অবতক খবর, কলকাতা: সোমবার কংগ্রেসের ডাকে সর্বদলীয় বৈঠক দিল্লিতে। আর এই বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যাযে অনুপস্থিতি ঘিরে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়ে গিয়েছে জোর চর্চ্চা। কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সর্বদলীয় বৈঠকে গরহাজির হতে চলেছেন? পশ্চিমবঙ্গ সহ সারা দেশে বিরোধী মুখ হয়ে ওঠার তাগিদ!
বস্তুত, ২০১৯ লোকসভা ভোটের সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী মহাজোট থেকে নিজেকে দূরে সরিয়ে রেখেছিলেন।’একলা চলো’ নীতিকে হাতিয়ার করে ৪২ এ ৪২ এর ডাক দিয়েছিলেন। এরপরেই দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় এসে নরেন্দ্র মোদি নয়া নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের পথে হাটতে শুরু করেন।
জাতীয় নাগরিক পঞ্জীকরণ (এনআরসি), ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্ট্রার (এনপিআর ) নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধিতায় সরব হয়ে ওঠেন। রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ প্রান্ত চষে ফেলেছেন। কেন্দ্রের বিরোধিতা, মোদি-শাহের বিরোধিতা, ৩৭০ ধারা বিলোপের বিরোধিতা, তিন তালাক রদের বিরোধিতার মধ্যে দিয়ে মমতা জাতীয় রাজনীতিতে নিজের প্রাসঙ্গিকতা সঙ্গে জাতীয় রাজনীতিতে নিজেকে বিরোধী মুখ করে তুলতে চেষ্টার কোন খামতি রাখতে নারাজ।
তবে গোদের ওপরে বিষ ফোঁড়ার মতো ৮ জানুয়ারি বামদলগুলোর হরতাল রাজনৈতিকভাবে তৃণমূল সুপ্রিম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অস্বস্তির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এরই সঙ্গে রাজ্যে ছাত্র বিক্ষোভের মুখে পরে মমতা বেশ খানিকটা ঝোল মেপে এগোতে চাইছেন। হরতালে ইস্যু সমর্থনযোগ্য হলেও হরতাল বিরোধী নীতি নিয়েও মমতা বামেদের হরতালকে রাজনৈতিকভাবে পুরোপুরি কোণঠাসা করে উঠতে পারেন নি, বিশেষত ২০১১ সালের পালাবদলের পর। রক্তক্ষরণের পরেও বামেদের হরতাল মানুষের মনে দাগ কাটায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বেশি করে একলা চলো নীতি ধরে রেখে সর্বাত্মক বিরোধিতার রাস্তায় হেটে চলবেন ! সঙ্গে বাম এবং অতি বামপহ্নি ছাত্র সংগঠনের বিক্ষোভের মুখে পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সর্বোচ্চ পর্যায়ে বিরোধিতার বার্তা কেন্দ্রে বিজেপি ও বাম এবং অতি বামেদের বিরুদ্ধে।
এরই মধ্যে দিল্লির সর্বদলীয় বৈঠকে বামপহ্নিদের উজ্বল উপস্থিতি তৃণমূল সুপ্রিমোকে রাজনৈতিকভাবে অস্বস্তিতে ফেলতে যথেষ্ট। বামেদের বিরুদ্ধে দীর্ঘ লড়াই লড়ে ২০১১ সালে ক্ষমতার পালাবদল।বাংলার মানুষ বাম বিরোধী মুখ হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দেখে অভ্যস্ত। আর তাই নিজের বাম বিরোধী ইউএসপিকে সযত্নে লালন করেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জাতীয় রাজনীতিতে নিজেকে প্রাসঙ্গিক করে রাখতে চাইছেন।