আজ বিশ্ব ধরিত্রী দিবস। কী ধরিত্রী দেখি আমি!
বসুন্ধরা দিবস
তমাল সাহা
পৃথিবীর দ্বিধা হও, আমি পাতালে যাব। আহা! পৃথিবী প্রকৃতি নারী। সেই কবে থেকে স্নেহচ্ছায়ায় আমাকে আগলে রেখেছ। কত কী দিয়েছ তুমি, নারী আমার, প্রাণময়ী মা আমার!
আকাশ অরণ্য মেঘ বৃষ্টি নদীর জলোচ্ছ্বাস সমুদ্রের গর্জনশীল গান সকালে সূর্যোদয়ের মহিমা বিকেলে গোধূলির অস্তমিত আলোরস্পর্শ আর জোৎস্নার বালুচরে দুধের মসৃণতা।
বসুধা দিবস। বসুন্ধরা বাঁচাও! আমাকে ধারণ করে আছে জননী গর্ভধারিণী মা আমার। এর চেয়ে বড় মা আমি কোথায় পাবো? মা শব্দটি আ… আ… আ.. স্বর নিয়ে কতদূর চলে যায়!
বসুধা বাঁচে তো আমি বাঁচি। আমি যদি মাতৃহন্তা হই, তবে মাকে বাঁচাবে কে? জাতক কী মাতৃঘাতী হবে?
মাতৃস্তন উপড়ে ফেলতে পারো তুমি, যে বক্ষ সঞ্চিত রেখেছে অমৃত সুধা তোমার প্রাণের স্পর্শে উদ্বেল হয়ে উঠেছে! অরণ্য ধ্বংস করবে তুমি! জল করবে বিষাক্ত! মায়ের মতো মাটিকে পদতলিত করে গড়ে তুলবে আকাশচুম্বি আবাসন! মাটিতে পরমাণু বিস্ফোরণ ঘটাবে তুমি মানুষ মারার জন্য? এই মানুষ তো বসুধার রক্তমাংস প্রাণবায়ু নিয়ে গঠিত মানব সন্তান! আকাশে বিধ্বংসী বিমান। বায়ুমণ্ডলে বিস্তীর্ণ করবে তুমি মারণ বিষবাষ্প আবার তুমিই পালন করবে বিশ্ব বসুন্ধরা দিবস?
মৃত্তিকা তোমার আশ্রয়। আশ্রয়কে পাপে পূর্ণ করে তুলবে তুমি ? ধর্মীয় দৌরাত্ম্যে ভাইকে করবে হত্যা, ভগিনী কে করবে ধর্ষণ, জননীকে করবে উলঙ্গ? রাষ্ট্রীয় নিধনে রক্তমাখা তোমার দুই হাত, জেলখানার অন্ধকারে কেটে যায় মানুষগুলির জীবন যারা হাতে হাত রেখে ধরে তুলতে চায় দুর্জয় মশাল। তারপরও তুমি উড়াবে পতাকা, তুলবে বিশ্বজুড়ে স্লোগান— পৃথিবী বাঁচাও! এই প্রহসন এই নাটকীয়তা কতদিন চলতে পারে?
তুমি মাকে বেচে দাও কার কাছে? তোমার মাকে দেহপসারিণী সাজাও? তোমরা বাঁচাবে বসুমতী!
মহাসমুদ্রের পারে বসে আছি। চেতনাময় রৌদ্র কবে বিস্তৃত আলোয় বিস্তীর্ণ করবে আমার বোধের দেবদারু বীথির উপত্যকা, ছুটতে থাকবে নিরাময় বাতাস জাগ্রত জনকল্লোলের মধ্য দিয়ে!