অবতক খবর,মৃন্ময় লাহিড়ী,বীরভূম,১৩ জুলাই :: নতুন প্রজন্ম পট সম্পর্কে খুব একটা পরিচিত নয়। কিন্তু এই পট সংস্কৃতির এক ঐতিহ্য ইতিহাস লাল মাটির জেলা গুলো যথা বীরভূম, পুরুলিয়া ,বাঁকুড়া শহর রাঢ়ভঙ্গের অনেক জেলাতে প্রত্যেকটা ধুলোর আনাচে-কানাচে মিশে আছে। বর্তমানে পট শিল্পীদের খুব একটা দেখা মেলে না।পটের প্রকারভেদে বিষয় বৈচিত্র অনুসারে সংগৃহীত পটগুলিকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যেতে পারে; যেমন-চকসুদন পট, যমপট, সাহেবপট, কালিঘাটপট, গাজিপট, সত্যপীড়েরপট, পাবুজীপট ইত্যাদি। সাধারণভাবে পটকে ছয়ভাগে বিভক্ত করা যায়, সেগুলি হল – বিষয়নিরপেক্ষ, রাজনৈতিক, ঐতিহাসিক, ধর্মীয়, সামাজীক এবং পরীবেশগত। বাংলার পটচিত্র পট বা বস্ত্রের উপর আঁকা একপ্রকার লোকচিত্র। এটি প্রাচীন বাংলার (বাংলা ভাষাভাষী অধ্যুষিত অঞ্চল) অন্যতম সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। প্রাচীনকালে যখন কোন রীতিসিদ্ধ শিল্পকলার অস্তিত্ব ছিলনা তখন এই পটশিল্পই বাংলার শিল্পকলার ঐতিহ্যের বাহক ছিল। যারা পটচিত্র অঙ্কন করেন তাদেরকে সেযুগে এবং এযুগেও পটুয়া বলা হয়।

এখানে আয় কমে যাওয়ার জন্য তারা অন্য রাজ্য তথা অন্যভাবে তারা জীবন যাপন শুরু করেছে। সিউড়ি ওয়ান ব্লক এর আলুন্দা অঞ্চলের ইটাগরিয়া গ্রামের লালটু পটুয়া ১৪ প্রজন্ম ধরে এই ঐতিহ্যকে টিকিয়ে রেখেছেন। বর্তমান কেমিক্যালের যুগে একদম আসল রঙের উপর পট চিত্র অঙ্কন সেখানে নিমাই কথা তিনি শোনান সকলকে। তিনি জাতিতে মুসলিম হলেও হিন্দু সংস্কৃতি সম্পর্কে এত সুন্দর শাস্ত্র জ্ঞান যেটা এক বিরল বিষয় বর্তমান সমাজে। বর্তমান রাজনীতিতে শুধু হিন্দু মুসলমানের দ্বন্দ্ব এবং বিভাজনের এক নতুন পর্যায়ে চলছে সেখানে এই লালটু পটুয়া এক নতুন দিগন্ত তৈরি করেছে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই পট শিল্পীদের জন্যও যে শিল্পী ভাতার ব্যবস্থা করেছেন সেই প্রকল্প থেকে তিনি বঞ্চিত হননি, তিনি শিল্পী ভাতা পান। কিন্তু শুধু শিল্পী ভাতা এবং তার ন্যূনতম আয়ে বর্তমানে সংসার চলে না। রাজ্য সরকারের কাছে তিনি এটাই অনুরোধ রেখেছেন পট শিল্পীদের নতুনভাবে সাজিয়ে তোলার জন্য যেন একটি উদ্যোগ নেয় মানবিক মুখ্যমন্ত্রী। যাতে প্রত্যেকটা পটোশিল্পী আর্থিক এবং মানসিকভাবে সাবলম্বী হতে পারেন, তবেই প্রাচীন এই ঐতিহ্য টিকে থাকবে।