অবতক খবর,১৭ মার্চ: সাহিত্যিক সুব্রত মুখোপাধ্যায় এই অঞ্চলের একটি সুপরিচিত নাম। তিনি কাঁচরাপাড়া সতীশ নন্দীর রোডে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। এটি কাঁচরাপাড়াবাসীর কাছে একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা এবং তাঁর পিতামহ ধীরাজ মুখোপাধ্যায় ছিলেন হার্ণেট হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক। তাঁদের আদি বাসস্থান চৌধুরী পাড়া, হালিশহর।পিতা সত্য নারায়ণ মুখোপাধ্যায়। তিনিও একজন প্রখ্যাত ফুটবলার এবং বাচিক শিল্পী ছিলেন। তিনি ‘বিদ্রোহী’ কবিতা আবৃত্তি করে কবি নজরুল ইসলামের হাত থেকে প্রথম পুরস্কার অর্জন করেছিলেন। সেটা ছিল ১৯৪০ সাল।
সুব্রত মুখোপাধ্যায় বর্তমানে ব্যারাকপুরে থাকতেন। সেখানে তিনি আজ প্রয়াত হন। সাহিত্যিক মুখোপাধ্যায় ১৯৮৯ সালে সমরেশ বসু পুরস্কার অর্জন করেন। ১৯৯৮ সালে ‘রসিক’ উপন্যাসের জন্য পেয়েছেন বঙ্কিম পুরস্কার।’বীরাসন’ উপন্যাসের জন্য ২০১৩ সালে পেয়েছেন সাহিত্য একাডেমী পুরস্কার।
উল্লেখযোগ্য ২০১১ সালে আঞ্চলিক সুপরিচিত ঈশ্বর গুপ্ত পুরস্কারটি তিনি অর্জন করেছেন। এটির প্রদায়ক ঈশ্বর গুপ্ত পরিষদ,কাঁচরাপাড়া। বিজপুর মুখোমুখিতে নিয়মিতভাবে ‘হালিশহরের উপাখ্যান’ নামে বিশেষ করে হালিশহরের আঞ্চলিক ইতিহাস তিনি লিখে গিয়ে এই আঞ্চলিক পত্রিকাটির মর্যাদা বাড়িয়েছেন।
তাঁর উল্লেখযোগ্য উপন্যাস ‘পুরনো পথের রেখা’ ‘পৌর্ণমাসি’ ‘মধুকর’ ‘সন্ত্রাস’ ‘ বণিক’ ‘চরমপত্র’ ‘পরিখা’ ‘কালাধান’ ‘নিখিলের অন্ধকার’ ‘পাখি’ ইত্যাদি।
এই অঞ্চলের সাহিত্য পত্রিকা একসময়ে সুপরিচিত ‘অতন্দ্র’ পত্রিকায়ও তিনি লিখেছিলেন। স্থানীয় যে সমস্ত উল্লেখযোগ্য সাহিত্যিক, লেখক এবং কবির তাদের সান্নিধ্যে এসেছেন তিনি। প্রাবন্ধিক, সাংবাদিক তমাল সাহার তিনি ছিলেন বিশেষ বন্ধু এবং সতীর্থ। তিনি বিদগ্ধ সাহিত্যিক সমরেশ বসু, সুধাঙ্কুর মুখোপাধ্যায়, হৃষীকেশ মুখোপাধ্যায়, বাঁধন সেনগুপ্ত, অলোক মৈত্র এবং লেখক সাংবাদিক শিক্ষক গৌরীপদ গঙ্গোপাধ্যায়ের সান্নিধ্যে এসেছিলেন।
তাঁর গল্পগ্রন্থ ‘যে দেশেতে রজনী নাই’ ‘আব্দুল রহিম’। তাঁর একটি উল্লেখযোগ্য ব্যতিক্রমী ভ্রমণ গ্রন্থ রয়েছে ‘খুঁজেফেরা’। কর্মজীবনে তিনি ছিলেন মহকুমাশাসক। তাঁর প্রয়াণে বিশেষ করে কাঁচরাপাড়া, হালিশহরের সাহিত্যিক লেখক মহল শোকস্তব্ধ। ঈশ্বর গুপ্ত পরিষদ সম্পাদক, কবি প্রাবন্ধিক রণজয় মালাকার জানান, আজ এর চেয়ে বড় দুঃসংবাদ আর কী হতে পারে! সেদিনও কথা হয়েছিল। তাঁর প্রতি রইল শ্রদ্ধা।