রাজীব মুখার্জী :: অবতক খবর :: হাওড়া ::       দেশব্যাপী করোনা আবহের জেরে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যাপক ধাক্কা লক্ষ্য করা গিয়েছে ইতিমধ্যেই। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ছোট-বড় বিভিন্ন ধরনের ব্যবসা। অর্থনৈতিক সংকটের মুখে মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে দারিদ্র্যসীমার আশপাশে থাকা মানুষ। কেউ হারিয়েছেন কাজ তো কারুর মন্দা চলছে বাজারে। ফির কবে তাদের ব্যবসার ক্ষেত্র মাথা তুলে দাঁড়াবে তা ভেবে কোন ভিসা পাচ্ছেন না সেই সমস্ত ক্ষতিগ্রস্ত স্তরের মানুষরা।

দীর্ঘ লকডাউন এবং রেল পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ থাকায় ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হাওড়া স্টেশন সংলগ্ন ভাতের হোটেলগুলি। লোকাল ট্রেন থেকে শুরু করে প্যাসেঞ্জার এবং মেইল ট্রেন না চলায় বিক্রি একেবারেই নেই দোকানগুলিতে। এভাবে আর কতদিন চলবে তা ভেবেই কূলকিনারা পাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন, যখন সমস্ত কিছু স্বাভাবিক ছিল তখন দিনে প্রায় ৬০ থেকে ৭০ কেজি চালের ভাত বিক্রি হত। লোকাল ট্রেন যাত্রীবাহী মেইল ট্রেন সহবাস এবং লঞ্চ, সমস্ত ক্ষেত্রে যাত্রীরা খাবার জন্য ব্যবহার করতেন গঙ্গাপাড়ের এই হোটেলগুলোকে। কিন্তু এখন হাওড়া স্টেশন চত্বর কার্যত থমথমে। চলছে না কোন লোকাল ট্রেন। হাওড়া ডিভিশনে সবমিলিয়ে মাত্র ১১ টি যাত্রীবাহী ট্রেন চলছে। জাতীয় থাকছে হাতে গোনা। ফলে কার্যত মাছি তাড়াতে হচ্ছে হাওড়া স্টেশনের সামনে গঙ্গার ধার বরাবর থাকা সব হোটেলগুকিকে। প্রায়১৪ থেকে ১৫ টি হোটেল রয়েছে একটি লাইনে। যার মধ্যে অধিকাংশই কম বিক্রি হওয়ার কারণে এবং ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হতে হওয়ার কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। মাত্র তিনটি দোকান খোলা রয়েছে বর্তমানে। সেখানেও পর্যাপ্ত খদ্দের হচ্ছে না বলে জানাচ্ছেন হোটেলের মালিক এবং ম্যানেজারেরা। তাদের বক্তব্য, সমস্ত কিছু স্বাভাবিক থাকলে যেখানে ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি বাটা হয় প্রত্যহ সেখানে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে না। এর জেরে যারা কর্মী রয়েছেন তাদেরকে বেতনটাও দেওয়া যাচ্ছে না ঠিকমত। সারাদিনে ১০ কেজি চালের ভাত বিক্রি করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে বেঁচে থাকা তিনটি হোটেল বন্ধ করে দিতে হবে বলে দাবি হোটেল মালিকদের। কারণ যদি বন্ধ থাকে আরও বেশ কিছুদিন তাহলে তাদের ব্যবসার মন্দা কোন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছাবে তা ভেবেই কূলকিনারা পাচ্ছেন না তারা।

উল্লেখ্য, হাওড়া স্টেশন কে ব্যবহার করে এই দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাতায়াত করেন লক্ষাধিক মানুষ। রিলমে রিপোর্ট অনুযায়ী হাওড়া স্টেশনে প্রত্যহ যাতায়াত করতেন প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ। ফলে বিপুল সংখ্যক মানুষের খাওয়া দাওয়ার জন্য গঙ্গার ধার বরাবর সস্তার হোটেল গুলি ছিল অপরিহার্য। কিন্তু ট্রেন না চলায় যাত্রী না আসায় হোটেলগুলি কার্যত খা খা। অধিকাংশ দোকান বন্ধ হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই। বাকিদের গলাতেও একই সুর। কিভাবে বাঁচানো যাবে তঅন্নসংস্থানের একমাত্র অবলম্বন টাকে!