অবতক খবর , শিব শংকর , বালুরঘাট :- এক বছর হতে চলল এখনও বালুরঘাটে আত্রেয়ী খাড়ির উপর ঘাটকালি এলাকায় ভেঙে পড়া ফুটব্রিজ গড়ে তুলতে পারলো না বালুরঘাট পুরসভা বা জেলা প্রশাসন।
দুর্ভোগে বালুরঘাট শহরের চকভবানী ও বাজার পাড়ার দুই প্রান্তের এলাকার পুরবাসিন্দারা।স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, দীর্ঘ দিন ধরে আত্রেয়ী খাড়ির ওপর এই ফুট ব্রিজ টি ভগ্নপ্রায় অবস্থায় ছিল। ভেংগে পড়ার ঘটনার পরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় দুই প্রান্তের সাধারন মানুষের।ক্ষুদ্ধ স্থানিওদের অভিযোগ দীর্ঘদিন প্রশাসনকে জানানোর পর আজ পর্যন্ত নতুন করে তা , না তৈরি হওয়ায় চরম দুর্ভোগে বালুরঘাটের চকভবানী ও বাজারপাড়ার এলাকার বাসিন্দারা।বালুরঘাট শহরের মাঝ বরাবর বয়ে যাওয়া আত্রেয়ী খাঁড়ির ওপর ২০০৩ সালে পুর্ত দফতরের উদ্যোগে গড়ে উঠেছিল লোহার তৈরি এই ফুট ব্রিজটি।
বালুরঘাট শহরের উত্তর ও দক্ষিণ অংশের মধ্যে যোগাযোগের সুবিধার জন্যই শর্টকার্ট এই হাঁটাপথের ফুটব্রিজটি তৈরি করা হয়। দৈর্ঘ্যে ৭৫ মিটার ও প্রস্থে ২ মিটার এই ব্রিজটি তৈরি করতে সেই সময় পূর্তদপ্তর খরচ করেছিল ১৮ লক্ষ টাকা। বাম আমলে বালুরঘাট শহরের আত্রেয়ী খাঁড়ি পারাপারের জন্য ডাকবাংলো পাড়া এলাকায় তৈরি হয় ফুট ওভার ব্রীজটি । খাঁড়ির দুই পারের বাসিন্দাদের সুবিধার্থে যাকে ব্যবহার করে সাইকেল সহ মোটর বাইক চলাচলেও ছাড় দেওয়া হয় প্রশাসনের তরফে । ব্রীজের মাধ্যমে শহরের ১২ – ১৩ এবং ১০ ও ১১ নং ওয়ার্ডের সংযোগ স্থাপন হত । শহরের অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন বড়বাজারে যাবার স্বল্প সময়ের রাস্তা হিসাবে ওই ব্রীজটিকেই বেছে নিত সাধারণ মানুষ । একই ভাবে ওপারের বাসিন্দারা জেলা প্রশাসনিক ভবন থেকে শুরু করে বালুরঘাট থানা কিংবা কলেজ ও পৌরসভা সবকিছুতেই যাতায়াতের মাধ্যম হিসাবে ফুট ওভার ব্রীজকেই কাজ লাগাত । এত গুরুত্বপূর্ন হওয়া সত্বেও দীর্ঘদিন যাবত ওই ব্রীজের কোন সংস্কার না হাওয়ায় আস্তে আস্তে মরচে ধরে দুর্বল হয়ে পড়ে সেতুটি । পরে ফুটব্রীজের অবস্থা দেখে সাইকেল, মোটর সাইকেল সহ সাধারণ মানুষের যাতায়াত নিষিদ্ধ করে প্রশাসন । কংক্রিটের দেয়াল তুলে পথ আটকানোর চেষ্টাও হয়েছিল। কিন্তু পথচারীরা সেই কংক্রিটের দেওয়াল ভেঙেই ব্রিজ দিয়ে চলাচল শুরু করেছিল।
এর পরেও প্রশাসন ওই ব্রিজ সংস্কারের পথে যায়নি। শেষ পর্যন্ত আশঙ্কা সত্যি করে গত বছর ৭ নভেম্বর ভেঙে ঝুলে যায় ফুটব্রিজটি। বন্ধ হয়ে যায় শহরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ ব্যবস্থা। পুরসভার তরফে দ্রুত সেতুর দুদিকের মুখ বন্ধ করে দেওয়া হয়। পুলিশের তরফেও ব্যারিকেড করে সেতু সিল করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তারপরেও সময় বাচানোর জন্য প্রান হাতে নিয়ে সেই ব্যারিকেড টপকে বিপজ্জনক ব্রিজের ওপর দিয়ে চলাচল করছেন বেশ কিছু লোকজন।
এলাকার ক্ষুদ্ধ বাসিন্দারা অভিযোগ জানিয়ে বলেন, দীর্ঘ দিন এই ভাঙ্গা ফুটব্রীজটি সারিয়ে তুলবার বিষয়ে পুরসভা থেকে প্রশাসনকে জানিয়েও কোন কাজ হয়নি । পুরসভা ও প্রশাসনের কোন হেলদোল না থাকায় ব্রীজটি আজও ভেঙ্গে ঝুলে পড়েছে । দুর্ভোগে বালুরঘাটের দুই প্রান্তের কয়েকশো বাসিন্দারা।
যদিও বালুরঘাট পুরসভার প্রশাসক বিষয়টি নিয়ে কোন মন্তব্য করতে নারাজ।