প্রথমেই বিজেপির বিরুদ্ধে মিছিলে পা মেলাতে নৈহাটিতে আয়োজিত স্বপ্নবীথি পার্কে হাজির হন। সেখানে তিনি অপমানিত হয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হন।

উল্লেখ্য 19 নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুপ্রবীর চৌধুরী বিধায়ক পার্থ ভৌমিকের দীর্ঘদিনের বন্ধু ও কাছের মানুষ বলে পরিচিত। পার্থবাবুর উপরে অভিমান করে তিনি দল ত্যাগ করেন বাকি 22 জন কাউন্সিলরদের সঙ্গে। তবে শুক্রবার চৌধুরীকে দলে ফিরিয়ে আনতে সিআইসি মানস পাল, সিআইসি রাজেন্দ্র গুপ্তা ও 19 নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি চিন্ময় গাঙ্গুলির সঙ্গে বৈঠক করেন। তারা তাকে দলে ফিরিয়ে আনার জন্য রাজি করান ও সেইমতো বুধবার বিজেপি মিটিং মিছিলে তাকে নিয়ে হাজির হন তারা।

সুপ্রবীর চৌধুরীকে দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন যুব তৃণমূল সভাপতি সনৎ দের অনুগামীরা। তারা মারমুখী হয়ে পড়েন ছবি তুলছিলেন অবতক-এর প্রতিনিধি। তারা তাদের কুকীর্তি ক্যামেরাবন্দি হয়ে যাচ্ছে দেখে অবতক- এর ক্যামেরাপার্সনের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন, কেড়ে নেওয়া হয় তার ক্যামেরা ডিলিট করে দেওয়া হয় সমস্ত কুকীর্তির ধরা পড়া ছবি।

সনৎ দে কিছুতেই চান না যে সুপ্রবীর আর প্রতিদ্বন্দ্বীরা দলে ফিরে আসুক। বিধায়কের বাড়িতে হাজির হয়েছিলেন সুপ্রবীর ও অন্যরা সেই ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে উস্কানি দেন তৃণমূলকর্মীদের যাতে তাদের ক্ষিপ্ত করে তোলা যায় ও  বিজেপি থেকে তৃণমূলে তারা যেন না ফিরতে পারেন ।

সনৎ বাবু সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন পোস্ট দেখে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে তৃণমূলের নিজেদের মধ্যে। বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠীর দাবি তৃণমূলের কর্মীদের কাছে ও তৃণমূলের অন্দরমহলে এক প্রতিবাদী মঞ্চ তৈরি করার চেষ্টা করেন সনৎ বাবু। এইসবের শর্তেও যখন সুপ্রবীর বাবু মিছিলে হাজির হলে তার ওপরে আক্রমণ আনা হয়। চরম খিস্তিখামারি ও অপমানিত করে তাকে মিছিল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

সনৎ বাবু ও তার শিবির তাদের দলের সাঙ্গপাঙ্গদের এ ধরনের মারমুখী হয়ে আক্রমণ চালানোকে ঠিক ভালোভাবে গ্রহণ করছেন না অন্য তৃণমূল কাউন্সিলর ও নেতারা। ক্ষোভ বাড়তে শুরু করেছে তৃণমূলের অন্দরমহলে। কাউন্সিলরদের দাবি সনৎ বাবু এখন দলকে নিজের প্রাইভেট লিমিটেড মনে করছেন। বিধায়কের কথা কেউ গুরুত্ব দিচ্ছেন না। বিক্ষুব্ধদের দাবি যখন বিধায়ক ও দলীয় নেতৃত্ব বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন তখন তিনি তার ক্ষমতা অপব্যবহার করে সিদ্ধান্তের বিরোধিতা নেমে পড়ছেন।  সনৎ বাবু দলের ভেতরে আরেক নিজের দল তৈরি করে ফেলেছেন। আর তার সাঙ্গপাঙ্গদের দলকে কাজে লাগিয়ে একের পর এক দলকে বিড়ম্বনায় ফেলে চলেছেন।