অবতক খবর,সংবাদদাতা :: সম্প্রতি বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে এই প্রথম “ভাগীরথী সাংস্কৃতিক উৎসব-১” অনুষ্ঠিত হোলো। ভারত সরকারের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের আর্থিক সহযোগিতায় দুই দিনের এই উৎসবের আয়োজন করেছিলো বহরমপুরের ‘CULTURAL AND MULTI EDUCATION LINK IN ACTION’ সংক্ষেপে CAMELIA (ক্যামেলিয়া) সংস্থা। প্রথম দিন উৎসবের শুভ সূচনা করেন প্রধান অতিথি হিসাবে ভারত সরকারের নেহেরু যুব কেন্দ্রের মুর্শিদাবাদ জেলা ইয়ুথ কো-অর্ডিনেটর শ্রী দীনবন্ধু সাহা এবং বিশেষ অতিথি হিসাবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুর্শিদাবাদ জেলা শিশু সুরক্ষা ইউনিটের শিশু সুরক্ষা আধিকারিক মহম্মদ নূর ইসলাম।
সেইদিনের মূল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের শুরুতেই ‘ক্যামেলিয়া’ সংস্থার পরিবেশনায় সুজিত কুমার দাসের রচনা ও নির্দেশনায় এবং সুজিত কুমার দাস ও সুমন মজুমদার অভিনীত করোনা প্রতিরোধ বিষয়ে সচেতনতা প্রচারের ছোট্ট নাটক ‘করোনা চেতনা’ উপস্থিত দর্শকদের ভীষণ আনন্দ দেয়। এরপর জীবন্তি থেকে আগত আদিবাসী মেয়েরা সুন্দর সাঁওতালি নাচ পরিবেশন করে। অসাধারণ আবৃত্তি পরিবেশন করে সকলের ভালোবাসা পেয়েছেন নদীয়ার কৃষ্ণনগর থেকে আগত সুপরিচিত আবৃত্তি শিল্পী সুকৃতি ঘোষ মনোরম সংগীত পরিবেশন করে বহরমপুরের শিশু শিল্পী ভূমিকা দাস। এছাড়া বহরমপুরের শ্রুতি সেন এবং ভরতপুরের পুষ্পেন্দু রায় সঙ্গীত পরিবেশন করে প্রশংসা অর্জন করে।
সকল সঙ্গীতশিল্পীদের সঙ্গে কীবোর্ডে কৌশিক ঘটক, পারকাশনে সুব্রত হালদার এবং তবলা/ঢোল বাদ্যে সুজিত কুমার দাস সহযোগিতা করেছেন। সবশেষে ভরতপুরের ‘কনিজা হ্যান্ডিক্যাপ স্কুল’ এর ছোট ছোট ছেলে মেয়েরা নৃত্যশিক্ষক অরূপ রতন দাস এর পরিচালনায় অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে সকলের দৃষ্টি আকর্ষন করে। এই নৃত্যানুষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে ছিলেন ঐ স্কুলের অধ্যক্ষ্য ইউসুফ নবী। দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই ছিল উত্তর ২৪ পরগণার অত্যন্ত সুপরিচিত নাট্যদল ‘নৈহাটি রঙ্গসেনা’ প্রযোজিত নাটক ‘শ্রীচরণকমলেষু’। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্ত্রীর পত্র গল্প অবলম্বনে নির্মিত এই নাটকের সম্পাদনা করেছেন বসন্তসেনা। নাটকটির নির্দেশনায় এবং নারী চরিত্র সাজে একক অভিনয়ে শ্রী ধ্রুপদ ঘোষ অত্যন্ত মুন্সীয়ানার পরিচয় রেখেছেন।
এরপর সুজিত কুমার দাস এর পরিকল্পনা ও পরিচালনায় ‘ক্যামেলিয়া’ সংস্থার মূকাভিনয় শিল্পী যথাক্রমে সাব্বির রহমান, সাগর চৌধুরী, ঋত্বিক হালদার, নীলেশ বিশ্বাস ও ভাগীরথী চৌধুরী ‘একটি গাছ একটি প্রাণ’ এবং ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ শিরোনামে দুটি দুর্দান্ত মূকাভিনয় পরিবেশন করে। দর্শকবৃন্দ প্রচুর করতালি দিয়ে মূকাভিনয় শিল্পীদের উৎসাহ দেন। মূকাভিনয় প্রদর্শনের পরে সঙ্গীত পরিবেশন করে রিমা চক্রবর্তী। শেষে বহরমপুরের ‘ত্রিনয়নী সাংস্কৃতিক নৃত্য চক্র’ নৃত্যানুষ্ঠান পরিবেশন করে। দুই দিনের অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেন সুমন মজুমদার।
‘ক্যামেলিয়া’ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও পরিচালক সুজিত কুমার দাস বলেন, ‘”আগামী তে ‘ভাগীরথী সাংস্কৃতিক উৎসব’ আরো বেশিদিন ধরে অনুষ্ঠিত হবে। বহরমপুর তথা মুর্শিদাবাদ জেলার নতুন সাংস্কৃতিক প্রতিভার বিকাশ এবং পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক দল ও শিল্পীদের আমন্ত্রণে মুর্শিদাবাদ জেলার ঐতিহ্যকে সম্মানিত করাই এই উৎসবের উদ্দেশ্য।” খুব শীঘ্রই তিন দিনের “ভাগীরথী সাংস্কৃতিক উৎসব-২” অনুষ্ঠিত হতে চলেছে।