অবতক খবর: ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের যে নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, তা খারিজ করল সুপ্রিমকোর্ট। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ এবং শিক্ষকদের একাংশের করা মামলায় এই নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। তবে একইসঙ্গে সুপ্রিমকোর্ট জানিয়েছে, নতুন করে মামলাটির শুনানি হবে হাইকোর্টে।
প্রাথমিকের মূল মামলাকারীদের আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি। এ ছাড়া, ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের আইনজীবী হিসাবে মামলাটি লড়েছেন মুকুল রোহতগি, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং পার্থ দেব বর্মণ।এরপর হাইকোর্টের নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যান এই প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশ এবং পর্ষদ কর্তৃপক্ষ। শীর্ষ আদালতে বিচারপতি জে কে মহেশ্বরী এবং কে ভি বিশ্বনাথনের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটির শুনানি হয়। শুক্রবার ডিভিশন বেঞ্চ হাইকোর্টের নির্দেশ খারিজ করে দিয়েছে। অর্থাৎ, ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষককে নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে না।
সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, এই শিক্ষকদের নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় হাইকোর্ট এত দিন যা যা নির্দেশ দিয়েছে, তা খারিজ করা হচ্ছে। হাইকোর্টের নতুন ডিভিশন বেঞ্চে নতুন করে মামলার শুনানি হবে। তাঁরা নতুন করে বিচার করবেন এবং সিদ্ধান্ত নেবেন। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে মামলাটি যাবে হাইকোর্টের বিচারপতি সৌমেন সেন এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে।
উল্লেখ্য, দুর্নীতির মামলায় প্রথমে এক ধাক্কায় ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। পরে সংখ্যা বদলে হয় ৩২ হাজার। পর্ষদকে চার মাসের মধ্যে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছিল । বিচারপতি জানিয়েছিলেন, চাকরিচ্যুতরা এই চার মাস স্কুলে যেতে পারবেন। তবে তাঁদের বেতন দেওয়া হবে পার্শ্বশিক্ষকদের বেতনকাঠামো অনুযায়ী। বিচারপতি আরও পর্যবেক্ষণ ছিল, পর্ষদের নতুন নিয়োগ প্রক্রিয়ায় এই চাকরিচ্যুতরা অংশ নিতে পারবেন। নতুন ইন্টারভিউতে পাশ করলে চাকরিচ্যুতরা চাকরি ফিরে পাবেন।
বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হন চাকরিহারাদের একাংশ। বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি সুপ্রতিম ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চ মামলার শুনানিতে সিঙ্গল বেঞ্চের নির্দেশে কিছুটা পরিবর্তন করে। তারা জানায়, ওই ৩২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষককে পার্শ্বশিক্ষক হিসাবে কাজ করতে হবে না। তাঁরা যেমন ছিলেন, তেমনই থাকবেন। তবে পর্ষদকে নতুন করে নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করতে হবে। সেই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে হবে এই ৩২ হাজার শিক্ষককেও। সেখানে তাঁরা ব্যর্থ হলে চাকরি হারাবেন।