অবতক খবর,১১ জানুয়ারি: আজ কাঁচরাপাড়া পৌর প্রশাসনিক ভবনে কাঁচরাপাড়ার সমস্ত ব্যবসায়ী ইউনিটের নেতৃত্ব,থানা প্রশাসন ও পৌর প্রশাসন সম্মিলিতভাবে করোনাকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য এক জরুরি বৈঠক আয়োজন করেন। এই বৈঠকে বিধায়কের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুবনেতা কমল অধিকারী,সমস্ত ব্যবসায়ী নেতৃত্ব,পৌর প্রশাসক ও পৌর প্রশাসনের নেতৃত্ব।
এদিন সর্বসম্মতিক্রমে এই সিদ্ধান্ত হয় যে, সোম, বুধ,শুক্র এবং রবিবার সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত সমস্ত দোকান খোলা থাকবে। একমাত্র জরুরি পরিষেবার কারণে ফার্মেসি,দুধ বিক্রির বিপণি, মিষ্টির দোকান খোলা থাকবে।
বিশেষ করে জানানো হচ্ছে যে,মদের দোকান এবং শপিংগুলিও সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। অর্থাৎ ১২টার পর থেকে রাত্রি ১০টা এই যে পিরিয়ড, এই সময়কালে কোন দোকান খোলা থাকবে না। কেবলমাত্র জরুরি পরিষেবার সঙ্গে সম্পর্কিত দোকানগুলি ছাড়া।
বাকি তিনদিন– মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনিবার এই তিনদিন কাঁচরাপাড়া সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকবে অর্থাৎ লকডাউন থাকবে।
সংক্ষেপে এটাই বলা যায় যে, জরুরি পরিষেবা ছাড়া সোম, বুধ,শুক্র এবং রবিবার সকাল ৬টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত সমস্ত দোকান খোলা থাকবে। তারপর আর কোন দোকান খোলা থাকবে না এবং মঙ্গল, বৃহস্পতি ও শনিবার এই তিনদিন সম্পূর্ণ লকডাউন থাকবে।
কিন্তু এই লকডাউন কবে থেকে চালু হবে কতদিন পর্যন্ত চলবে সে বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। কারণ এই লকডাউনের বিষয়টি থানা প্রশাসনের উপর নির্ভরশীল এবং তাদের নেতৃত্বে পরিচালিত হবে। এদিন বীজপুর আইসি এই বৈঠকে বিশেষ কারণবশতঃ অনুপস্থিত থাকার ফলে কবে থেকে এই লকডাউন চালু হবে কতদিন চলবে সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সন্ধ্যায় থানা প্রশাসন একটি প্রেস মিটের আয়োজন করেছেন। সেখানে আইসি সমস্ত কিছু বিশদভাবে জানাবেন এবং সিদ্ধান্ত ঘোষিত হবে।
অন্যদিকে ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা প্রশাসনের এবং ব্যবসায়ীদের উচ্চতম নেতৃত্বর সঙ্গে সহমত নন। তারা এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন। কারণ তারা বলেন,মূলত কাঁচরাপাড়ার দোকানগুলো ১০টা বা ১০টার পরেই খোলা হয়। সুতরাং দশটা থেকে বারোটা পর্যন্ত মাত্র দু ঘন্টার জন্য যদি দোকান খোলা থাকে তাহলে তাদের রুটিরুজি ব্যাপক মার খাবে। তারা ছোট দোকানদার। তারা যে কর্মচারী রাখেন, তাদেরই বা পেটের দানাপানির সাশ্রয় করবেন কী করে? তাদের এর জন্য যে এস্টাবলিশমেন্ট খরচ, ইলেকট্রিক বিলের খরচ এইগুলো তারা এই দুই ঘন্টা খোলা রেখে কি করে এই খরচ উঠিয়ে আনবেন? এর ফলে দোকানে যে কর্মচারী তারা রাখেন,তাদেরও রুটি রুজির টান পড়বে।
এমনকি তারা এও বলেন,যদি প্রশাসন এই সিদ্ধান্ত নেয়,তারা ছোট ব্যবসায়ীরা মানতে রাজি কিন্তু কর্মচারীদের বেতন দেওয়া, দোকান সংক্রান্ত যে খরচ এই খরচের দায়িত্ব তারা নেবেন কি? তারা সোজাসুজি বলেন, প্রশাসন যদি জনগণের নিরাপত্তার দায়িত্ব নিতে পারেন তবে আমাদের ছোট ব্যবসায়ীদের এই দায়িত্ব অর্থাৎ ব্যয় বহন করুক নগর প্রশাসন এবং থানা প্রশাসন। তারা আরো বলেন,যদি লকডাউন করতে হয় তবে টানা সাতদিন পুরো লকডাউন থাকুক, অর্থাৎ সকলের জন্য সমান ভাবে থাকুক। এইভাবে ইতস্তত বিক্ষিপ্ত লকডাউন করে তাদের জীবনকে আর্থিক সমস্যার মুখে ফেলে দিচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন। করোনার জন্য তারাও তো দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। কিন্তু তার চেয়ে বড় বিষয়টি হচ্ছে মানুষের পেটের দানাপানি। এটিও প্রশাসনকে নিশ্চিতভাবে ভাবতে হবে।