অবতক খবর,৬ জুলাই: করোনার রাহু গ্রাস চলছে। দ্বিতীয় ঢেউয়ে পশ্চিমবঙ্গ উথাল পাথাল। সর্ব ভারতীয় রাজনীতিতে সুপরিচিত, এক সময়ের বিজেপি নেতৃত্ব বর্তমানে তৃণমূলে যোগদানকারী নেতা মুকুল রায়ের সহধর্মিণী কৃষ্ণা রায়। তিনি করোনা আক্রান্ত হয়ে কলকাতার অ্যাপোলো হসপিটালে ভর্তি ছিলেন। তাঁর শ্বাসকষ্ট হওয়ায় তাঁকে আইসিইউ’তে রাখা হয়েছিল। তিনি মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছিলেন। পরবর্তীতে তাকে চেন্নাই অ্যাপোলো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মৃত্যুর সঙ্গে রীতিমত পাঞ্জা লড়ে শেষ পর্যন্ত আজ ভোরে তিনি এই মাটি ছেড়ে চলে গেলেন।

কৃষ্ণা রায় কাঁচরাপাড়া ৬ নং ওয়ার্ডের অত্যন্ত পরিচিত একজন সজ্জন মহিলা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনি ছিলেন অত্যন্ত অতিথিবৎসল। তিনি কাঁচরাপাড়ারই মেয়ে। অনিল রুদ্র সরণিতে তাঁর পিতৃভূমি। তাঁর মৃত্যুর সংবাদে অঞ্চলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
বীজপুর বিধায়ক সুবোধ অধিকারী এক সাক্ষাৎকারে তাঁর আত্মার প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন এবং শোকাচ্ছন্ন পরিবারকে সমবেদনা জানান। তিনি বলেন, রায় পরিবারের সঙ্গে আমার দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। এই বাড়ির প্রতি আমার একটা টান রয়েছে।

করোনা কোন রাজনীতি মানছে না, মানছে না কোন ধর্ম। তাঁর আগ্রাসী রূপের কাছে মানুষ পরাজিত। ধনী দরিদ্র তার কাছে সমান। বহু চেষ্টা, অর্থ ব্যয় করেও কৃষ্ণা দেবীকে বাঁচানো গেল না।

পরিবেশ পরিস্থিতি যা তাতে মনে হচ্ছে করোনার এই প্রাকৃতিক ভয়াবহতা আছেই, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে হয়তো বা তাঁর রক্তের সম্পর্ক পুত্র শুভ্রাংশু রায়ের পরাজয়, তাঁর মনের মধ্যে কোনও প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছিল। মানসিকভাবে হয়তো বা তিনি একটু বিষাদগ্ৰস্ত হয়ে পড়েছিলেন।

সে যাই হোক কাঁচরাপাড়া অঞ্চলের সমস্ত রাজনৈতিক নেতারা তাঁর পরিবারকে সমবেদনা জানিয়েছেন। বর্তমান বিধায়ক তৃণমূল নেতা সুবোধ অধিকারী বলেন,এই পরিবারের সঙ্গে আমি দীর্ঘদিন যুক্ত ছিলাম। ‌ তাদের সঙ্গে একটা হৃদ্য সম্পর্ক ছিল। ‌আজ বিরোধী রাজনীতি করলেও আজকের যে পারিবারিক ঘটনা এটা সমস্ত রাজনীতির ঊর্ধ্বে। আমি তাঁর পরিবারকে সমবেদনা জানাচ্ছি। তাঁর পরিবারের প্রতিটি জনই আমার পরিচিত। ‌

সিপিএম নেতা দেবাশিস রক্ষিত জানান, এটি একটি শোকাবহ ঘটনা। মানুষের মৃত্যু যে রাজনীতির উর্ধ্বে এটাই প্রমাণ করল। তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা রইল।
অন্যদিকে সিপিএমের আরেক বরিষ্ঠ নেতা শম্ভু চ্যাটার্জী জানান যে, রাজনীতি সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। আমরা একই কাঁচরাপাড়ার জল আবহাওয়ায় মানুষ। সুতরাং এই মৃত্যু আমার কাছেও একটি হৃদয়বিদারক। এই পরিবারের সঙ্গে আমারও একটি সম্পর্ক ছিল। ‌আমি এই পরিবারকে সমবেদনা ছাড়া আর কি জানাতে পারি! তাঁর বিদেহী আত্মা শান্তি পাক এই প্রার্থনাই করি।