অবতক খবর :: নদীয়া ::    জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশ গতকাল রাত্রি ১১:৩০ থেকে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতাল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। গতকাল রাত থেকে,আজ সকাল হতেই হাসপাতালের সামনে একাধিক এমারজেন্সি পেসেন্ট চিকিৎসার জন্য আসে, হাসপাতালের গেটে তালা অবস্থায় দেখে ফিরে যেতে হচ্ছে অন্য জায়গায় চিকিৎসার জন্য। কেউ আসছে আড়াই বছরের শিশু নিয়ে অতিরিক্ত জ্বর অবস্থায়, কেউবা আবার গর্ভবতী মা চিকিৎসার জন্য এসে ফিরে যেতে হচ্ছে। অন্য জায়গায় ডাক্তার দেখাতে গেলে সেখানে চিকিৎসা মিলছে না এমনটাই জানান ফিরে যাওয়া পেশেন্টের বাড়ির লোকজনেরা।

সকাল থেকেই হাসপাতালের সমস্ত পরিষেবা বন্ধ হওয়ায় নাজেহাল শান্তিপুরের সাধারন মানুষ। এ প্রসঙ্গে শান্তিপুর হাসপাতালে সুপার জয়ন্ত বিশ্বাস জানান, যে সকল ডাক্তার নার্স এতদিন পর্যন্ত সাধারণ মানুষের চিকিৎসা করে এসেছে তাদের মধ্যে অনেকেই এখন সাসপেক্টটেড। গত ৩ দিন আগে একজন ডাক্তারের করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে আর একজন ডাক্তারের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। যতক্ষণ না পর্যন্ত সাসপেক্টটেড হওয়া ডাক্তারদের রিপোর্ট হাতে আসছে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশেই হাসপাতাল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রাখা প্রয়োজন। না হলে এই ডাক্তারদের যদি রিপোর্ট করণা প্রজেটিভ আসে তাহলে শান্তিপুরের সাধারণ মানুষের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। যার কারণেই হাসপাতাল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করার সিদ্ধান্ত।

কিন্তু প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আসা, অত্যন্ত গুরুতর অসুস্থ মানুষ কোথায় যাবেন?
সেক্ষেত্রে শান্তিপুরের মানুষের বিকল্প চিকিৎসা ব্যবস্থা কি আছে ?

শান্তিপুরের ব্লকে দুটি হাসপাতাল, একটি বাগআঁচড়া অপরটি ফুলিয়াতে। যেখানে প্রাথমিকভাবে কুকুরে কাঁমড়ানো, সাপে কাটা, সাধারণ সর্দি-জ্বর বা সামান্য কেটে গেলে শুশ্রূষার ব্যবস্থা আছে কিন্তু এর বেশি কিছু হলে রোগীকে রাণাঘাট, কৃষ্ণনগর বা অন্যত্র স্থানান্তর করা হয়। তবে ২৪ ঘন্টা খোলা থাকে। এছাড়া গ্রাম পঞ্চায়েত গুলোর অধীনে বেশ কয়েকটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র থাকলেও সেখানে কোনো ডাক্তার থাকে না, কর্মদিবসে শুধু টিকা করণ এবং প্রসূতি মায়েদের ওষুধ বিতরণ করা হয়।

তবে সবথেকে কঠিন পরিস্থিতি এইমুহূর্তে শান্তিপুর শহরাঞ্চলের মানুষের। শান্তিপুরে কোনো প্রাইভেট নার্সিংহোম নেই। দু-একজন ডাক্তার প্রাইভেট প্র‍্যাকটিস করলেও রাত-বিরেতে তাদের কোনো সারাশব্দ পাওয়া যায় না।
ন্যাশনাল আরবান হেলথ্ মিশন (N.U.H.M) প্রকল্পে তিনটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র আছে পৌরসভার পরিচালনায়। ১. মতিগঞ্জ পৌর ক্লিনিক। ২. মালোপাড়ার কাছে পঞ্চাননতলার পৌর ক্লিনিক। ৩. সূত্রাগড় পৌর ক্লিনিক। এগুলোতে একজন করে ডাক্তার আছেন কিন্তু তাদের ডিউটি সীমিত সময়, ছুটির দিনে পুরো বন্ধ। এগুলোতে বিনা পয়সায় প্রাথমিক চিকিৎসা ও ওষুধ দেওয়া হয়। এমতাবস্থায় শান্তিপুরের প্রশাসকেরা কি ভাবছেন ? সেটাই দেখার।