অবতক খবর, কলকাতা :মাছে ভাতে বাঙালি।মুরগি খাওয়া তো বন্ধ হলো, এবার কি খাবে বাঙালিরা অতএব চল মাছের বাজারে। সেখানেও হাজির গুজব-টোটকা।বাঘাযতীন বাজারে ছোট ভেটকি কিনতে কিনতে শ্যামলেন্দু জানার ‘জ্ঞান’, ‘শুনলাম চালানি মাছে যে ওষুধ দেওয়া হয়, তাতে করোনাভাইরাস হয়। বলছে জ্যান্ত আর ছোট মাছ খেতে। বিশেষ করে ছোট মাছের মাথায় রয়েছে ভাইরাস ঠেকানোর মোক্ষম ওষুধ।’ শ্যামলেন্দুর পরের কথাটি বিস্ফোরণ— ‘নেহাত সম্ভব নয়। নইলে পুঁটির মুড়িঘন্ট।
মাছ মাংসর বাজার তো গেল এবার সবজী মধ্যে ক্যাপসিকাম, বেল পেপার, পেঁয়াজকলিতে আপত্তি তুলেছেন গড়িয়ার অধীর সরকার। তাঁর কথায়, ‘এই সব জিনিস চাইনিজে ব্যবহার করে।তাই এই গুলো তো এখন না-খাওয়াই ভালো।’টালিগঞ্জের বিভাস বসু রেস্তোরাঁয় চাইনিজ খাওয়ার প্রস্তাব পত্রপাঠ খারিজ করেছেন।নাতনি স্কুলের টিফিনে চাউমিন নিচ্ছে, তাতেও তীব্র আপত্তি। তাই সত্যজিৎটা পাল শুনেছেন, নিরামিষ খাওয়াই হল করোনাভাইরাস থেকে বাঁচার একমাত্র উপায়। বাড়িতে এখন হয় সব্জির ঝোল-পোস্ত, নয় সেদ্ধ-ভাত।
নোভেল করোনাভাইরাস সংক্রান্ত গুজবের স্টিমুলাস। বাহক অধিকাংশ ক্ষেত্রে সোশ্যাল মিডিয়া। জেনে বা না-জেনে, বুঝে বা না-বুঝে যেমন ভূতের চতুর্দশী রচিত হয়েছে তেমনি মুখে মুখে ভাইরাস নিয়ে গুজবের বিস্তার সোশ্যাল মিডিয়ায়। বিজ্ঞানের দফারফা করে বাঙালি এখন করোনা-কথায় মজে। কোত্থেকে এল, কী ভাবে ছড়াল, কী করবেন, কী করবেন না— তা নিয়ে গুজবপাঠ এবং সবিস্তার আলোচনা চলছে ঘর, গলি, বাজার, ঠেকে। অতঃপর কী করবেন, কী করবেন না। কী খাবেন, কী খাবেন না।
বাঙালি যেমন গুজবের বশেই সাধের মুরগি অক্লেশে ত্যাগ করেছে। কোথাও মুরগির মড়ক নেই, কোনও রোগ ধরেনি। স্রেফ গুজবেই বাঙালি মুরগি-হীন। ব্রাত্য হওয়ার পথে মুরগির ডিমও। বৃহস্পতিবার গড়িয়াহাট বাজারে মুরগির মাংস বিকিয়েছে ৯০-১০০ টাকা কেজিতে। ডিমের পাইকারি ব্যবসায়ী শতদল বিশ্বাসের ভয়, ‘গুজব এমন ছড়াচ্ছে যে, লোকে না এ বার মুরগির ডিম খাওয়া ছেড়ে দেয়! আগে যে দোকান দিনে ২৫০ ডিম নিত, সেখানে নিচ্ছে ১৫০ অত্যাধিক ভয় থেকে মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।