অবতক খবর,পশ্চিম মেদিনীপুর:– সাম্প্রতিক বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক পরেশ চন্দ্র জানার বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে কুপ্রস্তাব দেওয়া, রাজি না হলে সাপ্লিমেন্টারি পাইয়ে দেওয়ার ভয় দেখানো ও আদতে সাপ্লিমেন্টারি দেওয়ার অভিযোগ উঠে।
ইতিমধ্যে ঐ অধ্যাপককে উপযুক্ত শাস্তি ও ছাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবিতে লাগাতার ক্যাম্পাসে আন্দোলন চলছে। পদার্থবিদ্যার পাশাপাশি এই আন্দোলনে সামিল হয়েছেন সমস্ত বিভাগের সহস্রাধিক ছাত্রছাত্রী। এই আন্দোলনকে সংহতি জানাতে শুক্রবার পদার্থবিদ্যা বিভাগের প্রাক্তনীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল করে উপাচার্যকে ডেপুটেশন দেয়।
শুভব্রত রথ, তনুশ্রী সাহা,দ্বীপ চক্রবর্তী,অরিজিত পাল, জাভেদ,বিপ্লব গরাই প্রমুখের নেতৃত্বে এদিন অশোকনগর থেকে মিছিল করে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছায় এবং দাবী তোলে অবিলম্বে ঐ অধ্যাপককে বরখাস্ত সহ উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে ও আগামীদিনে ছাত্রীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে হবে।
শুভব্রত রথ বলেন ‘আমাদের সময়েও স্যার ছাত্রীদের সঙ্গে একই ব্যবহার করেন। কেও তাঁর বিরুদ্ধচারণ করলেই তাঁর গুপ্তচরের মাধ্যমে খবর পেয়ে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দিতেন। ভয়ে আমরা কেও কিছু বলতে পারিনি’। তনুশ্রী সাহা বলেন ‘আমাকেও তিনি বারবার কুপ্রস্তাব দিয়েছেন, আশ্লীল আচারন করতেন, আমি পাত্তা না দেওয়াও আজ অব্দি আমাকে পাশ করতে দেয়নি!’ প্রাক্তনীরা জানান সাংবাদ মাধ্যমে খবরটা দেখেই তাঁরা নড়েচড়ে বসেন, নিজেদের মধ্যে ফোনে এই বিষয়ে আলোচনা হয়। তাঁরা বলেন ‘যে কাজ আমরা করতে পারিনি সেই কাজ আমাদের জুনিয়ররা করতে পেরেছে। এই আন্দোলনকে আমরা সাধুবাদ জানাই’।
অরিজিৎ পাল, বিপ্লব গড়াই,দ্বীপ চক্রবর্তী, জাভেদরা বলেন ‘অভিযুক্ত অধ্যাপক স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনের উপর রাজনৈতিক রঙ চড়িয়ে বিভ্রান্তি ছড়ানো, বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক সংগঠন(ভুটা)’র কাছে নাটক করে তাকে ফাঁসানো হচ্ছে বলে পার পেয়ে যাওয়ার চেস্টা করছেন জানতে পেরে আমরা আর স্থির থাকতে পারিনি। তাই নিজেদের বিবেকের তাড়নায় আমরা জুনিয়রদের পাশে দাঁড়ানোর প্রয়োজনবোধ থেকেই আজকের এই প্রতিবাদের আয়োজন করেছি।’
এক বাক্যে তাঁরা স্বীকার করছেন এই ঘটনার শিকার তাঁরাও হয়েছে। তাঁদের আরো অভিযোগ সবার সামনেই উনি হুমকি দিতেন ফেল করানোর, উনার বিরাগভাজন ছাত্র ছাত্রীদের ফেল করিয়েছেন, তনুশ্রী সাহা কে বার বার ০ দিয়ে সাপ্লি দেওয়ার জন্য ফাইনাল সেম এর ২ বছর পরেও ডিগ্রি কমপ্লিট করতে পারেনি!
বিগত দিনের রেজাল্ট খতিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে পদার্থবিদ্যা বিভাগেই সাপ্লিমেন্টারী পাওয়ার হার সবচেয়ে বেশি যা উনার পেপার গুলিতেই!এদিন তাঁরা বিভিন্ন ছাত্রীর সাথে ঐ অধ্যাপকের কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তার স্ক্রিনশট নিয়েও মিছিল করেন। প্রয়োজনে তাঁরা সাংবাদমাধ্যমকেও সেগুলি দিতে পারে বলে জানিয়েছে।