বুলডোজার অথবা ট্রেলার
তমাল সাহা
ইতিহাস পড়েছো এবং মনে রেখেছো
তার জন্য তোমাকে ধন্যবাদ।
তুমি দুঃখ করে চিঠিতে লিখেছো
যদি মুসোলিনি হিটলার ফ্রাঙ্কোকে চোখে দেখতে পেতাম!
দেখলে কি করতে, সে কথা কিছুই লেখোনি।
তুমি জানতে চেয়েছো—
গেস্টাপো মানে কি
কেন ব্ল্যাক শার্ট ব্রাউন শার্ট শব্দগুলি এলো
রাইখস্ট্যাগ শব্দটি এতো চালু কেন?
গ্যাস চেম্বার কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্প শব্দগুলোও তুমি তোমার চিঠিতে উল্লেখ করেছো।
জানতে চেয়েছো, স্বস্তিকা চিহ্নের অর্থ কি?
আমি একনাগাড়ে ঘটনাগুলো বলে চলেছিলাম…
তুমি আমার আলোচনা মন দিয়ে শুনছিলে।
শেষ পর্যন্ত আমাকে থামিয়ে দিয়ে যুগপৎ বিস্মিত করে তুমি নিজেই বললে,
এতো কথা বলার তো দরকার নেই!
আমি বুঝে গিয়েছি এই আলোচনাকে চারটি শব্দের মধ্যে বেঁধে ফেলা যায়—
আতঙ্ক, ধর্মবিদ্বেষ, অগ্নিসংযোগ এবং নরহত্যা
আরো একটু খোলসা করে বলি কমিউনিস্ট নিধনযজ্ঞ।
আর একটু বলি, এ নিয়ে কি খুব প্রতিক্রিয়া হবে?
এই আগ্নেয় উল্লাসের খবরও চলে যাবে সংবাদপত্রের ভিতরের পাতায়।
সবাই ভাববে, আমার তো কিছু হয়নি!
তুমি লিখেছো,
আমার ইচ্ছা হয়তো পূর্ণ হতে চলেছে।
ওদের আমি দেখে ফেলেছি।
সুতরাং তোমাকে আর অতো আলোচনার বৈঠকি আড্ডায় বসতে হবে না।
তুমি লিখেছো, হয়তো এটি সূচনাপর্ব
ওরা তো নিজেরাই বলেছে, এটা তো সবে ট্রেলার!
পার্টি কার্যালয়- শাখা দপ্তরগুলো একের পর এক ভেঙেছে
সংবাদপত্রের অফিসে হামলা চালিয়েছে
অগ্নিসংযোগ করেছে
আমি দেখেছি তাণ্ডব ও অগ্নিলীলার বাহার।
দাউদাউ জ্বলছে সব, পড়ে থাকছে ভস্মছাই, ধ্বংসাবশেষ
চোখের সামনে সক্রিয় বুলডোজার।
ত্রিপুরা 7 সেপ্টেম্বর 2021