অবতক খবর,১৪ অক্টোবর,পূর্ব মেদিনীপুর: পুজো একেবারে দোরগোড়ায়! পিতৃপক্ষের অবসান ঘটিয়ে দেবীপক্ষের সূচনা, আজ মহালয়া। পদ্ম ছাড়া অসম্পূর্ণ দুর্গা পুজো। সেই পদ্ম শেষ করেছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বৃষ্টি। কিভাবে এত পদ্মের চাহিদা মিটাবেন চাষিরা? ফুল চাষিরা দূর্গা পুজোর সময় বাড়তি মুনাফা লাভের আশায় থাকেন। কারন সারাবছর যাই বিক্রিবাটা হোকনস কেন, দূর্গা পুজোয় তাদের হাতে বাড়তি লক্ষ্মীলাভ হবে দূর্গা পূজার প্রধান উপকরণ পদ্মফুল বিক্রি করে।

বিভিন্ন ফুল চাষিরা তাই দূর্গা পুজোর জন্য অপেক্ষা করেন। কারন বাজার দর ভালো থাকলে হবে বাড়তি উপার্জন আর বাড়তি উপার্জন হলে চাষীদের পরিবার গুলোতে ফুটে উঠবে বাড়তি হাসি। দূর্গা পুজোর সাথে আঙ্গিকভাবে জড়িত পদ্ম ফুল। মহাষ্টমীর দিন দূর্গা পুজোর প্রধান উপকরণ পদ্ম। প্রতিটি পূজা মণ্ডপে দুর্গা মায়ের পুজো সম্পন্ন করতে লাগে ১০৮ টি করে পদ্ম। বাংলায় লক্ষ লক্ষ পুজোর মণ্ডপ।সব পুজো মণ্ডপে ১০৮ টি করে পদ্ম কিভাবে মিলবে এই দুশ্চিন্তা রয়েছে পদ্ম চাষীদের মাথায়। কারন চাষিরা বলছেন প্রবল বৃষ্টির কারনে বাগানে ফুটছে না পদ্ম। ফলে একদিকে যেমন পদ্মের চাহিদা থাকবে তুঙ্গে, অপরদিকে অন্যান্য বছরের ন্যায় দামও হবে বেশ চড়া। তবে পদ্মের এই বেশি দামের মুনাফা চাষিরা নয় পাবেন ব্যবসায়ীরা। চাষিরা বলছেন সারাবছর পদ্মের দাম থাকে বাজারে ১ টাকা থেকে ৫ টাকা প্রতি পদ্ম।

তবে দূর্গা পুজোয় যেহেতু ব্যপক চাহিদা থাকে বাজারে, তাই এই সময় বাজারদর থাকে ব্যপক চড়া। মহাষ্টমীর দিন নুন্যতম ১৫ টাকা থেকে ২০ টাকা প্রতি পদ্মের গড় দাম থাকে। এই সময় পদ্ম চাষি থেকে ব্যবসায়ীরা বাড়তি মুনাফা পেয়ে থাকেন। তবে এবছর পদ্মের ফলন ভালো না হওয়ায় বাড়তি মুনাফা পাবেন পদ্ম ব্যবসায়ীরা।কারন চাষিদের থেকে স্বল্পমূল্যে পদ্ম কিনে ইতিমধ্যে স্টোর করা শুরু করেছেন পদ্ম ব্যবসায়িরা। পূর্ব মেদিনীপুরের কোলাঘাট, পাঁশকুড়া, শহীদ মাতঙ্গিনী ব্লকের একাধিক জলাশয়, দিঘি ও খালে পদ্মের চাষ হয়ে থাকে। বহুপদ্ম চাষি এই চাষের সাথে যুক্ত আছেন।তবে এবছর পদ্মচাষিদের রীতিমতোই মন ভারাক্রান্ত।কারণ পূজোর আগে প্রকৃতির খামখেয়ালিপনায় পদ্মের উৎপাদন যথেষ্টই ব্যহত হয়েছে। হিসেবে জানাযায় মাসখানেক আগে পর্যন্ত পদ্মচাষে বৃষ্টির জলের অভাব ছিলো।আবার বর্তমান সময়ে অধিক বৃষ্টির কারনে পদ্মের উৎপাদন বহুঅংশে ব্যহত হয়েছে। এরফলে পদ্মচাষিদের একেবারে মাথায় হাত। কারন ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়বেন না, পড়বে পদ্ম ফুল চাষিরা।

যেখানে গতবছর একটি জলাশয়, থেকে একহাজার পদ্ম উৎপাদিত হতো, বর্তমানে প্রকৃতির এই খাম – খেয়ালিপনায় বড়োজোর ২০০ ফুল উৎপাদিত হচ্ছে।পদ্মব্যবসায়ীরা এখন থেকেই পুজোর বাজার ধরবার জন্য পাঁশকুড়ার একটি হিমঘরে ফুল জমায়েত শুরু করে দিয়েছেন। যাতে মহাষ্টমীর বাজার ধরতে পারেন। কিন্তু আবহাওয়া প্রতিকূল হওয়ায় পদ্মচাষিরা এবছর রীতিমতো ক্ষতির মুখে পড়েছেন। কিভাবে ঋণ পরিশোধ করবে তা খুঁজে পাচ্ছেন না অনেকই। কোলাঘাট, পাঁশকুড়া এলাকার পদ্মচাষিরা আশঙ্কা করছেন দূর্গাপুজোয় যে আনন্দে ও স্বচ্ছলতার সাথে পরিবারের সাথে দিন কাটাবেন ভেবেছিলেন, সেই আশায় জল ঢেলেছে প্রকৃতি। চরম উৎকন্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কয়েকশ পদ্মচাষি।