অবতক খবর,১২ জুলাইঃ উত্তর-পূর্ব গোলার্ধের এই ভারতবর্ষ। মানচিত্রের পূর্ব দিকে বঙ্গোপসাগরের তীরে পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ। পশ্চিমবঙ্গকে চেনে না আন্তর্জাতিকে এমন কোনো দেশ নেই। এই দেশ সাহিত্য সংস্কৃতির জন্য তো বটেই, জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে পশ্চিমবঙ্গের বৈপ্লবিক ভূমিকা আজ পৃথিবীর ইতিহাস। সেই ঐতিহ্য সম্পূর্ণরূপে কলঙ্কিত করেছে পশ্চিমবঙ্গের ২০২৩ সালের এই পঞ্চায়েত নির্বাচন।
পশ্চিমবঙ্গের পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে ব্যাপক খুন রক্তপাত সন্ত্রাসের বাতাবরণ সৃষ্টি হয়েছে তা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছে বিবিসি, অস্ট্রেলিয়ার নিউজ চ্যানেল, আমেরিকান নিউজ চ্যানেল, আল জাজিরা নিউজ চ্যানেল পর্যন্ত। সর্বত্র জেনে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের গণতান্ত্রিক অধিকার মানেই তাকে পদদলিত করা তাকে লুন্ঠিত করা। এমনকি পাকিস্তানের মতো দেশেও পশ্চিমবঙ্গের এই হত্যা পর্ব, রক্তপাত ব্যাপকভাবে প্রচার করেছে। ভারতবর্ষের সংবাদপত্র জুড়ে তো এই সংবাদ প্রচারিত হয়েছেই। বিভিন্ন ভাষায় যত ভারতীয় সংবাদপত্র রয়েছে তামিল তেলেগু মালায়ালাম হিন্দি ইংরেজি সমস্ত সংবাদপত্রের পাতায় উল্লেখযোগ্য শিরোনামে উঠে এসেছে বাংলার এই পঞ্চায়েত নির্বাচন। বিস্তৃতভাবে তারা লিখেছে এই সংবাদের কথা এবং গণনাতে কিভাবে গা জোয়ারি, জাল জোচ্চুরি করা হচ্ছে সেই খবর পর্যন্ত প্রকাশিত হয়েছে।
এই রাজ্য রবীন্দ্রনাথের রাজ্য। এই রাজ্য নজরুলের রাজ্য। এই রাজ্য জীবনানন্দের রাজ্য। এই রাজ্যেই নেতাজী, এই রাজ্যেই স্বামী বিবেকানন্দ, এই রাজ্যেই ক্ষুদিরাম প্রফুল্ল চাকী মাতঙ্গিনী। সেই রাজ্যকে কলুষিত করেছে শাসক শ্রেণী।
ব্যারাকপুর ব্লক ১-এ আটটি পঞ্চায়েত সবই শাসকশ্রেণীর দৌরাত্ম্যে শাসক শ্রেণীর দখলে চলে গেছে। সম্পূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং গণনাকে বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ দেখিয়েছে, এক অরাজক এবং নৈরাজ্যকর অবস্থা সৃষ্টি করেছে এই প্রশাসন। ব্যারাকপুরের ১-এর ৮টি পঞ্চায়েত যথাক্রমে কাঁপা-চাকলা,জেঠিয়া,মাঝিপাড়া-পলাশি,শিবদাসপুর,
মামুদপুর,পানপুর-কেউটিয়া,কাউগাছি ১,কাউগাছি ২ নির্বিচারে দখল করে নিয়েছে শাসক দল তৃণমূল দল।
মাখন লাল হাই স্কুলের গণনা কেন্দ্রে ছিল বাহুবলীদের দখলদারি। এই অঞ্চলের বিধায়কেরা এই দখলদারিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীরা।
৪৬টি মায়ের কোল খালি করে এদিন সেই লাশের রক্ত দিয়ে গেঁথে গড়ে উঠল পশ্চিমবঙ্গের গ্রাম বাংলার এক একটি পঞ্চায়েত।