অবতক খবর: রাজ্যে ৮ জুলাই ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত নির্বাচন। সুপ্রীম কোর্টের নির্দেশে রাজ্যে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজ্য নির্বাচন কমিশন চিঠি দিয়ে কেন্দ্রকে বলেছিল, পশ্চিমবঙ্গে দ্রুত বাহিনী পাঠাতে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই তার জবাব দিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কমিশন সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, জবাবি চিঠিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের দফতর নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে, ৩১৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী খুব শীঘ্রই পাঠানো হবে পশ্চিমবঙ্গে। তবে বাকি ৪৮৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে চিঠিতে কোনও উল্লেখ নেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের।
পঞ্চায়েত ভোটের নিরাপত্তার জন্য আদালতের নির্দেশ মেনে কেন্দ্রের কাছে মোট ৮২২ কোম্পানি বাহিনী চেয়ে চিঠি দিয়েছিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তার মধ্যে ইতিমধ্যেই ২২ কোম্পানি বাহিনী রাজ্যে পাঠিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। এ ছাড়া আরও ৩১৫ কোম্পানি বাহিনী পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে। কিন্তু রাজ্যের চাহিদা অনুযায়ী হিসাব করলে তার পরও ৪৮৫ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী পাঠানোর কথা কেন্দ্রের। কিন্তু রাজ্য নির্বাচন কমিশন কেন্দ্রকে সে ব্যাপারে অনুরোধ করলেও কেন্দ্র এখনও পর্যন্ত এ ব্যাপারে কিছু বলেনি। যার ফলে রাজনৈতিক শিবিরে জল্পনা শুরু হয়েছে, তবে কি আদালতের নির্দেশ পালন করতে পঞ্চায়েত ভোটের দফা বৃদ্ধি করতে হবে?
রাজ্যে এক দফায় পঞ্চায়েত ভোটের ঘোষণা করেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। ভোটের মনোনয়ন নিয়ে অশান্তির অভিযোগের মধ্যেই কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ নির্দেশ রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট করাতে হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে। প্রথমে কত কেন্দ্রীয় বাহিনী তা নির্দিষ্ট করে না বললেও গত ১৭ জুন হাই কোর্ট স্পষ্ট নির্দেশে জানিয়ে দেয়, ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে যে সংখ্যক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল, সেই সংখ্যক অথবা তার বেশি বাহিনী রাখতে হবে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে পাঁচ দফায় ভোট হয়েছিল রাজ্যে। বিরোধীরা আদালতকে জানিয়েছিল ৮২০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল সেই ভোটে। এর পর হাই কোর্টের নির্দেশ মেনে কমিশনও কেন্দ্রের কাছে ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে পাঠায়। কিন্তু কেন্দ্র পাল্টা জানিয়ে দেয়, আপাতত ৩৩৭ কোম্পানিরই অনুমোদন মিলেছে।
গত সপ্তাহে কেন্দ্রীয় সরকারের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল (এএসজি) অশোককুমার চক্রবর্তী আদালতকে জানিয়েছিলেন, কমিশনের আবেদন মতো দু’ধাপে ইতিমধ্যে ৩৩৭ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তবে বাহিনী মোতায়েনের ক্ষেত্রে ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের মডেল অনুসরণ করলে সুবিধা হয়। এর পর মঙ্গলবার কমিশনকে লেখা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের চিঠিতে বাকি ৪৮৫ কোম্পানির উল্লেখ না থাকায় জল্পনা শুরু হয়েছে ২০১৩ সালের মডেল নিয়ে। রাজ্য যেখানে এক দফায় ৮২২ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করাতে চাইছে, সেখানে কেন্দ্রের এই অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা বাড়ছে ক্রমশ।