রাস্তায় হাঁটি, বলে প্যান্ডেলের কবিতা চাই। প্যান্ডেল নিয়ে কোনো কবিতা হয়, দাদাভাই! দুনিয়ায় সবকিছু নিয়েই হয় কবিতা।
চেষ্টা করি, ডিম ফুঁড়ে বাচ্চা বেরোয় কিনা,
দিতে থাকি তা মানে উষ্ণতা।
এবার প্যান্ডেলের কবিতা শুনুন।
প্যান্ডেলের কবিতা
তমাল সাহা
প্যান্ডেল!প্যান্ডেল!
দিগ্বলয় জুড়ে শুধু প্যান্ডেল
প্যান্ডেলের বাংলা পরিভাষা—
খুঁজে খুঁজে আমি ক্লান্ত।
বাংলায় অনার্স বন্ধু জানিয়েছে,
আমায় দাও ক্ষান্ত।করো বাপু, মাপ!
শেষমেষ মুছে গেছে অজানার পাপ।
জেনেছি প্যান্ডেলকে বাংলায় বলে মেরাপ।
এখন পুজো হয়
উমা বা শ্যামের নামে নয়,নেতাদের নামে।
কত লোকলস্কর থিম পরিকল্পনা—
লুকিয়ে থাকে শ্রদ্ধাপ্লুত ঘামে।
প্যান্ডেলে বাঁশ,বল্লা,বাটাম,দড়ি, শিল্পী—
সে এক বিশাল আয়োজন।
প-য়ে যদি পেট হয়,
তবে প-য়ে পুজোরও আছে প্রয়োজন!
কান টানলেই মাথা আসে
পুজো থাকলেই প্যান্ডেল।
জনসভাও হার মেনে যায়—
লোক সমাগম! লাইন ছাড়ায়
বসিরহাট থেকে ব্যান্ডেল।
যে প্যান্ডেলে যত কায়দাকানুন কৌশল
সে নেতা ততো বড়ো।
পাড়া-প্রতিবেশী সমর্থক পার্টিম্যানদের চওড়া বুক স্বাভাবিক,
তা তোমরা দেখতেই পারো।
নেতা দাদা আছে ভয় কি?
সব ছেড়েছুড়ে খোলামেলা আমোদ ফুর্তি করো।
আমাদের ক্লাবের নাম ‘সম্মিলনী’—
আসবেন কি? আপনিও হতে পারেন জড়ো।
দুর্গা পুজো নয়,
এখন এটা অমুক বিশ্বাস,অমুক বসু
এটা উরি ব্বাবা! হেকো-দার পুজো।
প্রতিমাতে আর মা নেই,
প্যান্ডেলে গিয়ে দাদাকেই খুঁজো।
প্যান্ডলে দাদার সঙ্গে ঘোরাঘুরি,
জুড়ে দাও ছবি,
সেখানে টাঙানো আছে বিশাল স্ক্রিন।
প্রতিটি মুহূর্ত রাখো ধরে প্রতিদিন।
আসন্ন নির্বাচনে তোমার দাপট,
কে আর দেখে! আমরা ভাবি আর ভাবি
বুঝি,তুমি নিশ্চিত নয়া মাতব্বর-নবী।
প্যান্ডেলে যত নামবে মানুষের ঢল,
ততই ভালো হবে নেতার নির্বাচনী ফল।
হাজার লক্ষ কোটি টাকা যাচ্ছে যাক গলে—
মেরাপে-প্যান্ডেলে।
বেকার পার্টিকর্মী তুমি, চাকরি না পাও তো কি, আনন্দ তো পেলে!
নেতার দূরদৃষ্টি থাকলে নিয়মিত জুটে যাবে
মদ মাংসের ইনাম,
তুমি তো নেতার কেনা গোলাম!
দাদা সঙ্গে থাকলেই হাওয়াতে হাত বাড়ালে প্রচুর অর্থের জোগান।
নিশ্চিত তখন উঠবে স্লোগান,
দাদা, তুমি বড় গুরু!
ফেল জাদু সম্রাট জুনিয়ার ম্যাজিশিয়ান।
সুতরাং
বছর বছর দৈর্ঘ্য প্রস্থ উচ্চতায়
বড় থেকে বড়তর হতে থাকে মেরাপ।
সেটাই এখন
কে কত বড় নেতা তার পরিমাপ।
সুতরাং
পুজো করতেই থাকো,বানাও প্যান্ডেল।
নেতার পায়ে থাকবেই হান্টার সু
তোমার পায়ে কিন্তু সস্তার স্যান্ডেল!