অবতক খবর,২৭ জুলাই: নিউ ব্যারাকপুর এলাকার প্রায় ৪০০ জন মহিলাকে প্রলোভন দেখিয়ে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা তুলে গায়েব হওয়া রায় দম্পতিকে অবশেষে ধরল পুলিশ শনিবার।

প্রতারণার বিষয়টি সামনে আসতেই গোটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছিল চাঞ্চল্য। কারোর কাছ থেকে লক্ষাধিক টাকা কারো কাছ থেকে সোনার গয়না সহ অনেকের নামে লোন তুলে, কয়েক কোটি টাকা প্রতারণা করে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। নিউব্যারাকপুর থানার অন্তর্গত নব কামারগাথি কলোনি এলাকার বহু পরিচারিকা ও গরীব মহিলাদের কাছ থেকে মোটা টাকা সুদ পাইয়ে দেওয়ার নাম করে, কারোর বাড়ি করে দেওয়া হবে, কাউকে গহনা করে দেওয়ার নাম করে তোলা হয় এই বিপুল অংকের টাকা।

প্রতারণার বিষয়টি যাতে কেউ বুঝতে না পারে, তার জন্য রীতিমতো খাতায় সই করে লিখিয়ে নেওয়া হতো। স্থানীয় এলাকায় মাছের ব্যবসা সঙ্গে যুক্ত ছিলেন অভিযুক্ত বিনয় রায়। সেখানেই টাকা খাটিয়ে দ্বিগুণ টাকা পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে চলতো এই প্রতারণা। অবশেষে পুলিশের জালে এদিন ধরা পরল বিনয় রায় ও স্ত্রী আরতী রায় সহ দেওর সুফল রায়।

পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের খোঁজে এখনো তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। তবে ইতিমধ্যেই অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার হওয়ায়, টাকা ফেরতের দাবি জানিয়ে নিউ বারাকপুর থানায় বিক্ষোভ দেখায় এলাকার শতাধিক মহিলারা। কারো কাছ থেকে পাঁচ লাখ দশ লাখ এমন কি ২৪ লক্ষ টাকাও এই দম্পতিকে বিশ্বাস করে তুলে দিয়েছিলেন এক মহিলা বলেই জানালেন। যদিও মাসে মাসে সুদ দেওয়ার কথা থাকলেও ছমাস কেটে গেলেও কোনরকম টাকা পাননি মহিলা।

বিষয়টি সামনে আসতে এখন রীতিমতো মাথায় হাত পড়েছে এলাকার মহিলাদের। পুলিশের কাছে তাদের এখন একটাই দাবি যেভাবেই হোক ফিরিয়ে দেওয়া হোক তাদের কষ্টের টাকা। পুলিশের তরফ থেকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে প্রতারিতদের অল্প অল্প করে হলেও কিছু পরিমাণ টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার। এদিন অভিযুক্তদের ব্যারাকপুর আদালতে পাঠানো হলে, তাদের গাড়ি ঘিরে ধরেও বিক্ষোভে ফেটে পড়তে দেখা যায় স্থানীয় এলাকার অসহায় মহিলাদের। বিষয়টি নিয়ে এখনো চাপা উত্তেজনা রয়েছে গোটা এলাকায়। এখন কবে নিজেদের কষ্টের টাকা ফেরত পান এই এলাকার মহিলারা সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।

অন্যদিকে পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নেমে শনিবার অভিযুক্ত বিনয় রায়(৫২) ও আরতি রায় (৪৫) কে নিউ বারাকপুর এলাকা থেকে এবং বিনয়ের ভাই সুফল রায় (৩২)কে শুক্রবার মধ্যরাতে রানাঘাটের গাঙনাপুর থানার এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। প্রতারণা কান্ডে মোট ৭ জনের নাম এফআইআর করা হয়েছে।

ভারতীয় দন্ডবিধি আইনের ৪২০,৪০৬ এবং ১২০/বি ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। ধৃত তিন জন কে মেডিক্যাল করিয়ে ব্যারাকপুর আদালতে হাজির করা হলে বিচারক ছয় দিনের পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়।পুলিশ নিজেদের হেফাজতে নিয়েই এই বিপুল পরিমাণ অর্থ এই রায় পরিবার কোথায় রেখেছে,কিভাবে এত মানুষের টাকা আত্মসাৎ করলো,বা এই প্রতারণার চক্রের সাথে আরও কেউ যুক্ত আছে কিনা তা অভিযুক্তদের জেরা করে বের করার চেষ্টা চালাবে।