অবতক খবর :: নদীয়া :: আজ থেকে প্রায় ২৭ বছর আগের ঘটনা, একজন মানসিক ভারসাম্যহীন ভবঘুরে মানুষ বেথুয়া ডহরি স্টেট ব্যাংকের সামনে একটি তেলেভাজা দোকানে খাবার চাই। দোকানদার খাবার না দিয়ে তার হাতে তুলে দেয় কড়াইয়ের গরম তেল, যা চোখে পড়েছিল নদীয়ার নাকাশিপাড়া সহৃদয় ব্যক্তি মসলেন মুন্সির। চোখের সামনে এই ঘটনা দেখে নিজের মনে নাড়া দিয়েছিল ধরে রাখতে পারিনি চোখের জল। তারপর থেকেই মনে মনে ভেবে ছিলেন এই রাস্তায় ঘুরে বেড়ানো অসহায় মানুষগুলোর জন্য কিছু একটা করব তারপর থেকেই গড়ে তোলেন ভবঘুরে মানসিক ভারসাম্যহীন দের আশ্রয়ের নির্দিষ্ট স্থান।
মসলেন মুন্সি নিজে ও তার পরিবারের সহযোগিতায় এক টানা ২৭ বছর ধরে ওই মানসিক ভারসাম্যহীন দের দেখাশোনা তাদের চিকিৎসা করে চলেছেন। এছাড়াও অনেকেই সুস্থ হয়ে ফিরে গেছে তাদের বাড়ি, মসলেন মুন্সির এই কাজের সাফল্যে জেলা প্রশাসনও চুপ থাকতে পারিনি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। সাংসদ তহবিলের টাকা থেকেই শুরু হয় প্রথম ভবঘুরে মানসিক ভারসাম্যহীন দের থাকার নির্মাণের কাজ। বছরে বেশ কয়েকবার দেখাশোনা করে যাই জেলা প্রশাসন। এরপর থেকেই স্থায়ী নামকরণ ভাবে গঠিত হয় নাকাশিপাড়া নির্মল হৃদয় সমিতি।
জেলা প্রশাসন পাশে থাকায় মসলেন মুন্সির মনের জোর আরো বেড়ে যায় এখন রাস্তায় ভবঘুরে ভারসাম্যহীন দেখলেই নিজেই প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে তাদের নিয়ে আসা হয় নির্মল হৃদয়ের আশ্রয়ের স্থানে। এইখানেই বহু ভবঘুরে ভারসাম্যহীন আছে যাদের ঠিকানা কেউ নেপাল থেকে এসেছে কেউ আবার বাংলাদেশ থেকে, এ দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকেও আশা অনেক ভবঘুরে ভারসাম্যহীন আছে যারা সুস্থ হয়েও বাড়ি ফিরে যেতে চান না। কেউ কেউ সুস্থ হলে তাদের বাড়িতে যোগাযোগ করলে তারা ফোন ধরে না কোন যোগাযোগও রাখে না।
সুস্থ হওয়া কয়েকজন ভবঘুরেকে ভারসাম্যহীন কে জিজ্ঞাসা করলে তারা বলে, মসলেন মুন্সিই এখন তাদের মা বাবা আমরা এখানে খুবই ভালো আছি তিন বেলা পেট ভরে খাবার খাওয়ানো থেকে নিয়মিত ওষুধ খাওয়ানো সবটাই করে আমাদের এই ভগবান। আমরা আর বাড়িতে যেতে চাইনা।